চট্টগ্রামের হালদা নদীতে কোরবানির পশুর চামড়া ও বর্জ্য ফেলে ভয়াবহ জলদূষণের ঘটনায় পরিবেশ অধিদপ্তর অজ্ঞাতনামা ১২ জনের বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে মামলা দায়ের করেছে।
কোরবানির সময় গরু, মহিষ ও ছাগলের চামড়ার সঠিক মূল্য না পেয়ে ক্ষোভে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি চামড়া ও পশুর নাড়িভুঁড়িসহ বিভিন্ন বর্জ্য পাশের খাল-বিলে ফেলে দেয়। পরে এসব পচনশীল বর্জ্য বিভিন্ন শাখা খালের মাধ্যমে গিয়ে মিশে পড়ে হালদা নদীতে। ফলে নদীর পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হয় এবং এর জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ে।
স্থানীয়দের অভিযোগে সাড়া দিয়ে ফটিকছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে শ্রমিকদের মাধ্যমে শতাধিক পচা চামড়া মাটিচাপা দেওয়া হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি দল চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের রিসার্চ অফিসার মো. আশরাফ উদ্দিনের নেতৃত্বে পরিদর্শন করে। পরিদর্শন শেষে তিনি নিজেই বাদী হয়ে ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এদিকে, নদী থেকে বর্জ্য অপসারণে রাউজান উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজাদীর নেতৃত্বে কার্যক্রম শুরু হয়। শ্রমিকরা নৌকার মাধ্যমে ভাসমান চামড়া ও বর্জ্য তুলে এনে মাটিচাপা দেয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা বিশেষজ্ঞ ড. মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, “পশুর চামড়া, রক্ত ও বর্জ্য পচে নদীর পানিতে অ্যামোনিয়া ও হাইড্রোজেন সালফাইডসহ বিষাক্ত গ্যাস তৈরি করে, যা দ্রবীভূত অক্সিজেন কমিয়ে দেয় এবং মাছসহ জলজপ্রাণীর মৃত্যু ঘটায়। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইউট্রোফিকেশন, যা নদীর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।”তিনি আরো বলেন প্রচুর বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল নামায় বর্তমানে এই দুষন প্রক্রিয়া কমতে শুরু করেছে।
























