দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে মালবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ৯ ঘণ্টা পর পার্বতীপুর-রংপুর রেলপথে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
গতকাল বিকাল ৪টায় খোলাহাটি স্টেশনে আটকাপড়া ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে আসার মাধ্যমে ওই রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এর আগে গতকাল সকাল ৮টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে আসা মালবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এরপর থেকে পার্বতীপুরের সঙ্গে রংপুরের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় ট্রেনটি উদ্ধার করা হলেও বেলা সোয়া ১২টার দিকে আবারও ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এ ঘটনায় কয়েকটি ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে অপেক্ষমাণ থাকে।
জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে গম ভর্তি একটি মালবাহী ট্রেন ৩১টি বগি নিয়ে আজ ভোরে পার্বতীপুরে আসে। ট্রেনটি রংপুরে যাওয়ার পথে সকাল পৌনে ৮টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ইঞ্জিনের পেছনের একটি বগি (নম্বর-১০০৩২৬) লাইনচ্যুত হয়। ট্রেনের অন্যসব বগি কেটে পার্বতীপুর রেল স্টেশনে নেওয়া হয়। এরপর থেকে উত্তরাঞ্চল তথা পঞ্চগড়-পার্বতীপুরের সঙ্গে রংপুরের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এতে বোনারপাড়াগামী আন্তঃনগর দোলনচাঁপা এক্সপ্রেস ট্রেন পার্বতীপুরে, বুড়িমারী থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারী মেইল ট্রেন খোলাহাটি ও কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি রংপুর স্টেশনে আটকা পড়ে। ঘটনার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পার্বতীপুর লোকোশেড থেকে একটি টুল ভ্যান এসে কাজ শুরু করলে বেলা সাড়ে ১১টার পর ট্রেনটির উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয়। পরে উদ্ধার হওয়া ট্রেনটি কেটে রাখা বাকি বগি নেওয়ার জন্য পার্বতীপুর রেল স্টেশনে আসার পথে আবারো একই স্থানে লাইনচ্যুত হয়। পরে আবারো উদ্ধারকারী দল পৌনে একটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
ট্রেনের লোকো মাস্টার (চালক) আব্দুস সাফী জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর পর ট্রেনের গতি কমে গেলে লাইনচ্যুতের বিষয়টি নজরে আসে। মূলত ঘটনাস্থলের লাইন অর্ধ চাঁদ আকৃতির হওয়া এবং লাইনের পরিবর্তনের কাজ চলমান থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
পার্বতীপুর লোকোশেডের রিলিফ ট্রেন ইনচার্জ হাসানুর রহমান জানান, খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে টুলভ্যান নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে উদ্ধারকারী দল। দীর্ঘ সময় প্রচেষ্টার পর ট্রেনটি সাড়ে ১১টার পর উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর ওই ট্রেনের কেটে রাখা বাকি বগি লাগাতে স্টেশনে নেওয়ার পথে আবারো তা লাইনচ্যুত হয়। অতঃপর বিকাল ৪টার দিকে ট্রেনটি উদ্ধার করে পার্বতীপুর রেল স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ওই রেলপথ মেরামতের পর ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হয়।
পার্বতীপুর রেল স্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম জানান, দুর্ঘটনার পরপরই উদ্ধার কাজ শুরু করে সংশ্লিষ্টরা। উদ্ধারের পর আবারো একই দুর্ঘটনা ঘটে। এরপর বিকাল ৪টায় কুড়িগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা খোলাহাটি স্টেশনে আটকাপড়া ঢাকাগামী কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনটি পার্বতীপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা পর এর মাধ্যমে ওই রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স/মিফা





















