চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দিদের খাওয়ার পানিতে ‘কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া’ পাওয়া গেছে, যা তাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। ইন্টারন্যাশনাল রেড ক্রসের সহযোগিতায় করা পরীক্ষায় দেখা গেছে, পানিতে ‘কলোনি ফর্মিং ইউনিট’ এক হাজার ৮০০ পর্যন্ত রয়েছে, যা শূন্যের বেশি হওয়া উচিত নয়।

কারাগারের স্যুয়ারেজের সংযোগ পানির সঙ্গে মিশে এই ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমানে কারাগারে বন্দির সংখ্যা ছয় হাজার। তারা প্রতিদিন এই পানি পান ও ব্যবহার করছেন। এতে ডায়রিয়া, কলেরা, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এবং অন্যান্য আন্ত্রিক সংক্রমণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

পানির নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী, ১১টি পানির পাম্পের মধ্যে ১০টি সাবমার্সিবল পাম্পের পানি পরীক্ষা করা হয়। পাঁচটি পাম্পে জীবাণু ধরা পড়েছে, যার মধ্যে তিনটির পানিতে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। পাম্পগুলোর মধ্যে কারাগারের পদ্মা ওয়ার্ড, যমুনা ওয়ার্ড এবং প্রশাসনিক ভবনের সামনের পাম্পে এই ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। এছাড়া দুটি পাম্পে ‘হার্ডনেস’ মাত্রা বেড়ে গেছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলা কর্মকর্তা সৈয়দ শাহ শরীফ বলেন, পানির নমুনার প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। একজন স্যানিটেশন ইন্সপেক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যিনি বন্দিদের খাবার, পানি ও স্যানিটেশন সংক্রান্ত বিষয় তদারকি করবেন।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়াযুক্ত পানি পানে জন্ডিস, হেপাটাইটিস-এ, ডায়রিয়া এবং অন্যান্য পানিবাহিত রোগের ঝুঁকি রয়েছে। পানি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এদিকে মানবাধিকার সংস্থা ও আইন বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন, বন্দিদের স্বাস্থ্যসম্মত বিশুদ্ধ পানি পাওয়ার অধিকার আছে। কারাগারে কলিফর্ম ব্যাকটেরিয়াযুক্ত পানি সরবরাহ অব্যাহত রাখার ফলে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে। যারা অসুস্থ হয়েছেন বা হবেন, তাদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত।