আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাঙ্গামাটির রাজস্থলী উপজেলায় নির্বাচনী প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। উপজেলা নির্বাচন প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ভোটারদের জন্য সমান সুযোগ ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, বিশেষ করে দুর্গম পাহাড়ি এলাকাগুলোর ভোটকেন্দ্রগুলোতে।
উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাজস্থলী উপজেলায় মোট ১২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৯৭৭ জন এবং নারী ভোটার ১০ হাজার ৭৫৫ জন। নারী ও পুরুষ ভোটারের প্রায় সমান অংশগ্রহণ উপজেলায় গণতান্ত্রিক চর্চার একটি ইতিবাচক দিক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাজস্থলী উপজেলার ভৌগোলিক অবস্থান পাহাড়ি ও দুর্গম হওয়ায় কয়েকটি ভোটকেন্দ্রে এখনো জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। অতীতে এসব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পরিচালনায় নানা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছিল। এ সমস্যা সমাধানে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় ভোটগ্রহণের আগেই তিনটি দুর্গম ভোটকেন্দ্রে বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সোলার আলো স্থাপন করা হয়েছে।
বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন যে তিনটি ভোটকেন্দ্রে সোলার আলো স্থাপন করা হয়েছে, সেগুলো হলো চুশাকা পাড়া, বুলি পাড়া ও নাড়াছড়ি পাড়া ভোটকেন্দ্র। দীর্ঘ পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে ভোটারদের এসব কেন্দ্রে পৌঁছাতে হয়। ফলে পর্যাপ্ত আলো ও অবকাঠামোগত সুবিধার অভাব আগে ভোটার উপস্থিতিতে প্রভাব ফেলত। সোলার আলো স্থাপনের ফলে ভোটকেন্দ্রগুলোর পরিবেশ আরও নিরাপদ ও উপযোগী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার অনিক বড়ুয়া জানান, রাজস্থলীর কয়েকটি ভোটকেন্দ্র অত্যন্ত দুর্গম হওয়ায় সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। ভোটারদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে আগেভাগেই এসব কেন্দ্রে সোলার আলো স্থাপন করা হয়েছে, যাতে ভোটগ্রহণের দিন কোনো ধরনের বিঘ্ন না ঘটে। তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের জন্য ন্যূনতম সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।
স্থানীয় ভোটাররাও এই উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। চুশাকা পাড়া এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “আগে ভোট দিতে এসে আলো না থাকায় অনেক সমস্যায় পড়তে হতো। এখন সোলার আলো থাকায় নারী ও বয়স্ক ভোটারদের জন্য ভোট দেওয়া সহজ হবে।”
নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের ধারণা, দুর্গম ভোটকেন্দ্রগুলোতে সোলার আলো স্থাপনের ফলে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে এবং রাজস্থলী উপজেলায় একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এমআর/সবা






















