◉ এবার নির্বাচন থেকে বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান ক্লুনির
◉ বাইডেনকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন ১০ ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা
◉ কমলা হ্যারিসকে অযোগ্য বললেন ট্রাম্প
◉ অবশেষে ট্রাম্পের প্রতি নত হলেন নিকি হ্যালি
◉ রাজনীতিতে অভিষেক ব্যারন ট্রাম্পের
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের প্রার্থী থাকা না থাকার বিতর্কে সবচেয়ে কড়া বয়ানটি কোনো রাজনীতিক কিংবা বিশ্লেষকদের পক্ষ থেকে নয় বরং একজন চলচ্চিত্র তারকার পক্ষ থেকে এসেছে। আর তিনি হলেন, হলিউড তারকা জর্জ ক্লুনি। নিউইয়র্ক টাইমসে একটি কলামে বাইডেনের বিরুদ্ধে কড়া কথা বলেছেন জর্জ ক্লুনি। গত মাসে লস অ্যাঞ্জেলেসে দাতাদের সঙ্গে একটি আয়োজনে ছিলেন বাইডেন ও ক্লুনি। সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে জর্জ ক্লুনি লিখেছেন, ‘সপ্তাহ তিনেক আগে যে জো বাইডেনকে আমি দেখেছি, তিনি ২০১০ সালে দেখা বাইডেন নন। এমনকি তিনি ২০২০ সালে দেখা বাইডেনও নন। বরং তিনি সেই ব্যক্তি, যাকে আমরা বিতর্কের মঞ্চে (ট্রাম্পের সঙ্গে) দেখেছি।’
শুধু জর্জ ক্লুনি একা নন, বরং নিজের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহারের চাপ ক্রমে বাড়ছে বাইডেনের ওপর। দলীয় আইনপ্রণেতা থেকে দাতা অনেকেই বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার চাইছেন। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ভারমন্টের ডেমোক্রেটিক পার্টির সিনেটর পিটার ওয়েলচ প্রকাশ্যে বাইডেনের প্রার্থিতা থেকে সরে আসার দাবি তোলেন। সংবাদপত্রে লেখা এক কলামে তিনি বলেন, ‘এটা দেশের জন্য ভালো হবে।’ ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে পিটার প্রথম সিনেটর, যিনি প্রকাশ্যে বাইডেনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের দাবি তুললেন।
আগামী সোমবার এনবিসি নিউজের উপস্থাপক লেস্টার হল্টকে সাক্ষাৎকার দেওয়ার কথা রয়েছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের। এর আগেই তার বিরুদ্ধে কড়া বক্তব্য দেন জর্জ ক্লুনি। তিনি বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টির অন্যতম একজন তহবিল সংগ্রাহক। আগামী নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারানোর সক্ষমতা বাইডেনের নেই- লস অ্যাঞ্জেলেসের ওই আয়োজনের সপ্তাহ তিনেক পর প্রকাশিত নিউইয়র্ক টাইমসের কলামে এমনটাই মন্তব্য জর্জ ক্লুনির। তিনি লিখেন, বাইডেনের প্রচারণা দল দাবি করে, তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রাইমারিতে ভোটারদের সবচেয়ে সেরা পছন্দ ছিলেন। এটাকে ‘অযৌক্তিক’ বলেন ক্লুনি। জর্জ ক্লুনি লিখেছেন, বাইডেনের সক্ষমতা ও আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য ফল কেমন হতে পারে, এসব নিয়ে প্রভাবশালী ডেমোক্রেটিক নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। প্রায় সবাই বাইডেনের সক্ষমতা নিয়ে সংশয়ের কথা বলেছেন। যদিও অনেকেই প্রকাশ্যে এটা নিয়ে কথা বলতে নারাজ। অনেকে বলছেন। ‘আমরা বালিতে মুখ গুজে রাখতে পারি। আর নভেম্বরে অলৌকিক কিছু ঘটার জন্য প্রার্থনা করতে পারি। কিংবা আমরা প্রকাশ্যে সত্য উচ্চারণ করতে পারি।’ -এমনটাই মন্তব্য করেন জর্জ ক্লুনি।
ক্লুনি শুধু একজন হলিউড তারকাই নন, বছরের পর বছর ধরে তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ তহবিল সংগ্রাহকদের একজন। বিশেষ করে হলিউড–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে দলের জন্য তহবিল সংগ্রহ করেন তিনি। আর দলীয় তহবিলের বেশ বড় একটি অংশ আসে হলিউড থেকে। তাই এখন ক্লুনির এমন অবস্থান বাইডেনের জন্য বড় হুমকি।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের কৌশল নিয়ে জর্জ ক্লুনি তার মতামতে লিখেছেন, এখন ডেমোক্রেটিক পার্টির ভোটারদের আবারও এগিয়ে আসতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নতুন একজন প্রার্থীকে বেছে নিতে হবে। তবে আসছে নভেম্বরের নির্বাচনের আগে এত অল্প সময়ের মধ্যে সেটা কীভাবে সম্ভব সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু লিখেননি ক্লুনি।
বাইডেনকে সরে দাঁড়াতে বলছেন ১০ ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বাইডেনের ওপর নিজ দলের ভেতর থেকে চাপ বাড়ছে। তবে বাইডেন এখন পর্যন্ত নির্বাচন করার বিষয়ে অনড় অবস্থানে আছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেক আইনপ্রণেতা ইতিমধ্যে বাইডেনের প্রার্থিতা নিয়ে অস্বস্তি-শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। দলের কেউ কেউ অবশ্য তাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন দিচ্ছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির যেসব আইনপ্রণেতা প্রকাশ্যে, সরাসরি বাইডেনকে আবার নির্বাচন না করার আহ্বান জানিয়েছেন, তারা হলেন- সিনেটর পিটার ওয়েলচ, প্রতিনিধি প্যাট রায়ান, প্রতিনিধি মিকি শেরিল, প্রতিনিধি অ্যাডাম স্মিথ, প্রতিনিধি লয়েড ডগগেট, প্রতিনিধি রাউল গ্রিজালভা, প্রতিনিধি সেথ মল্টন, প্রতিনিধি মাইক কুইগলি, প্রতিনিধি অ্যাঞ্জি ক্রেগ, প্রতিনিধি আর্ল ব্লুমেনার।
কমলা হ্যারিসকে অযোগ্য বললেন ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের সমালোচনা করছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি কমলা হ্যারিসকে অযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। অযোগ্যতার কারণে অনেক ডেমোক্র্যাটও বাইডেনের স্থলে হ্যারিসকে আনতে নারাজ বলেও জানান ট্রাম্প। এদিকে প্রথম বারের মতো প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রার্থিতা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এক ডেমোক্র্যাট সিনেটর। বাইডেন এই নির্বাচনে হারবেন বলেও তিনি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার মিয়ামিতে এক নির্বাচনি সমাবেশে ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসও অন্য ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মানসিক অযোগ্যতার বিষয়টি প্রমাণ করতে চেষ্টা করছেন। অথচ বাইডেন বলছেন, আগামী নির্বাচনে লড়াই করা এবং সরকার পরিচালনা করার যোগ্যতা তার আছে। সমাবেশে ট্রাম্প তার রানিংমেট নিয়ে কোনো কথা বলেননি। এদিকে বাইডেনকে উন্মুক্ত বিতর্কের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে ট্রাম্প বলেছেন, এই বিতর্কে কোনো উপস্থাপক থাকবে না।
অবশেষে ট্রাম্পের প্রতি নত হলেন নিকি হ্যালি
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় নমিনেশন পাওয়ার প্রাইমারি নির্বাচনী প্রচারণাকালে সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প ও তার মিত্রদের পক্ষ থেকে তীব্র সমালোচনা এবং কটাক্ষের শিকার হয়েছিলেন নিকি হ্যালি। তাকে যৌনতাসহ নানাভাবে তারা আক্রমণ করেন। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে দা-কুমড়ো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু বেলাশেষে সেই নিকি হ্যালি আনুষ্ঠানিকভাবে তার অধীনে থাকা ডেলিগেটদের অবমুক্ত করে দিয়েছেন এবং তাদেরকে উৎসাহিত করেছেন সেই ডনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন বা ভোট দিতে। প্রাইমারি নির্বাচনের সময় ট্রাম্পের কড়া সমালোচক ছিলেন নিকি হ্যালি। একই অবস্থানে ছিলেন ক্রিস ক্রিস্টি, অ্যাসা হাচিনসন। কিন্তু ট্রাম্পের মুখপাত্র স্টিফেন চুং যে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন, তাই শেষ পর্যন্ত সত্য হলো। নিকি হ্যালিকে উদ্দেশ্য করে স্টিফেন চুং বলেছিলেন, ‘শি উড কিস অ্যাস হোয়েন শি কুইটস’ এবং ট্রাম্পের প্রার্থীতায় অনুমোদন দেবেন। প্রাইমারি নির্বাচনে যেসব ডেলিগেট জয় করেছিলেন নিকি হ্যালি তাদেরকে অনুরোধ করেছেন রিপাবলিকানদের জাতীয় কনভেনশনে ট্রাম্পকে ভোট দিতে।
রাজনীতিতে অভিষেক ব্যারন ট্রাম্পের
নানা জল্পনা কল্পনার পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েছেন ছোট ছেলে ব্যারন ট্রাম্প। নির্বাচনী প্রচারণায় এটাই তার প্রথম উপস্থিতি। ফ্লোরিডার ডোরালে এক নির্বাচনী প্রচারণায় সগর্বে ট্রাম্প উচ্চারণ করেন- ব্যারন ট্রাম্প! এই প্রথমবার সে নির্বাচনী প্রচারণায়। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সবচেয়ে ছোট সন্তান ব্যারন। তার বয়স এখন ১৮ বছর। গত মঙ্গলবার তিনি পিতার নির্বাচনী প্রচারণার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে নিজের অভিষেক ঘটালেন। গত মঙ্গলবার পিতা ট্রাম্পের অনুরোধে ব্যারন নির্বাচনী প্রচারণায় উপস্থিত হয়ে দাঁড়িয়ে সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়েন। তাদের হাততালি ও উল্লাসের জবাব দেন তিনি। এ সময় নিজের সন্তান সম্পর্কে গর্বিত ট্রাম্প বলেন, কলেজগামী ব্যারন যেসব স্কুলে আবেদন করেছিল সবটাতেই পড়ার সুযোগ পেয়েছে। তিনি যখন ব্যারনকে ‘ভেরি গুড গাই’ হিসেবে বর্ণনা করেন তখন জনতার মধ্যে উল্লাস দেখা দেয়। ট্রাম্প বলেন, এটাই প্রথমবার সে রাজনৈতিক র্যালিতে এসেছে। এটাই প্রথমবার, ঠিক? তুমি খুব বেশি জনপ্রিয়। ডনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র ও এরিক ট্রাম্পের চেয়ে তাকে অনেক বেশি জনপ্রিয় হতে হবে। আমরা এটা নিয়েই আলোচনা করি। তাই ব্যারন, এখানে তোমাকে পেয়ে আমরা গর্বিত। ব্যারনের একটি চমৎকার, সহজ জীবন আছে। কিন্তু এখন তা সামান্য পাল্টে গেল।


























