❖রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের লোকসান ২৮১ কোটি টাকা কমবে
❖বিজেসি থেকে নিট ৪৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিনি শিল্পে কমবে লোকসান, বিলুপ্ত পাটে মুনাফা আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের লোকসান ২৮১ কোটি টাকা কমবে বলে মনে করছে সরকার। বাংলাদেশ জুট করপোরেশন (বিজেসি) থেকে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নিট ৪৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের অধীন বর্তমানে ১৫টি মিল আছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ১৫টি মিলের বিক্রয় রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ২৯৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ধরা হতে পারে। যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ৪৯৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিক্রয় রাজস্ব নির্ধারণ করা হয়েছে ৮০৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।
অন্যদিকে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ১৯৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা ধরা হতে পারে। এর মধ্যে উৎপাদন ব্যয় ১ হাজার ৮৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা এবং অন্যান্য পরিচালন ব্যয় ১০৬ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোর পরিচালন মুনাফা হবে ১০৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।
২০২৪-২৫ অর্থবছরে চিনিকলগুলো পরিচালন মুনাফা করলেও অ-পরিচালন ব্যয়ের কারণে বড় লোকসান গুনতে হবে। আগামী অর্থবছরে মিলগুলোর অ-পরিচালন ব্যয় হবে ৫২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা এবং অ-পরিচালন আয় হবে ১৩২ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এতে আগামী অর্থবছরে চিনকলগুলোর নিট লোকসানের লক্ষ্যমাত্রা ২৯০ কোটি ২০ লাখ টাকা ধরা হতে পারে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে এ মিলগুলোর লোকসান ধরা হয় ৫৭১ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে চিনিকলগুলোর লোকসান ২৮১ কোটি ৩৮ লাখ টাকা কমবে।
এদিকে, ১৯৮৩ সালে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠন কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ১৯৮৫ সালে ৩০ নম্বর অধ্যাদেশ বলে পাঁচটি সংস্থা- বাংলাদেশ জুট মার্কেটিং করপোরেশন, বাংলাদেশ জুট ট্রেডিং করপোরেশন, বাংলাদেশ জুট এক্সপোর্ট করপোরেশন, এপিসি (রেলি) এবং বিশেষ সম্পত্তি (পাট) সেলকে একত্রিত করে ‘বাংলাদেশ জুট করপোরেশন (বিজেসি)’ গঠন করা হয়। এ করপোরেশনের মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল পাট চাষিদের উৎপাদিত পাটের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা, চোরাচালান রোধে সীমান্তবর্তী এলাকায় পাট ক্রয় ও গুদামজাতকরণ, পাটের বাজারমূল্য স্থিতিশীল রাখা এবং বিদেশে পাট রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন।
সরকারের বিরাষ্ট্রীয়করণ নীতিমালার আলোকে ১৯৯৩ সালের ১২ অক্টোবর এ করপোরেশনের যাবতীয় কার্যক্রম বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ লক্ষ্যে সংস্থার যাবতীয় সম্পত্তি দেখাশোনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও বিক্রয় করার জন্য শুধু ২৪৪ জনবলের একটি বিলুপ্ত সেল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই বিলুপ্ত বিজেসি থেকে আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে নিট ৪৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা মুনাফার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হতে পারে।
নিট মুনাফা হলেও বিজেসির পরিচালন লোকসানে থাকবে। কারণ, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এর আয় থাকবে শূন্য। বিপরীতে পরিচালন ব্যয় হবে ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ফলে পরিচালন লোকসানও দাঁড়াবে ৪ কোটি ৫৭ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। তবে ৫ কোটি ৭ লাখ টাকা অ-পরিচালন আয় করবে বিজেসি। ফলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নিট মুনাফা হবে ৪৯ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিজেসির নিট মুনাফা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৭ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এ হিসাবে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরে বিজেসির নিট মুনাফা ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা কম হবে।


























