০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজউকে কমেনি দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য

  • ভূমি ব্যবহার, প্লট হস্তান্তরে ঘুষ বাণিজ্য চলছে আগের মতোই
  • নকশা কিংবা ভবন নির্মাণ অনুমোদনে গুণতে হচ্ছে বড় অঙ্কের ঘুষ
  • সংস্কারে যথাযথ উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের

ঘুষ, অনিয়ম আর টেবিল ঘোরার যন্ত্রণাই যেন চিরায়িত চিত্র রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। রাজউকের সেবা মানেই যেন ভোগান্তির অন্য নাম। বরাদ্দপত্র থেকে শুরু করে ভবনের নকশা অনুমোদন কিংবা ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র সবখানেই অনিয়ম। গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর অন্তর্র্বর্তী সরকারের সময় চিত্র বদলাবে এমনই প্রত্যাশা ছিল নগরবাসীর। তবে সংস্থাটির অনিয়মের চিত্র আগের মতোই রয়ে গেছে। এখনও দুর্নীতিবাজদের দখলে এই প্রতিষ্ঠানটি। কমেনি এসব দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য। রাজধানী ঢাকার বাসযোগ্যতা ফেরাতেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়নি রাজউক এমন অভিযোগ করছেন নগর সংশি¬ষ্টরা। তারা বলছেন, রাজউক সেবা সহজ করার জন্য আর দুর্নীতি কমানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখনো হচ্ছে না। বারবার বলার পরেও যথাযথ সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলেও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্নীতি নিয়ে তারা কঠোর অবস্থানে আছেন। এখন পর্যন্ত ৪৮ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরো উলে¬খযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এটা একটা বড় পদক্ষেপ। এটার সুফলও আসছে বলে দাবি তাদের। তবে পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত করতে সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, রাজউকে মূলত কয়েক ধরনের সেবা পেতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হন সেবাপ্রত্যাশীরা। সেবাগুলো হলো উত্তরাধিকার সূত্রে নামজারি, হস্তান্তর বা দান বণ্টন সূত্রে নামজারি, প¬ট হস্তান্তর/দানপত্র/হেবা দলিল/বণ্টন দলিল রেজিস্ট্রি অনুমতি, ফ্ল্যাট হস্তান্তর/দানপত্র বণ্টনের অনুমতি, প¬ট বা ফ্ল্যাটের আমমোক্তারনামা অনুমোদন ও অনুমতি বাতিল, উত্তরাধিকার সূত্রে সংশোধিত বরাদ্দপত্র, প¬টের কোনো মূল কাগজ/ডকুমেন্টস হারানো গেলে সত্যায়িত কপি সরবরাহ করা, ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্র, ইমারত নির্মাণ অনুমোদনপত্র, বসবাস ব্যবহার সনদ ইত্যাদি। বিশেষ করে বড় ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে। বিষয়টি নিয়ে তিনজন ভূমি মালিক ও একাধিক ডেভেলপারের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, বাড়ির নকশা অনুমোদন এমন প্রক্রিয়ায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া এ কাজ অসম্ভব। সেবাপ্রত্যাশীরা বাড়ি নির্মাণের সময় নকশা অনুমোদনের জন্য ঘুষের টাকা আলাদা রেখে তারপর কাজ শুরু করেন। বাড়ি ও প্রজেক্টভেদে প¬্যান পাস ৫ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এদিকে রাজউকের বড় দুর্নীতি হয় নকশা অনুমোদন সংক্রান্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে। এখানেই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সেবাপ্রত্যাশীরা। এসব দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধের জন্য ২০২২ সালে ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিএসপি) নামে অনলাইন সেবা চালু করেছিল রাজউক। বাড়ির নকশা অনুমোদনে ইচ্ছুক ব্যক্তি সাইটে জমির পরচা, খাজনার রসিদ, এনআইডি ইত্যাদি দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ড খুলে ছাড়পত্র নিতে হয়। এ বিষয়ে রাজউকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওয়েবসাইট শুধু নামেই। সব কাজ টেবিলে টেবিলেই হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূমির মালিক ছাড়পত্র পাওয়ার পর রাজউকের অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে বাড়ির যাবতীয় নকশা সাবমিট করতে হয়। নকশা অনলাইনে সাবমিট করলেই সেটা ভুল বলে রিজেক্ট করে দেয়। কিন্তু কেন রিজেক্ট করে দিয়েছে তা জানানো হয় না। এ ব্যাপারে জানার জন্য সরাসরি গিয়ে সংশি¬ষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করলে তখনই মানুষ ঘুষ দিতে বাধ্য হয়। রাজউক সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস ধরে অনলাইন সেবা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এর আগে রাজউকের ওয়েবসাইট হ্যাক করে ১৫ তলা ভবনের নকশা অনুমোদনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। রাজউকের সেবা অনলাইন করা হলেও ঘুষ-দুর্নীতি ও জনভোগান্তির জায়গায় কোনো পরিবর্তন আসেনি।
খাতসংশি¬ষ্টরা বলছেন, রাজউক চাইলে ঢাকার কোনো ভবনের নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটত না। ভবনের নকশা অনুমোদনের সময়ই সংশি¬ষ্ট জোনের কর্মকর্তারা ঘুষ খেয়ে বসে থাকেন। তারপর ভবন নির্মাণকালে ইন্সপেক্টররা ঘুষ খেয়ে চুপ থাকেন। যখন বিল্ডিং নির্মাণ শেষ হয়ে যায় তখন আবার টাকার বিনিময়ে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেয়া হয়। আবার ভবনে যখন আগুন লাগে কিংবা ধসে পড়ে তখন বলা হয়, ভবনের নকশার ব্যত্যয় হয়েছে। এদিকে বাসযোগ্য নগরী গড়ার কথা বলে ২০২৩ সালে নতুন ড্যাপ গেজেট করে রাজউক। সে ড্যাপ নিয়েও নগরবাসী পড়েছেন তীব্র ভোগান্তিতে। ড্যাপের কারণে একদিকে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিপুল পরিমাণ ঘুষ দিয়ে ব্যাক ডেটে ভবন অনুমোদন করানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের (ইউআরপি) অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ‘রাজউকের সেবা খুবই জটিল। এটা এতই কঠিন যে মানুষ রাজউকের নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে যায়। এখানে এক সেবার জন্য অসংখ্য জায়গায় অসংখ্য প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানুষকে হয়রানি করা হয় কিন্তু এর নিরসনে কঠোর কোনো ব্যবস্থা রাজউক নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. আলম মোস্তফা বলেন, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। আমি আসার পর এখন পর্যন্ত ৪৮ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরো উলে¬খযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এটা একটা বড় পদক্ষেপ। এটার সুফলও আমরা পাচ্ছি। তবে পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত করতে সময় লাগবে।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

রাজউকে কমেনি দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য

আপডেট সময় : ০৭:৫০:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫
  • ভূমি ব্যবহার, প্লট হস্তান্তরে ঘুষ বাণিজ্য চলছে আগের মতোই
  • নকশা কিংবা ভবন নির্মাণ অনুমোদনে গুণতে হচ্ছে বড় অঙ্কের ঘুষ
  • সংস্কারে যথাযথ উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের

ঘুষ, অনিয়ম আর টেবিল ঘোরার যন্ত্রণাই যেন চিরায়িত চিত্র রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)। রাজউকের সেবা মানেই যেন ভোগান্তির অন্য নাম। বরাদ্দপত্র থেকে শুরু করে ভবনের নকশা অনুমোদন কিংবা ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র সবখানেই অনিয়ম। গত বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের পর অন্তর্র্বর্তী সরকারের সময় চিত্র বদলাবে এমনই প্রত্যাশা ছিল নগরবাসীর। তবে সংস্থাটির অনিয়মের চিত্র আগের মতোই রয়ে গেছে। এখনও দুর্নীতিবাজদের দখলে এই প্রতিষ্ঠানটি। কমেনি এসব দুর্নীতিবাজদের দৌরাত্ম্য। রাজধানী ঢাকার বাসযোগ্যতা ফেরাতেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেয়নি রাজউক এমন অভিযোগ করছেন নগর সংশি¬ষ্টরা। তারা বলছেন, রাজউক সেবা সহজ করার জন্য আর দুর্নীতি কমানোর জন্য নানা উদ্যোগ নেওয়ার কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। এখনো হচ্ছে না। বারবার বলার পরেও যথাযথ সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না বলেও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে রাজউকের শীর্ষ কর্মকর্তারা বলছেন, দুর্নীতি নিয়ে তারা কঠোর অবস্থানে আছেন। এখন পর্যন্ত ৪৮ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরো উলে¬খযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এটা একটা বড় পদক্ষেপ। এটার সুফলও আসছে বলে দাবি তাদের। তবে পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত করতে সময় লাগবে বলেও জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, রাজউকে মূলত কয়েক ধরনের সেবা পেতে গিয়ে ভোগান্তির শিকার হন সেবাপ্রত্যাশীরা। সেবাগুলো হলো উত্তরাধিকার সূত্রে নামজারি, হস্তান্তর বা দান বণ্টন সূত্রে নামজারি, প¬ট হস্তান্তর/দানপত্র/হেবা দলিল/বণ্টন দলিল রেজিস্ট্রি অনুমতি, ফ্ল্যাট হস্তান্তর/দানপত্র বণ্টনের অনুমতি, প¬ট বা ফ্ল্যাটের আমমোক্তারনামা অনুমোদন ও অনুমতি বাতিল, উত্তরাধিকার সূত্রে সংশোধিত বরাদ্দপত্র, প¬টের কোনো মূল কাগজ/ডকুমেন্টস হারানো গেলে সত্যায়িত কপি সরবরাহ করা, ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র, ইমারত নির্মাণের নকশা অনুমোদনের ছাড়পত্র, ইমারত নির্মাণ অনুমোদনপত্র, বসবাস ব্যবহার সনদ ইত্যাদি। বিশেষ করে বড় ধরনের ভোগান্তি পোহাতে হয় ভূমি ব্যবহার ছাড়পত্র ও নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে। বিষয়টি নিয়ে তিনজন ভূমি মালিক ও একাধিক ডেভেলপারের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, বাড়ির নকশা অনুমোদন এমন প্রক্রিয়ায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া এ কাজ অসম্ভব। সেবাপ্রত্যাশীরা বাড়ি নির্মাণের সময় নকশা অনুমোদনের জন্য ঘুষের টাকা আলাদা রেখে তারপর কাজ শুরু করেন। বাড়ি ও প্রজেক্টভেদে প¬্যান পাস ৫ লাখ থেকে কোটি টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
এদিকে রাজউকের বড় দুর্নীতি হয় নকশা অনুমোদন সংক্রান্ত কাজগুলোর ক্ষেত্রে। এখানেই সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন সেবাপ্রত্যাশীরা। এসব দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধের জন্য ২০২২ সালে ইলেকট্রনিক কনস্ট্রাকশন পারমিটিং সিস্টেম (ইসিএসপি) নামে অনলাইন সেবা চালু করেছিল রাজউক। বাড়ির নকশা অনুমোদনে ইচ্ছুক ব্যক্তি সাইটে জমির পরচা, খাজনার রসিদ, এনআইডি ইত্যাদি দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ড খুলে ছাড়পত্র নিতে হয়। এ বিষয়ে রাজউকের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ওয়েবসাইট শুধু নামেই। সব কাজ টেবিলে টেবিলেই হয়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভূমির মালিক ছাড়পত্র পাওয়ার পর রাজউকের অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারের মাধ্যমে বাড়ির যাবতীয় নকশা সাবমিট করতে হয়। নকশা অনলাইনে সাবমিট করলেই সেটা ভুল বলে রিজেক্ট করে দেয়। কিন্তু কেন রিজেক্ট করে দিয়েছে তা জানানো হয় না। এ ব্যাপারে জানার জন্য সরাসরি গিয়ে সংশি¬ষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করলে তখনই মানুষ ঘুষ দিতে বাধ্য হয়। রাজউক সূত্রে জানা গেছে, দুই মাস ধরে অনলাইন সেবা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এর আগে রাজউকের ওয়েবসাইট হ্যাক করে ১৫ তলা ভবনের নকশা অনুমোদনের মতো ঘটনাও ঘটেছে। রাজউকের সেবা অনলাইন করা হলেও ঘুষ-দুর্নীতি ও জনভোগান্তির জায়গায় কোনো পরিবর্তন আসেনি।
খাতসংশি¬ষ্টরা বলছেন, রাজউক চাইলে ঢাকার কোনো ভবনের নিয়ম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটত না। ভবনের নকশা অনুমোদনের সময়ই সংশি¬ষ্ট জোনের কর্মকর্তারা ঘুষ খেয়ে বসে থাকেন। তারপর ভবন নির্মাণকালে ইন্সপেক্টররা ঘুষ খেয়ে চুপ থাকেন। যখন বিল্ডিং নির্মাণ শেষ হয়ে যায় তখন আবার টাকার বিনিময়ে অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেয়া হয়। আবার ভবনে যখন আগুন লাগে কিংবা ধসে পড়ে তখন বলা হয়, ভবনের নকশার ব্যত্যয় হয়েছে। এদিকে বাসযোগ্য নগরী গড়ার কথা বলে ২০২৩ সালে নতুন ড্যাপ গেজেট করে রাজউক। সে ড্যাপ নিয়েও নগরবাসী পড়েছেন তীব্র ভোগান্তিতে। ড্যাপের কারণে একদিকে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, বিপুল পরিমাণ ঘুষ দিয়ে ব্যাক ডেটে ভবন অনুমোদন করানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের (ইউআরপি) অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ বলেন, ‘রাজউকের সেবা খুবই জটিল। এটা এতই কঠিন যে মানুষ রাজউকের নাম শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে যায়। এখানে এক সেবার জন্য অসংখ্য জায়গায় অসংখ্য প্রয়োজনীয়-অপ্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হয়। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মানুষকে হয়রানি করা হয় কিন্তু এর নিরসনে কঠোর কোনো ব্যবস্থা রাজউক নেয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, রাজউকের সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) ড. মো. আলম মোস্তফা বলেন, দুর্নীতি নিয়ে আমরা কঠোর অবস্থানে আছি। আমি আসার পর এখন পর্যন্ত ৪৮ কর্মকর্তাকে দুর্নীতির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। আরো উলে¬খযোগ্যসংখ্যক কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। এটা একটা বড় পদক্ষেপ। এটার সুফলও আমরা পাচ্ছি। তবে পুরোপুরি দুর্নীতিমুক্ত করতে সময় লাগবে।