নারীরা আজ আর পিছিয়ে নেই, সে প্রমাণ আবারও রাখলেন যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের লিজা। কৃষি খাতে নারীর অংশগ্রহণ ও সাফল্যের নতুন ইতিহাস গড়েছেন তিনি। এবার সৌদি জাতের খেজুর চাষে ব্যতিক্রমী সাফল্য অর্জন করেছেন। এই উদ্যোগের পেছনে রয়েছে অনেক পরিশ্রম ও ধৈর্যের গল্প। প্রতিকূল পরিবেশ ও আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সময় লেগেছে গাছগুলোকে। তবে লিজা বলছেন, নিয়মিত পরিচর্যা ও যত্নই এই সফলতার মূল চাবিকাঠি। দীর্ঘ প্রচেষ্টায় বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বাড়ির আঙিনায় সারি সারি খেজুরগাছ রোপণ করেন তিনি। নুসরাত জাহান লিজার বাড়ি উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী। তিনি এবার বিএ পরীক্ষার্থী। ছয় বছর আগে সৌদি আরব থেকে তাঁদের এক আত্মীয় হজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় ওই দেশের খেজুর নিয়ে আসেন। সেই আত্মীয় লিজাদেরও খেজুর উপহার দেন। লিজার পরিবার সে খেজুরগুলোর বীজ সংরক্ষণ করে। পরে ওই বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করা হয়। পড়াশোনার পাশাপাশি প্রায় পাঁচ বছরের চেষ্টায় গাছগুলোকে বড় করে তোলেন লিজা। দীর্ঘদিন পর এবারই প্রথম তিনটি গাছে ফলন এসেছে। একেক কাঁদিতে ১০ থেকে ১২ কেজি খেজুর রয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, দু-একটি নয়, লিজার বাড়ির আঙিনায় সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় ৪০টি সৌদি খেজুরগাছ। এবারই প্রথম বাগানের কয়েকটি গাছে খেজুর এসেছে। লিজার এই গাছগুলোর কথা জানতে পেরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা একদিন তাঁর বাড়িতে উপস্থিত হন। তাঁরা জানান, যশোরের কেশবপুর অঞ্চলে প্রথম সৌদি খেজুর উৎপাদনের দাবিদার লিজা। লিজার এই সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন প্রতিবেশীরাও। গাছের লাল টসটসে খেজুর দেখার জন্য প্রতিদিন ওই বাড়িতে ভিড় করছে মানুষ।
লিজা জানান, ছয় বছর আগে সৌদি আরব থেকে এক আত্মীয় হজ শেষে বাড়ি ফেরার সময় ওই দেশের খেজুর নিয়ে আসেন। তাদের ওই সৌদি আরবের খেজুর খেতে দিলে তার বীজ সংরক্ষণ করেন। পরে ওই খেজুরের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করে বাড়ির আঙিনায় লাগানো হয়। বর্তমানে তিনটি গাছে ফলন এসেছে। এ ছাড়া অধিকাংশ গাছের গোড়া থেকে একাধিক চারা বের হয়েছে। এসব গাছের গোড়ায় ভার্মিকম্পোস্ট (কেঁচো সার) ব্যবহার করা হয়। কাঁদির এসব খেজুর আগামী এক দেড় মাসের ভেতর পেকে যাবে। পাকলে এসব খেজুর প্রতি কেজি ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা দরে বিক্রি করা যাবে। খেজুর দেখতে আসা মূলগ্রামের চৈতন্য নন্দী ও আলতাপোল গ্রামের ফয়সাল মাহমুদ বলেন, এ অঞ্চলের মাটিতে সৌদি আরবের খেজুর উৎপাদনের কথা শুনে দেখতে এসেছি। গাছের লাল টস টসে খেজুর দেখে অভিভূত। খেজুর বাগান পরিদর্শনে আসা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কিশোর কুমার দাস বলেন, এ উপজেলায় প্রথম সৌদি আরবের খেজুরগাছ লাগিয়ে সফল হয়েছেন নারী উদ্যোক্তা নুসরাত জাহান লিজা। খেজুর গাছে বড় বড় কাঁদিতে শত শত খেজুর দেখে অন্যরাও এ চাষে আগ্রহী হবেন বলে তিনি আশা করছেন।
শিরোনাম
সৌদি জাতের খেজুর চাষে সফল লিজা
-
নিজস্ব প্রতিবেদক - আপডেট সময় : ০৭:১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫
- ।
- 96
জনপ্রিয় সংবাদ























