০৯:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চ্যানেল একাত্তরকে মুশফিকুর রহিমের আইনি নোটিস

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রচার করায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এই নোটিস পাঠান। আইনি নোটিসে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট হন মুশফিকুর রহিম। হাত দিয়ে বল ফিরিয়ে এভাবে আউট হওয়া বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। সাড়ে ১৮ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এমন আউট নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে হয়েছে ট্রলও।

মুশফিকের আউটের ধরন নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলটি ৬ ডিসেম্বর ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ, সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন নিজেদের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে। প্রতিবেদনে ফিক্সিংয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়, জানানো হয় বিষয়টি বিসিবি ও আইসিসিও তদন্ত করতে পারে। ফেসবুক থেকে প্রতিবেদনটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হলেও ইউটিউবে অনেক্ষণ রাখা হয়। পরের দিন এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয় টেলিভিশন চ্যানেলটি।

এমন খবরের প্রতিবাদে পাঠানো আইনি নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, এই প্রতিবেদনের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে মুশফিকের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি এই বিকৃত তথ্যসংবলিত প্রতিবেদনের কারণে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সময় পার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। নির্ভরযোগ্য দলিল, উপযুক্ত তথ্য ছাড়াই ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে খবর প্রকাশ করায় এই আইনি নোটিস দেওয়া হয়েছে।

নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, উক্ত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ মেনে করা হয়নি। একাত্তর টিভির মতো সুপরিচিত চ্যানেলে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ অপ্রত্যাশিত। দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর ২৫(১) (ক), ২৫ (২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিংয়ের অপরাধ উল্লেখ করে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে। সেটা না হলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানি আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইনি নোটিসে যে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে, নোটিসের ভাষায় সেগুলো তুলে ধরা হলো-
১. অতিসত্বর ইউটিউবসহ অন্যান্য প্ল্যাটফরম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলতে ও সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
২. ভুল ও অসত্য এবং মানহানিকর তথ্যসংবলিত প্রতিবেদনের জন্য ৭১ টেলিভিশনকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাসহ তাদের টিভি চ্যানেলে এইসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়েছে।
৩. ৭১ টেলিভিশনকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের এই মনগড়া, ভুল প্রতিবেদনের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।

৪. সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সাইফুল রূপককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের কাছে লিখিতভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।

মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ৪১তম ওভারের খেলা চলছিল, বোলিং করছিলেন নিউজিল্যান্ড পেসার কাইল জেমিসন। তার করা চতুর্থ ডেলিভারি ডিফেন্স করেন মুশফিক, বল পড়ে পেছনে যাচ্ছিল। স্টাম্পে আঘাত করবে ভেবে মুশফিকুর হাত দিয়েই বল ফেরান। হাত দিয়ে বল ধরায় নিউজিল্যান্ড আবেদন করে, তৃতীয় আম্পায়ারের সহায়তায় মাঠের আম্পায়ার তাকে আউট ঘোষণা করেন।

যদিও বল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী হাত দিয়ে বল ফেরালে আর প্রতিপক্ষ আবেদন করলে সেই ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হয়। চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ৮৩ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ রান করা মুশফিককে।

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় গুড়িয়ে দেয়া হয় দু’টি প্রতিষ্ঠান, একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

চ্যানেল একাত্তরকে মুশফিকুর রহিমের আইনি নোটিস

আপডেট সময় : ০৮:৩৭:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩

ক্রীড়া প্রতিবেদক

ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন প্রচার করায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভিকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এই নোটিস পাঠান। আইনি নোটিসে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়েছে।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আউট হন মুশফিকুর রহিম। হাত দিয়ে বল ফিরিয়ে এভাবে আউট হওয়া বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি। সাড়ে ১৮ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের এমন আউট নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে হয়েছে ট্রলও।

মুশফিকের আউটের ধরন নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলটি ৬ ডিসেম্বর ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ, সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে’- শিরোনামে একটি প্রতিবেদন নিজেদের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে। প্রতিবেদনে ফিক্সিংয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়, জানানো হয় বিষয়টি বিসিবি ও আইসিসিও তদন্ত করতে পারে। ফেসবুক থেকে প্রতিবেদনটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হলেও ইউটিউবে অনেক্ষণ রাখা হয়। পরের দিন এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয় টেলিভিশন চ্যানেলটি।

এমন খবরের প্রতিবাদে পাঠানো আইনি নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, এই প্রতিবেদনের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে মুশফিকের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। তিনি এই বিকৃত তথ্যসংবলিত প্রতিবেদনের কারণে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সময় পার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়। নির্ভরযোগ্য দলিল, উপযুক্ত তথ্য ছাড়াই ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে খবর প্রকাশ করায় এই আইনি নোটিস দেওয়া হয়েছে।

নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, উক্ত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ মেনে করা হয়নি। একাত্তর টিভির মতো সুপরিচিত চ্যানেলে এমন প্রতিবেদন প্রকাশ অপ্রত্যাশিত। দন্ডবিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩-এর ২৫(১) (ক), ২৫ (২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিংয়ের অপরাধ উল্লেখ করে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে। সেটা না হলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানি আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আইনি নোটিসে যে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে, নোটিসের ভাষায় সেগুলো তুলে ধরা হলো-
১. অতিসত্বর ইউটিউবসহ অন্যান্য প্ল্যাটফরম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদনটি সরিয়ে ফেলতে ও সরিয়ে ফেলার ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
২. ভুল ও অসত্য এবং মানহানিকর তথ্যসংবলিত প্রতিবেদনের জন্য ৭১ টেলিভিশনকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনাসহ তাদের টিভি চ্যানেলে এইসংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রচার করতে বলা হয়েছে।
৩. ৭১ টেলিভিশনকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের এই মনগড়া, ভুল প্রতিবেদনের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে।

৪. সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক সাইফুল রূপককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের কাছে লিখিতভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।

মিরপুর টেস্টের প্রথম দিন (৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসের ৪১তম ওভারের খেলা চলছিল, বোলিং করছিলেন নিউজিল্যান্ড পেসার কাইল জেমিসন। তার করা চতুর্থ ডেলিভারি ডিফেন্স করেন মুশফিক, বল পড়ে পেছনে যাচ্ছিল। স্টাম্পে আঘাত করবে ভেবে মুশফিকুর হাত দিয়েই বল ফেরান। হাত দিয়ে বল ধরায় নিউজিল্যান্ড আবেদন করে, তৃতীয় আম্পায়ারের সহায়তায় মাঠের আম্পায়ার তাকে আউট ঘোষণা করেন।

যদিও বল অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী হাত দিয়ে বল ফেরালে আর প্রতিপক্ষ আবেদন করলে সেই ব্যাটসম্যানকে আউট ঘোষণা করা হয়। চরম হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় ৮৩ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ৩৫ রান করা মুশফিককে।