০৪:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার মান ও পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন

• আস্থার সংকটে ঢাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
• পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা ও শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন
নেই কোনো শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতা
• খরচ না থাকায় গরিবের স্কুল হিসেবেই পরিচিত এসব স্কুল
• মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালীদের পাশাপাশি সরকারি কর্মজীবীদের সন্তানরা এখানে ভর্তি হয় না

শতভাগ শিক্ষার হার নিশ্চিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে সরকারি স্কুল। আর প্রাথমিক শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সারা দেশে। আধুনিক ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ এবং দক্ষ শিক্ষক নিয়োগসহ বড় অঙ্কের টাকা খরচ করা হয় এসব স্কুলের পেছনে। মফস্বলের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছে তাই স্কুলগুলোর চাহিদাও বেশ ভালো। তবে ব্যতিক্রম রাজধানী ঢাকার সরকারি স্কুলগুলো। একই সুযোগ-সুবিধা নিয়েও সব শ্রেণির অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে পারছে না এসব স্কুল। নানা কারণে ঢাকার সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো এখন গরিবের স্কুল হিসেবে পরিচিত। মধ্যবিত্ত ও মোটামুটি বিত্তশালীদের পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীরাও তাদের সন্তানকে সরকারি প্রাথমিকের পরিবর্তে বেসরকারি অন্য স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। অনেকে কষ্ট করে হলেও বাড়তি খরচ দিয়ে বেসরকারি স্কুলেই সন্তানদের পড়াচ্ছেন। কারণ সরকারি স্কুলে তুলনামূলক গরিব, নিম্নআয়ের নানা শ্রেণির পরিবারের সন্তানরা পড়তে আসে। সেখানকার পরিবেশ, নিরাপত্তা ও পড়ার মানে আস্থা রাখতে পাচ্ছেন না সচেতন ও সামর্থবান অভিভাবক। একদিকে বেসরকারি স্কুলে যখন শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ভিড়, অন্যদিকে অনেক সরকারি প্রাথমিক স্কুলে চাহিদামতো শিক্ষার্থী পায় না। অথচ দেশের সরকারি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি ঠিকই সবার আগ্রহ বেশি থাকে। তাই রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা শহরে আছে ৩৪২টি। ঢাকার এসব স্কুলের সুযোগ-সুবিধা প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়টির সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন সবুজ বাংলাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মান বেসরকারি স্কুলগুলোর চেয়ে অনেক ভালো। এখানকার পড়ালেখার মান আরও বাড়াতে শিক্ষকদের ট্রেনিং, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগসহ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। নতুন কারিকুলামও এখানে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্কুলগুলোতে প্রতি শিক্ষকের বিপরীতে ৩০ জন হারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। সেহিসেবে শিক্ষার্থীও যথেষ্ঠ আছে। তারপরও এসব স্কুলের প্রতি এক শ্রেণির বিশেষ করে ঢাকার মানুষের অনীহার কারণ কি জানি না। এর কারণ খোঁজা দরকার। তিনি বলেন, আসলে ঢাকায় সরকারি প্রাথমিকের পরিবর্তে কিন্ডার গার্টেন বা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ানো একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সরকারি প্রাথমিক স্কুল বিমুখতার কারণ প্রসঙ্গে একজন অভিভাবক জানান, এসব স্কুলে গরিব ও নিম্নশ্রেণির পরিবারের সন্তানরা পড়তে যায়। ফলে সেখানকার পরিবেশ খুবই বিশৃঙ্খল। যে পরিবেশে কোনো ভদ্রঘরের সন্তানদের খাপ খাওয়ানো অসম্ভব। তাছাড়া সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ঠিকমতো পড়ালেখাও হয় না। কারণ সেখানকার শিক্ষকদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকারি চাকরির কারণে চাকরি হারানোর ভয় না থাকায় তারা অনেকটাই স্বাধীনভাবে চলাফেরা করেন। স্কুলের লেখাপড়া ও অন্যান্য পরিবেশ নিয়ে তাদের তেমন কোনো মাথা ব্যথা নেই। তাছাড়া মেয়েদের আলাদা কোনো সরকারি প্রাথমিক স্কুল না থাকায় মেয়েদেরকে সেখানে পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চান না অনেকে। পারিবারিক স্ট্যাটাসকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণেও ‘গরিবের স্কুলগুলোতে’ অনেকেই তাদের সন্তানদের ভর্তি করানোর আগ্রহ দেখান না।

নানা সংকট আর বাস্তবতার কথা জানিয়ে রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত খোদেজা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান গতকাল সবুজ বাংলাকে বলেন, তার স্কুলে বর্তমানে ৭ জন শিক্ষক ও ২৫০ জন শিক্ষার্থী আছে। মূলত, সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো আসন সংখ্যা নির্ধারিত থাকে না। তবে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার অংশ হিসেবে এলাকার আগ্রহী সবাইকে ভর্তি করানো হয়। এক্ষেত্রে ছিন্নমূল-পথশিশু, প্রতিবন্ধীসহ দরিদ্র পরিবারের সন্তানরাই এসব স্কুলে ভর্তি হন। তবে অনেক অভিভাবক বাসা, ব্যবসা বা কর্মস্থল পরিবর্তন করার কারণে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ অন্যত্র চলে যায়। মফস্বলের তুলনায় ঢাকার সরকারি প্রাথমিক স্কুলে বিত্তশালী এমনকি সরকারি কর্মজীবীদের সন্তানদেরও ভর্তিতে অনাগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রাম এলাকায় সরকারি স্কুল ছাড়া ভালো মানের কোনো স্কুল না থাকায় সেখানে সবার আগ্রহ থাকে। তবে রাজধানীতে শিক্ষিত ও ধনী মানুষের বসবাস বেশি হওয়ায় তাদের সন্তানদের এসব স্কুলে ভর্তি করান না। অবশ্য আমাদের স্কুলে পড়াশোনা ভালো, শিক্ষকও ভালো, শিক্ষকদের প্রতিনিয়ত ট্রেনিং দেওয়া হয়। তবে গরিব সন্তানরা বেশি থাকায় স্কুলের এই পরিবেশের সঙ্গে খাপখাওয়াতে না পারা ও নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় অনেকে তাদের সন্তানদের ভর্তি করান না। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য পরিবেশ ভালো মনে করেন না অনেকে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মনজুর আহমদ সবুজ বাংলাকে বলেন, রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অবকাঠামো, শিক্ষক ও তত্তাবধান যথেষ্ঠ না থাকায় বিত্তশালীদের সন্তানদের ইংলিশ মিডিয়াম বা অন্য স্কুলে পাঠায়। অথচ এসব স্কুলের মান নিশ্চিতে সিটি করপোরেশন নাকি শিক্ষা অধিদপ্তরের দায়িত্ব তা নির্দিষ্ট নেই। কেউ এগুলো দেখে না। এগুলো নিয়ে কারও যেন মাথা ব্যাথা নেই। তিনি বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। উন্নত এবং অন্যান্য দেশে এটা আছে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত না করতে পারলে উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা পাওয়া যাবে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

শহীদ জিয়ার কবরের পাশে খালেদা জিয়ার দাফনের প্রস্তুতি

শিক্ষার মান ও পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন

আপডেট সময় : ০৮:১৫:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

• আস্থার সংকটে ঢাকার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
• পর্যাপ্ত সুযোগসুবিধা ও শিক্ষক থাকলেও শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন
নেই কোনো শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা ও জবাবদিহিতা
• খরচ না থাকায় গরিবের স্কুল হিসেবেই পরিচিত এসব স্কুল
• মধ্যবিত্ত ও বিত্তশালীদের পাশাপাশি সরকারি কর্মজীবীদের সন্তানরা এখানে ভর্তি হয় না

শতভাগ শিক্ষার হার নিশ্চিত করতে সরকারের নানা উদ্যোগের পাশাপাশি দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে সরকারি স্কুল। আর প্রাথমিক শিক্ষায় বেশি গুরুত্ব দেওয়ার কারণে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সারা দেশে। আধুনিক ভবন ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ এবং দক্ষ শিক্ষক নিয়োগসহ বড় অঙ্কের টাকা খরচ করা হয় এসব স্কুলের পেছনে। মফস্বলের অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছে তাই স্কুলগুলোর চাহিদাও বেশ ভালো। তবে ব্যতিক্রম রাজধানী ঢাকার সরকারি স্কুলগুলো। একই সুযোগ-সুবিধা নিয়েও সব শ্রেণির অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে পারছে না এসব স্কুল। নানা কারণে ঢাকার সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো এখন গরিবের স্কুল হিসেবে পরিচিত। মধ্যবিত্ত ও মোটামুটি বিত্তশালীদের পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীরাও তাদের সন্তানকে সরকারি প্রাথমিকের পরিবর্তে বেসরকারি অন্য স্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন। অনেকে কষ্ট করে হলেও বাড়তি খরচ দিয়ে বেসরকারি স্কুলেই সন্তানদের পড়াচ্ছেন। কারণ সরকারি স্কুলে তুলনামূলক গরিব, নিম্নআয়ের নানা শ্রেণির পরিবারের সন্তানরা পড়তে আসে। সেখানকার পরিবেশ, নিরাপত্তা ও পড়ার মানে আস্থা রাখতে পাচ্ছেন না সচেতন ও সামর্থবান অভিভাবক। একদিকে বেসরকারি স্কুলে যখন শিক্ষার্থীদের ব্যাপক ভিড়, অন্যদিকে অনেক সরকারি প্রাথমিক স্কুলে চাহিদামতো শিক্ষার্থী পায় না। অথচ দেশের সরকারি মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি ঠিকই সবার আগ্রহ বেশি থাকে। তাই রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্রমতে, দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকা শহরে আছে ৩৪২টি। ঢাকার এসব স্কুলের সুযোগ-সুবিধা প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়টির সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান তুহিন সবুজ বাংলাকে বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মান বেসরকারি স্কুলগুলোর চেয়ে অনেক ভালো। এখানকার পড়ালেখার মান আরও বাড়াতে শিক্ষকদের ট্রেনিং, পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগসহ নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। নতুন কারিকুলামও এখানে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। স্কুলগুলোতে প্রতি শিক্ষকের বিপরীতে ৩০ জন হারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। সেহিসেবে শিক্ষার্থীও যথেষ্ঠ আছে। তারপরও এসব স্কুলের প্রতি এক শ্রেণির বিশেষ করে ঢাকার মানুষের অনীহার কারণ কি জানি না। এর কারণ খোঁজা দরকার। তিনি বলেন, আসলে ঢাকায় সরকারি প্রাথমিকের পরিবর্তে কিন্ডার গার্টেন বা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়ানো একটা ফ্যাশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে সরকারি প্রাথমিক স্কুল বিমুখতার কারণ প্রসঙ্গে একজন অভিভাবক জানান, এসব স্কুলে গরিব ও নিম্নশ্রেণির পরিবারের সন্তানরা পড়তে যায়। ফলে সেখানকার পরিবেশ খুবই বিশৃঙ্খল। যে পরিবেশে কোনো ভদ্রঘরের সন্তানদের খাপ খাওয়ানো অসম্ভব। তাছাড়া সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে ঠিকমতো পড়ালেখাও হয় না। কারণ সেখানকার শিক্ষকদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সরকারি চাকরির কারণে চাকরি হারানোর ভয় না থাকায় তারা অনেকটাই স্বাধীনভাবে চলাফেরা করেন। স্কুলের লেখাপড়া ও অন্যান্য পরিবেশ নিয়ে তাদের তেমন কোনো মাথা ব্যথা নেই। তাছাড়া মেয়েদের আলাদা কোনো সরকারি প্রাথমিক স্কুল না থাকায় মেয়েদেরকে সেখানে পাঠানোর ঝুঁকি নিতে চান না অনেকে। পারিবারিক স্ট্যাটাসকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণেও ‘গরিবের স্কুলগুলোতে’ অনেকেই তাদের সন্তানদের ভর্তি করানোর আগ্রহ দেখান না।

নানা সংকট আর বাস্তবতার কথা জানিয়ে রাজধানীর বাংলামোটরে অবস্থিত খোদেজা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরজাহান গতকাল সবুজ বাংলাকে বলেন, তার স্কুলে বর্তমানে ৭ জন শিক্ষক ও ২৫০ জন শিক্ষার্থী আছে। মূলত, সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির কোনো আসন সংখ্যা নির্ধারিত থাকে না। তবে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার অংশ হিসেবে এলাকার আগ্রহী সবাইকে ভর্তি করানো হয়। এক্ষেত্রে ছিন্নমূল-পথশিশু, প্রতিবন্ধীসহ দরিদ্র পরিবারের সন্তানরাই এসব স্কুলে ভর্তি হন। তবে অনেক অভিভাবক বাসা, ব্যবসা বা কর্মস্থল পরিবর্তন করার কারণে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ অন্যত্র চলে যায়। মফস্বলের তুলনায় ঢাকার সরকারি প্রাথমিক স্কুলে বিত্তশালী এমনকি সরকারি কর্মজীবীদের সন্তানদেরও ভর্তিতে অনাগ্রহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রাম এলাকায় সরকারি স্কুল ছাড়া ভালো মানের কোনো স্কুল না থাকায় সেখানে সবার আগ্রহ থাকে। তবে রাজধানীতে শিক্ষিত ও ধনী মানুষের বসবাস বেশি হওয়ায় তাদের সন্তানদের এসব স্কুলে ভর্তি করান না। অবশ্য আমাদের স্কুলে পড়াশোনা ভালো, শিক্ষকও ভালো, শিক্ষকদের প্রতিনিয়ত ট্রেনিং দেওয়া হয়। তবে গরিব সন্তানরা বেশি থাকায় স্কুলের এই পরিবেশের সঙ্গে খাপখাওয়াতে না পারা ও নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কায় অনেকে তাদের সন্তানদের ভর্তি করান না। বিশেষ করে মেয়েদের জন্য পরিবেশ ভালো মনে করেন না অনেকে। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. মনজুর আহমদ সবুজ বাংলাকে বলেন, রাজধানীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে অবকাঠামো, শিক্ষক ও তত্তাবধান যথেষ্ঠ না থাকায় বিত্তশালীদের সন্তানদের ইংলিশ মিডিয়াম বা অন্য স্কুলে পাঠায়। অথচ এসব স্কুলের মান নিশ্চিতে সিটি করপোরেশন নাকি শিক্ষা অধিদপ্তরের দায়িত্ব তা নির্দিষ্ট নেই। কেউ এগুলো দেখে না। এগুলো নিয়ে কারও যেন মাথা ব্যাথা নেই। তিনি বলেন, মানসম্মত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। উন্নত এবং অন্যান্য দেশে এটা আছে। আমরা মধ্যম আয়ের দেশ। মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত না করতে পারলে উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা পাওয়া যাবে না।