চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নতুন কলা অনুষদ ভবন উদ্বোধনের প্রায় দেড় বছর পেরিয়ে গেলেও শিক্ষার্থীদের জন্য নির্ধারিত ক্যাফেটেরিয়া এখনো চালু হয়নি। আধুনিক স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত পাঁচতলা বিশিষ্ট এই ভবনটি উদ্বোধন হয় ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। অথচ ভবনের অন্যান্য সুবিধা কার্যকর হলেও শিক্ষার্থীদের বিশ্রাম ও খাদ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকা ক্যাফেটেরিয়া এখনও কেবল আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
এর ফলে প্রতিদিন ক্লাস, সেমিনার ও পড়াশোনায় ক্লান্ত শিক্ষার্থীরা নিরুপায় হয়ে শিক্ষক লাউঞ্জে ঢুকে পড়ছেন। এতে একদিকে শিক্ষার্থীদের যেমন বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে, অন্যদিকে শিক্ষক মহলেও সৃষ্টি হয়েছে অস্বস্তি।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থী বাঁধন মিয়া বলেন, “নতুন ভবনে আধুনিকতার ছোঁয়া পেলেও আমাদের ন্যূনতম চাহিদা মেটানোর সুযোগ নেই। বাধ্য হয়ে শিক্ষক লাউঞ্জে যেতে হয়, তাতে শিক্ষকদের সামনে বিব্রত হতে হয়।”
একই অনুষদের ইতিহাস বিভাগের এক শিক্ষার্থী জানান, “ক্লাসের ফাঁকে বিশ্রাম নিতে কোথাও জায়গা নেই। কাছাকাছি কোনো চায়ের দোকানও নেই। লাউঞ্জে গেলে শিক্ষকরাও অস্বস্তি বোধ করেন, আমরাও। প্রশাসন যেন দ্রুত ক্যাফেটেরিয়া চালু করে।”
শিক্ষকদের মধ্যেও এ নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক মিলন বলেন, “শিক্ষক লাউঞ্জ মূলত শিক্ষকদের ব্যক্তিগত সময় কাটানোর স্থান। সেখানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি পেশাদার পরিবেশ বিঘ্নিত করে। তাই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা ক্যাফেটেরিয়া অপরিহার্য।”
একজন শিক্ষক মন্তব্য করেন, “ক্যাফেটেরিয়া না থাকায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে লাউঞ্জে আসে, যা কারও জন্যই স্বস্তিদায়ক নয়। এটি একটি বড় অব্যবস্থাপনা।”
এ বিষয়ে কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল শাহীন খান বলেন, “ক্যাফেটেরিয়ার কিছু নির্মাণকাজ এখনও বাকি। ডিন অফিস থেকে ফার্নিচারের জন্য ৩ লাখ ২৬ হাজার ৪০০ টাকা ব্যয় করা হয়েছে, প্রশাসন থেকেও ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং অফিসকে অনুরোধ করা হয়েছে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে এবং ইতিমধ্যে ইজারাদারের কাছেও হস্তান্তর করা হয়েছে। কাজ শেষ হলে দ্রুত ক্যাফেটেরিয়া চালু করা হবে।”
শিক্ষার্থীরা বলছেন, শুধু একটি চায়ের কাপ আর একটু বসার জায়গার জন্য দেড় বছর অপেক্ষা যেন অধরা স্বস্তির গল্প হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমআর/সবা


























