০৪:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে নানা তৎপরতা

◉সবার মতামত আহ্বান করেছে কমিশন
◉ মতামত দেওয়া যাবে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে
◉ মতামত দেওয়ার শেষ সময় ১৫ নভেম্বর
◉ অতীতের নির্বাচনগুলো খতিয়ে দেখার চেষ্টা করব : ড. বদিউল আলম মজুমদার

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় তৎপরতা চলছে নির্বাচনী কমিশন ঘিরেও (ইসি)। এজন্য সম্প্রতি একটি কমিশনও গঠিত হয়েছে। আর নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে সব অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই প্রতিবেদন তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
গতকাল মঙ্গলবার অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবার মূল্যবান পরামর্শ, মতামত ও প্রস্তাবনা আহ্বান করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকলের মূল্যবান পরামর্শ, মতামত ও প্রস্তাবনা জানতে আগ্রহী।

এ প্রেক্ষিতে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে অভিজ্ঞতালব্ধ ও সুনির্দিষ্ট মতামত নিম্নোক্ত ই-মেইল অথবা ওয়েবসাইট অথবা কমিশনের ফেসবুক পেইজে ১৫ নভেম্বর তারিখের মধ্যে পাঠানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
নিম্নোক্ত ই-মেইল, ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজে মতামত দেয়া যাবে – ই-মেইল: ভববফনধপশ@বৎপ.বপং.মড়া.নফ, ওয়েবসাইট: যঃঃঢ়ং://বৎপ.বপং.মড়া.নফ ও ফেসবুক পেইজ: িি.িভধপবনড়ড়শ.পড়স/বৎপনফ২০২৪ এর আগে, ড. বদিউল আলম মজুমদার জানিয়েছিলেন, সাধারণ জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে তার কমিশন নির্বাচনী সংস্কারের প্রস্তাব করবেন। এতে নির্বাচনী আইন, বিধি, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন, ভোটার তালিকা আইন প্রভৃতি বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাব আনা হবে।
এ সময় তিনি বলেন, সময় সংকীর্ণ, সময় কম, তবুও আমরা অংশীজনের যতটুকু সম্ভব আলাপ আলোচনা করব। এরপরে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দিব।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা শুরু করলাম। সব কিছু জানবেন। আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করব।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা যেটা করব নির্বাচনের সঙ্গে সংবিধান যুক্ত আছে, অনেকগুলো আইন যুক্ত আছে, বিধি-বিধান যুক্ত আছে। সংবিধানে নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব বিধি-বিধান আছে সেগুলো পর্যালোচনা করব। পরে এসব বিষয়ে কী করা যায়, তা পর্যালোচনা করে আমরা সুপারিশ করব।
তিনি জানান, সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলো নির্বাচন কমিশন। এর সঙ্গে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান আছে নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত।
এসব প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে আরও নিরপেক্ষ, কার্যকরী করা যায়, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা যায়Ñ এই বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা, আপনাদের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে কিছু সুপারিশ করব। আমাদের বড় কাজ জাতীয় নির্বাচনের আরপিওসহ অনেকগুলো আইন পর্যালোচনা করব। প্রত্যেক বাক্য আমরা পর্যালোচনা করব, মূল্যায়ন করার চেষ্টা করব।
নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে অনেকগুলো ফর্ম রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে পরিবর্তন করার প্রয়োজন রয়েছে কি না তাও দেখা হবে। নির্বাচন ব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় নির্বাচনে যে সংরক্ষিত আসন আছে, স্থানীয় নির্বাচনে যে রিজার্ভ সিট আছে এসব বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।

আমাদের বড় ইস্যু হলো, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অধিকার ও ভোটের অধিকারহীনতা- এটা নিয়ে কী করা যায়, এই বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখব। এখানে আমাদের যে টেকনোলজি এক্সপার্ট আছে, সে খতিয়ে দেখবে। এবং অন্যদেরও সহায়তা নিব। অতীতের নির্বাচনগুলো খতিয়ে দেখার চেষ্টা করব, তা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করার চেষ্টা করব এবং আমরা পাশ্ববর্তী দেশের নির্বাচনের কিছু অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চেষ্টা করব। এগুলো আমরা প্রাথমিকভাবে চিন্তা করেছি।

সবার সহায়তা চেয়ে তিনি বলেন, আমরা তথ্য দিয়ে আলো ছড়ানোর চেষ্টা করব, তথ্য দিয়ে আমাদের সহায়তা করবেন, এর ফলে জাতি উপকৃত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রধান হিসেবে ড. বদিউল আলম মজুমদারের নাম ঘোষণা করেন। এরপর ৩ অক্টোবর আট জনের এ কমিশন গঠিত হয়। ৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে কমিটির।
নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে আরও সাতজনকে সদস্য করা হয়েছে। সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ তোফায়েল আহমেদ; নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিশেষজ্ঞ ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী; নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল আলীম; রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও ওপিনিয়ন মেকার জাহেদ উর রহমান; শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন; ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে নানা তৎপরতা

আপডেট সময় : ০৮:৪৬:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪

◉সবার মতামত আহ্বান করেছে কমিশন
◉ মতামত দেওয়া যাবে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে
◉ মতামত দেওয়ার শেষ সময় ১৫ নভেম্বর
◉ অতীতের নির্বাচনগুলো খতিয়ে দেখার চেষ্টা করব : ড. বদিউল আলম মজুমদার

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় তৎপরতা চলছে নির্বাচনী কমিশন ঘিরেও (ইসি)। এজন্য সম্প্রতি একটি কমিশনও গঠিত হয়েছে। আর নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন বিদ্যমান নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারে সব অংশীজনের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেই প্রতিবেদন তৈরি করবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার।
গতকাল মঙ্গলবার অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সবার মূল্যবান পরামর্শ, মতামত ও প্রস্তাবনা আহ্বান করে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেন তিনি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন একটি অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকলের মূল্যবান পরামর্শ, মতামত ও প্রস্তাবনা জানতে আগ্রহী।

এ প্রেক্ষিতে নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কার বিষয়ে অভিজ্ঞতালব্ধ ও সুনির্দিষ্ট মতামত নিম্নোক্ত ই-মেইল অথবা ওয়েবসাইট অথবা কমিশনের ফেসবুক পেইজে ১৫ নভেম্বর তারিখের মধ্যে পাঠানোর জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়।
নিম্নোক্ত ই-মেইল, ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজে মতামত দেয়া যাবে – ই-মেইল: ভববফনধপশ@বৎপ.বপং.মড়া.নফ, ওয়েবসাইট: যঃঃঢ়ং://বৎপ.বপং.মড়া.নফ ও ফেসবুক পেইজ: িি.িভধপবনড়ড়শ.পড়স/বৎপনফ২০২৪ এর আগে, ড. বদিউল আলম মজুমদার জানিয়েছিলেন, সাধারণ জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সকল অংশীজনের মতামতের ভিত্তিতে তার কমিশন নির্বাচনী সংস্কারের প্রস্তাব করবেন। এতে নির্বাচনী আইন, বিধি, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন, ভোটার তালিকা আইন প্রভৃতি বিষয়ে সংস্কারের প্রস্তাব আনা হবে।
এ সময় তিনি বলেন, সময় সংকীর্ণ, সময় কম, তবুও আমরা অংশীজনের যতটুকু সম্ভব আলাপ আলোচনা করব। এরপরে আমরা প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দিব।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা শুরু করলাম। সব কিছু জানবেন। আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করব।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমরা যেটা করব নির্বাচনের সঙ্গে সংবিধান যুক্ত আছে, অনেকগুলো আইন যুক্ত আছে, বিধি-বিধান যুক্ত আছে। সংবিধানে নির্বাচন সংক্রান্ত যেসব বিধি-বিধান আছে সেগুলো পর্যালোচনা করব। পরে এসব বিষয়ে কী করা যায়, তা পর্যালোচনা করে আমরা সুপারিশ করব।
তিনি জানান, সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হলো নির্বাচন কমিশন। এর সঙ্গে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান আছে নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত।
এসব প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে আরও নিরপেক্ষ, কার্যকরী করা যায়, সঠিক ব্যক্তিদের নিয়ে গঠন করা যায়Ñ এই বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা, আপনাদের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নিয়ে কিছু সুপারিশ করব। আমাদের বড় কাজ জাতীয় নির্বাচনের আরপিওসহ অনেকগুলো আইন পর্যালোচনা করব। প্রত্যেক বাক্য আমরা পর্যালোচনা করব, মূল্যায়ন করার চেষ্টা করব।
নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের এ বিশেষজ্ঞ বলেন, নির্বাচনের ব্যাপারে অনেকগুলো ফর্ম রয়েছে, তা খতিয়ে দেখে পরিবর্তন করার প্রয়োজন রয়েছে কি না তাও দেখা হবে। নির্বাচন ব্যবস্থায় নারীর অংশগ্রহণ ও জাতীয় নির্বাচনে যে সংরক্ষিত আসন আছে, স্থানীয় নির্বাচনে যে রিজার্ভ সিট আছে এসব বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে।

আমাদের বড় ইস্যু হলো, প্রবাসীদের ভোট দেওয়ার অধিকার ও ভোটের অধিকারহীনতা- এটা নিয়ে কী করা যায়, এই বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখব। এখানে আমাদের যে টেকনোলজি এক্সপার্ট আছে, সে খতিয়ে দেখবে। এবং অন্যদেরও সহায়তা নিব। অতীতের নির্বাচনগুলো খতিয়ে দেখার চেষ্টা করব, তা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করার চেষ্টা করব এবং আমরা পাশ্ববর্তী দেশের নির্বাচনের কিছু অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে চেষ্টা করব। এগুলো আমরা প্রাথমিকভাবে চিন্তা করেছি।

সবার সহায়তা চেয়ে তিনি বলেন, আমরা তথ্য দিয়ে আলো ছড়ানোর চেষ্টা করব, তথ্য দিয়ে আমাদের সহায়তা করবেন, এর ফলে জাতি উপকৃত হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচন কমিশন সংস্কার প্রধান হিসেবে ড. বদিউল আলম মজুমদারের নাম ঘোষণা করেন। এরপর ৩ অক্টোবর আট জনের এ কমিশন গঠিত হয়। ৯০ দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে কমিটির।
নির্বাচন ও স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনে আরও সাতজনকে সদস্য করা হয়েছে। সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ শিক্ষাবিদ তোফায়েল আহমেদ; নির্বাচন ব্যবস্থা, ভোটার নিবন্ধন ও জাতীয় পরিচয়পত্র বিশেষজ্ঞ ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী; নির্বাচন বিশেষজ্ঞ মো. আব্দুল আলীম; রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ও ওপিনিয়ন মেকার জাহেদ উর রহমান; শাসন প্রক্রিয়া ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বিশেষজ্ঞ মীর নাদিয়া নিভিন; ইলেকট্রনিক ভোটিং ও ব্লকচেইন বিশেষজ্ঞ মোহাম্মদ সাদেক ফেরদৌস এবং একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।