নরসিংদী শহরের একটি স্টিলের দোকানে প্রকাশ্য দিবালোকে শতাধিক মানুষের চোখের সামনে মোহিদ মোল্লা (৩৪) একজন ব্যবসায়ীকে পিস্তল উঁচিয়ে পর পর তিনটি গুলি করেছেন এক যুবক। গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরের জেলখানা মোড়ে মেসার্স মোল্লা ট্রেডার্স নামের একটি স্টিলের দোকানে এই গুলি ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। গুলিগুলো লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন ওই ব্যবসায়ী।

যার বিরুদ্ধে পিস্তল উচিঁয়ে পর পর তিনটি গুলি করার অভিযোগ, তিনি হলেন রবিউল ইসলাম ভূঁইয়া ওরফে রবি (৩০)। সদর উপজেলার চিনিশপুর এলাকার কামাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে তিনি। অন্যদিকে ব্যবসায়ী মোহিদ মোল্লা শহরের বিলাসদী এলাকার ওয়াহাব মোল্লার ছেলে ও শহরের ভেলানগরের জেলখানার মোড়ের এসএস স্টিল, লোহা ও হার্ডওয়ারের দোকান মোল্লা ট্রেডার্সের পরিচালক।

এই ঘটনার দুই মিনিট ১৬ সেকেন্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, ওই দোকানটির সামনে লাল টিশার্ট পরা দুইজন যুবক উত্তেজিত অবস্থায় রয়েছেন। তাদের আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কমপক্ষে অর্ধশতাধিক মানুষকে। লাল টিশার্ট পড়া দুই যুবকের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হচ্ছিল। এর মধ্যেই একজন পিস্তল বের করে দোকানের ভেতরে লক্ষ্য করে একটি গুলি করেন। অপরজন তাকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টার মধ্যেই ওই দোকানে আবার গুলি করে বসেন তিনি। কিছুদূর চলে গিয়ে আবার ফিরে এসে আরেকটি গুলি করেন তিনি। তিনটি গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

ঘটনার সময় সেখানেই ছিলেন মুহিদ মোল্লার বড় ভাই মোহাম্মদ আলী বাবু। তিনি জানান, তার ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে পর পর তিনটি গুলি করেন রবিউল। প্রায়ই দোকানে গিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা দাবি করতেন রবিউল। গতকালও ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে থানায় গিয়ে অভিযোগ দিয়েছেন মোহিদ।
লিখিত অভিযোগে মুহিদ মোল্লা বলেছেন, রবিউল ৩-৪ জনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার আগে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা বলতে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে রবিউলের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে দোকান থেকে বের হয়ে যান তিনি। বাইরে বের হয়েই সঙ্গে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র বের করে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরপর তিনটি গুলি করেন রবিউল। প্রতিবারই তিনি সরে যাওয়ায় গুলিগুলো লক্ষভ্রষ্ট হয়।

জানতে চাইলে মোহিদ মোল্লা বলেন, পরিবারের সদস্য ও নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। পুলিশ-প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, রবিউলকে যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়।

নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ বলেন, জেলখানার মোড়ের ওই দোকানে গুলি করার সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি। বেশ কয়েকটি গুলি ছুড়েছেন ওই ব্যক্তি। একটি লিখিত অভিযোগও পেয়েছি। তাকে গ্রেপ্তার করতে আমাদের কয়েকটি টিম কাজ করছে। দ্রুতই তিনি আইনের আওতায় আসবেন।