১০:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জোটের প্রার্থী জুনায়েদ আল হাবিব, লড়বেন রুমিন ফারহানাও

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশ জমিয়তে উলামার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। অন্যদিকে, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।

জোটের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়। জমিয়তের এই নেতা স্থানীয়ভাবে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হিসেবে পরিচিত। তার মনোনয়নে জোটের ভেতরে এক ধরনের ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে বলে জোট সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার সরাইলের এক সমাবেশে রুমিন ফারহানা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, আমার এলাকার মানুষের সিদ্ধান্তই রুমিন ফারহানার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন, মার্কা যা-ই হোক, নির্বাচন করব আমি সরাইল-আশুগঞ্জ থেকেই। জোটের মনোনয়ন প্রসঙ্গে তার কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো জানা না গেলেও, তার সহযোগীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় জনসমর্থনকে ভিত্তি করেই তিনি নির্বাচনে থাকবেন।

এই মনোনয়নকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে জোটের প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন জুনায়েদ আল হাবিব, অন্যদিকে জোটের শরিক দলের জ্যেষ্ঠ নেত্রী রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির মোবারক হোসাইন আকন্দ, জাতীয় পার্টির সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য এবং সদ্য জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) থেকে মনোনয়ন পাওয়া অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের উপস্থিতিতে আসনটি চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এরপর রয়েছে লাঙ্গল প্রতীকের অবস্থান। এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সাতটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছয়বার বিজয়ী হয়েছেন। লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নয়বার অংশ নিয়ে তিনবার, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পাঁচবার অংশ নিয়ে একবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দুইবার বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট তাদের শরিকদের দুবার ছাড় দিয়ে একবার জয়ী হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট তাদের শরিকদের পাঁচবার ছাড় দিয়ে দুইবার জয় পেয়েছে।

তারা আরও বলেন, জুনায়েদ আল হাবিবের মনোনয়ন জোটের ভেতরে ধর্মীয় ভোটারদের সমর্থনে একটি ভারসাম্য তৈরির প্রচেষ্টা। তবে রুমিন ফারহানা স্থানীয়ভাবে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ও সংগঠিত থাকায় নির্বাচনে তিনমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই লড়াই মূলত রুমিন ফারহানা, জুনায়েদ আল হাবিব ও মোবারক হোসাইন আকন্দের মধ্যে হতে পারে।

এদিকে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, আমরা বিএনপি পরিবার দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব। দলের বাইরে কেউ যাব না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি বর্তমানে সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৪৪৮ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৯ জন, আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯৯ জন এবং বিজয়নগর উপজেলার দুটি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৫৭ হাজার ৭৪০ জন।

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

জোটের প্রার্থী জুনায়েদ আল হাবিব, লড়বেন রুমিন ফারহানাও

আপডেট সময় : ০৬:০১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের মনোনয়ন পেয়েছেন বাংলাদেশ জমিয়তে উলামার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। অন্যদিকে, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন।

জোটের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়। জমিয়তের এই নেতা স্থানীয়ভাবে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় হিসেবে পরিচিত। তার মনোনয়নে জোটের ভেতরে এক ধরনের ঐকমত্য সৃষ্টি হয়েছে বলে জোট সূত্র জানিয়েছে।

এর আগে গত শুক্রবার সরাইলের এক সমাবেশে রুমিন ফারহানা দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, আমার এলাকার মানুষের সিদ্ধান্তই রুমিন ফারহানার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আপনারা যদি আমার পাশে থাকেন, মার্কা যা-ই হোক, নির্বাচন করব আমি সরাইল-আশুগঞ্জ থেকেই। জোটের মনোনয়ন প্রসঙ্গে তার কোনো প্রতিক্রিয়া এখনো জানা না গেলেও, তার সহযোগীরা জানিয়েছেন, স্থানীয় জনসমর্থনকে ভিত্তি করেই তিনি নির্বাচনে থাকবেন।

এই মনোনয়নকে ঘিরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে একটি জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে জোটের প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন জুনায়েদ আল হাবিব, অন্যদিকে জোটের শরিক দলের জ্যেষ্ঠ নেত্রী রুমিন ফারহানা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির মোবারক হোসাইন আকন্দ, জাতীয় পার্টির সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য এবং সদ্য জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) থেকে মনোনয়ন পাওয়া অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধাসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের উপস্থিতিতে আসনটি চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আসনটি বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এরপর রয়েছে লাঙ্গল প্রতীকের অবস্থান। এই আসনে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী সাতটি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ছয়বার বিজয়ী হয়েছেন। লাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নয়বার অংশ নিয়ে তিনবার, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী পাঁচবার অংশ নিয়ে একবার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী দুইবার বিজয়ী হয়েছেন। এ আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট তাদের শরিকদের দুবার ছাড় দিয়ে একবার জয়ী হয়েছে। অপরদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট তাদের শরিকদের পাঁচবার ছাড় দিয়ে দুইবার জয় পেয়েছে।

তারা আরও বলেন, জুনায়েদ আল হাবিবের মনোনয়ন জোটের ভেতরে ধর্মীয় ভোটারদের সমর্থনে একটি ভারসাম্য তৈরির প্রচেষ্টা। তবে রুমিন ফারহানা স্থানীয়ভাবে ব্যাপকভাবে সক্রিয় ও সংগঠিত থাকায় নির্বাচনে তিনমুখী লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই লড়াই মূলত রুমিন ফারহানা, জুনায়েদ আল হাবিব ও মোবারক হোসাইন আকন্দের মধ্যে হতে পারে।

এদিকে সরাইল উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর তপু বলেন, আমরা বিএনপি পরিবার দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব। দলের বাইরে কেউ যাব না। দীর্ঘদিন ধরে আমরা ভোট দিতে পারিনি। দলের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনটি বর্তমানে সরাইল, আশুগঞ্জ ও বিজয়নগর উপজেলার একাংশ নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৪৪৮ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৮৮ হাজার ৬০৯ জন, আশুগঞ্জ উপজেলার আটটি ইউনিয়নে ১ লাখ ৫৩ হাজার ৯৯ জন এবং বিজয়নগর উপজেলার দুটি ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ৫৭ হাজার ৭৪০ জন।