১১:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চবি শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে কোটা বিরোধী আন্দোলন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুর্নবহালের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটে প্রায় কয়েক শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে  বিক্ষোভ করছেন চট্টগ্রাম টু খাগড়াছড়ি মহাসড়কে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই ২০২৪) বেলা ১১ টা থেকে ১২.৩০ মিনিট চবি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্ত্বরে এবং ১২.৩০ থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে এই ছাত্র সমাবেশ আনদোলন করেন। সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা “মেধা না কোটা? মেধা, মেধা”, “সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে”, “মেধাবীদের কান্না, আর না, আর না বৈষম্যের ঠাই নাই, আমার সোনার বাংলায়” প্রভৃতি স্লোগানে মুখরিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে।

বাংলা বিভাগের মো. আব্দুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নেমেছি।মাত্র ২% মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য ৫৬% কোটা রাখতে পারেনা। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর এক ধরনের জুলুম।আমরা সরকারকে বলতে চাই আপনি আমাদের নেয্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।কোটা নামক এই মহাবিপদ থেকে আমাদেরকে মুক্তিদিন।

সমাবেশে আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের সন্তান আর নাতি-নাতনির কোটার জন্য লড়াই করেননি। তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আমরাও ৫৬% কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আমরা আমাদের অধিকার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত প্রতিদিন আমরা আমাদের সমাবেশ অব্যাহত রাখবো।

জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন বলেন, কোটা প্রথা হল সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য অভিশাপ। আমরা আমাদের অধিকার আদায় হওয়া না পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বোনা। বাংলার মাটিতে এই বৈষম্য কোটা প্রথা মেনে নেওয়া যাবেনা। এই বাংলার মাটিতে মেধাবীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। না হলে মেধাবীদের কান্না কখনও দূর হবেনা।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ বলেন, হাইকোর্ট আমাদের দাবির বিপক্ষে রায় দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখব। আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি করেন। দাবিগুলো হলো: এক. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। দুই. ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। তিন. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। চার. দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জুমার নামাজের পর বিকাল ৩টা থেকে শুক্রবারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

চবি শিক্ষার্থীদের চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে কোটা বিরোধী আন্দোলন

আপডেট সময় : ০৫:২৫:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুর্নবহালের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নম্বর গেইটে প্রায় কয়েক শত শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে  বিক্ষোভ করছেন চট্টগ্রাম টু খাগড়াছড়ি মহাসড়কে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই ২০২৪) বেলা ১১ টা থেকে ১২.৩০ মিনিট চবি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্ত্বরে এবং ১২.৩০ থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে এই ছাত্র সমাবেশ আনদোলন করেন। সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা “মেধা না কোটা? মেধা, মেধা”, “সারা বাংলা খবর দে, কোটা প্রথার কবর দে”, “মেধাবীদের কান্না, আর না, আর না বৈষম্যের ঠাই নাই, আমার সোনার বাংলায়” প্রভৃতি স্লোগানে মুখরিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার ও চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি মহাসড়কে।

বাংলা বিভাগের মো. আব্দুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নেমেছি।মাত্র ২% মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের জন্য ৫৬% কোটা রাখতে পারেনা। এটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর এক ধরনের জুলুম।আমরা সরকারকে বলতে চাই আপনি আমাদের নেয্য অধিকার ফিরিয়ে দিন।কোটা নামক এই মহাবিপদ থেকে আমাদেরকে মুক্তিদিন।

সমাবেশে আরবী বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, “মুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের সন্তান আর নাতি-নাতনির কোটার জন্য লড়াই করেননি। তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন। আমরাও ৫৬% কোটা বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। আমরা আমাদের অধিকার নিশ্চিত না করা পর্যন্ত প্রতিদিন আমরা আমাদের সমাবেশ অব্যাহত রাখবো।

জানতে চাইলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রুবেল হোসেন বলেন, কোটা প্রথা হল সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য অভিশাপ। আমরা আমাদের অধিকার আদায় হওয়া না পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বোনা। বাংলার মাটিতে এই বৈষম্য কোটা প্রথা মেনে নেওয়া যাবেনা। এই বাংলার মাটিতে মেধাবীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। না হলে মেধাবীদের কান্না কখনও দূর হবেনা।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল মাহমুদ বলেন, হাইকোর্ট আমাদের দাবির বিপক্ষে রায় দিয়েছেন। এটি অত্যন্ত দুঃখের বিষয়। আমরা আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখব। আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি করেন। দাবিগুলো হলো: এক. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখতে হবে। দুই. ২০১৮ এর পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকুরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে এবং সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা যেতে পারে। তিন. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। চার. দূর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সমাবেশে সাধারণ শিক্ষার্থীরা জুমার নামাজের পর বিকাল ৩টা থেকে শুক্রবারের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।