০১:২৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রাথমিকে শূন্য ৩৪ হাজার প্রধানের পদ দেশের সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ

‘জাতীয় সংস্কারক’ স্বীকৃতি পাওয়ার আগ্রহ নেই ড. ইউনূসের

ছবি : সংগৃহীত।

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন সংকটে জর্জরিত। এর মধ্যে অন্যতম হলো ফাঁকা প্রধান শিক্ষকের পদ। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ৬৫ হাজারের বেশি অনুমোদিত প্রধান শিক্ষক পদের মধ্যে ৩৪ হাজারের বেশি শূন্য। অর্থাৎ প্রায় ৫২ শতাংশ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। শুধু প্রধান শিক্ষকই নয়, সহকারী শিক্ষকের বিপুলসংখ্যক পদ ফাঁকা। শিক্ষকের অভাবে শিক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীর গতির কারণে এ সংকট দীর্ঘ হচ্ছে। এমনিতেই ঠিকমতো পড়াশোনার অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিখন ঘাটতি নিয়ে ওপরের শ্রেণিতে ওঠে। এর মধ্যে বিদ্যমান শিক্ষক সংকট এ সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ জন্য সংকট নিরসনে তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের করা বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারির (এপিএসসি) তথ্য বলছে, দেশে এখন মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় এক লাখ ১৪ হাজার ৬৩০টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। সরকারি-বেসরকারি সব মিলিয়ে দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই কোটি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে এক কোটির মতো। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত সপ্তাহের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৬৫ হাজার ৪৫৭টি। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১০৬টি পদ শূন্য। এছাড়া সারা দেশে সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৩টি। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৫৩৬টি পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলোর মধ্যে ১৩ হাজার ৬৭৫টি পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে শিক্ষকদেরই একটি পক্ষ মামলা করেছিলেন। এ নিয়ে স্থগিতাদেশ থাকায় পদোন্নতি দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। চাকরিতে কোটার বিষয়ে গত বছরের সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগবিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এটি হয়ে গেলে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নিয়োগবিধিটি এখন সরকারি কর্ম কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেখানে দেরি হচ্ছে। এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানিয়েছে, দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উল্লেখ্য, এতদিন ধরে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে ৬০ শতাংশ নারী কোটাসহ বিভিন্ন ধরনের কোটা ছিল। কিন্তু গত বছর সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির নিয়োগে নতুন কোটা নির্ধারণ করে সরকার। নতুন এই নিয়মে সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। এখন সেই বিষয়টি প্রাথমিকর নিয়োগ বিধিতেও যুক্ত করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘জাতীয় সংস্কারক’ স্বীকৃতি পাওয়ার কোনো আগ্রহ দেখাননি বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রেস সচিব তার পোস্টে লেখেন, সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে দায়ের করা এক রিট আবেদনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা না করার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। সরকার রুলের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পর যথাসময়ে এ বিষয়ে উত্তর দেবে। তিনি আরও লেখেন, সরকার এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে চায়, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এমন কোনো স্বীকৃতি পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেননি এবং সরকারও তাকে এ ধরনের কোনো উপাধি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে না। মনে হচ্ছে, রিট আবেদনটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে দায়ের করা হয়েছে এবং এতে নির্দেশনা চাওয়ার ভিত্তিও অস্পষ্ট। বিষয়টি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা না করার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। একইসঙ্গে জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামসহ অন্যদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা না করার কারণও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, তথ্য সচিব ও অর্থ সচিবকে রুলে বিবাদী করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
এদিকে, জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সকলকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জুলাই শহীদদের স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সকলে এগিয়ে যাবো-আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। শহীদ জুলাই দিবস উপলক্ষে গতকাল দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। আজ ১৬ জুলাই প্রথমবারের মতো পালিত হবে ‘জুলাই শহিদ দিবস’। দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এদিন ছুটি থাকবে না। গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানিয়া আফরোজার সই করা এক পরিপত্রে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রথমবারের মতো দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই শহিদ দিবস’। এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদকে।

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রাথমিকে শূন্য ৩৪ হাজার প্রধানের পদ দেশের সব বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ

আপডেট সময় : ০৭:১০:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বিভিন্ন সংকটে জর্জরিত। এর মধ্যে অন্যতম হলো ফাঁকা প্রধান শিক্ষকের পদ। ফলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। ৬৫ হাজারের বেশি অনুমোদিত প্রধান শিক্ষক পদের মধ্যে ৩৪ হাজারের বেশি শূন্য। অর্থাৎ প্রায় ৫২ শতাংশ বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক। শুধু প্রধান শিক্ষকই নয়, সহকারী শিক্ষকের বিপুলসংখ্যক পদ ফাঁকা। শিক্ষকের অভাবে শিক্ষাব্যবস্থার মূল ভিত্তি আরও নড়বড়ে হয়ে পড়েছে।
মামলা, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে প্রশাসনিক জটিলতা, নিয়োগ পরীক্ষায় দেরি, পদোন্নতিতে ধীর গতির কারণে এ সংকট দীর্ঘ হচ্ছে। এমনিতেই ঠিকমতো পড়াশোনার অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শিখন ঘাটতি নিয়ে ওপরের শ্রেণিতে ওঠে। এর মধ্যে বিদ্যমান শিক্ষক সংকট এ সমস্যাকে আরও প্রকট করে তুলছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ জন্য সংকট নিরসনে তড়িৎ পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের করা বার্ষিক প্রাথমিক বিদ্যালয় শুমারির (এপিএসসি) তথ্য বলছে, দেশে এখন মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় এক লাখ ১৪ হাজার ৬৩০টি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৭টি। সরকারি-বেসরকারি সব মিলিয়ে দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া মোট শিক্ষার্থী প্রায় দুই কোটি। এর মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ে এক কোটির মতো। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত সপ্তাহের তথ্য বলছে, বর্তমানে দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৬৫ হাজার ৪৫৭টি। এর মধ্যে ৩৪ হাজার ১০৬টি পদ শূন্য। এছাড়া সারা দেশে সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ আছে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৩টি। এর মধ্যে ২৪ হাজার ৫৩৬টি পদ শূন্য। প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদগুলোর মধ্যে ১৩ হাজার ৬৭৫টি পদে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়) মাসুদ আকতার খান বলেন, প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে শিক্ষকদেরই একটি পক্ষ মামলা করেছিলেন। এ নিয়ে স্থগিতাদেশ থাকায় পদোন্নতি দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা খুব গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। চাকরিতে কোটার বিষয়ে গত বছরের সিদ্ধান্ত অন্তর্ভুক্ত করে নিয়োগবিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এটি হয়ে গেলে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, নিয়োগবিধিটি এখন সরকারি কর্ম কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। সেখানে দেরি হচ্ছে। এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার সকালে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানিয়েছে, দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে প্রধান শিক্ষকের শূন্য পদে দ্রুততম সময়ের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উল্লেখ্য, এতদিন ধরে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষক পদে ৬০ শতাংশ নারী কোটাসহ বিভিন্ন ধরনের কোটা ছিল। কিন্তু গত বছর সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরির নিয়োগে নতুন কোটা নির্ধারণ করে সরকার। নতুন এই নিয়মে সব গ্রেডে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ হবে ৯৩ শতাংশ। বাকি ৭ শতাংশ নিয়োগ হবে কোটার ভিত্তিতে। এখন সেই বিষয়টি প্রাথমিকর নিয়োগ বিধিতেও যুক্ত করা হচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘জাতীয় সংস্কারক’ স্বীকৃতি পাওয়ার কোনো আগ্রহ দেখাননি বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল মঙ্গলবার নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রেস সচিব তার পোস্টে লেখেন, সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে, হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চে দায়ের করা এক রিট আবেদনে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা না করার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। সরকার রুলের আদেশের অনুলিপি পাওয়ার পর যথাসময়ে এ বিষয়ে উত্তর দেবে। তিনি আরও লেখেন, সরকার এ বিষয়ে স্পষ্ট করতে চায়, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এমন কোনো স্বীকৃতি পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেননি এবং সরকারও তাকে এ ধরনের কোনো উপাধি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে না। মনে হচ্ছে, রিট আবেদনটি ব্যক্তিগত উদ্যোগে দায়ের করা হয়েছে এবং এতে নির্দেশনা চাওয়ার ভিত্তিও অস্পষ্ট। বিষয়টি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দপ্তর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, সোমবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা না করার কারণ জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। একইসঙ্গে জুলাই আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদ, মীর মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামসহ অন্যদের ‘জাতীয় বীর’ ঘোষণা না করার কারণও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে জনপ্রশাসন সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, তথ্য সচিব ও অর্থ সচিবকে রুলে বিবাদী করা হয়েছে। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।
এদিকে, জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সকলকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, জুলাই শহীদদের স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি বৈষম্যহীন, দুর্নীতি ও স্বৈরাচারমুক্ত নতুন রাষ্ট্র ব্যবস্থার। তাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই সুযোগকে কাজে লাগাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে নতুন বাংলাদেশের পথে দৃপ্ত পদভারে একযোগে সকলে এগিয়ে যাবো-আজকের দিনে এই হোক আমাদের অঙ্গীকার। শহীদ জুলাই দিবস উপলক্ষে গতকাল দেওয়া বাণীতে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। আজ ১৬ জুলাই প্রথমবারের মতো পালিত হবে ‘জুলাই শহিদ দিবস’। দিবসটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সুতরাং এদিন ছুটি থাকবে না। গত ২ জুলাই মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানিয়া আফরোজার সই করা এক পরিপত্রে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, প্রথমবারের মতো দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ‘জুলাই শহিদ দিবস’। এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল থেকে জাতিকে মুক্ত করার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদকে।