ভুয়া পাসপোর্ট, জাল ভিসা— এতদিন এমন নানা বিষয় শোনা যেত। কিন্তু এবার প্রকাশ্যে এলো ভুয়া দূতাবাস! ভারতের গাজিয়াবাদে এতদিন এমনই এক দূতাবাসের অস্তিত্ব ছিল বলে দাবি উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) নয়ডা ইউনিটের।

ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন মতে, ‘ওয়েস্টার্কটিকা’ নামে আন্টার্কটিকা মহাদেশের এক ক্ষুদ্র দেশের ভুয়া দূতাবাস চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন হর্ষ বর্ধন নামে এক ব্যক্তি। উল্লেখ্য, কোনো প্রতিষ্ঠিত দেশ ওয়েস্টার্কটিকাকে স্বীকৃতি দেয়নি। তবে তার মতোই অন্য ক্ষুদ্র দেশগুলোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখে ওয়েস্টার্কটিকা।

পুলিশ সূত্রের খবর, গাজিয়াবাদের কবিনগর এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে দূতাবাস তৈরি করেছিলেন হর্ষ। ওই বাড়ির বাইরে সব সময় পার্ক করা থাকত একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি। সেই সব গাড়ির নম্বরপ্লেটও কূটনীতিকের গাড়ির মতোই। হর্ষ সর্বদা নিজেকে একজন কূটনীতিক হিসেবে পরিচয় দিতেন। ওয়েস্টার্কটিকা ছাড়াও সাবোরগা, পুলভিয়া, লোডোনিয়ার মতো ছোট ছোট দেশের ‘রাষ্ট্রদূত’ বলে নিজেকে জাহির করতেন।

শুধু তা-ই নয়, ওই সব দেশের ভুয়া পাসপোর্ট, পরিচয়পত্র এবং জাল সরকারি নথি ব্যবহার করতেন তিনি।

এসটিএফ ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বুধবার (২৩ জুলাই) কূটনৈতিক নম্বরপ্লেটযুক্ত চারটি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করেছে। এছাড়াও, ১২টি কূটনৈতিক পাসপোর্টও ওই বাড়ি থেকে খুঁজে পেয়েছেন এসটিএফের সদস্যরা। পাওয়া গেছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্ট্যাম্পসহ জাল নথি। দু’টি জাল প্যান কার্ড, বিভিন্ন দেশ এবং কোম্পানির ৩৪টি রবার স্ট্যাম্পও জব্দ করেছে পুলিশ।

এখানেই শেষ নয়, তল্লাশি অভিযানের সময় পুলিশ ওই বাড়ি থেকে দু’টি জাল প্রেস আইডি কার্ড, নগদ সাড়ে ৪৪ লাখ রুপি এবং বেশ কয়েকটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাও পেয়েছে। তদন্তকারীদের অনুমান, কোনো আর্থিক জালিয়াতি বা আন্তর্জাতিক চক্রের সঙ্গে জড়িত হর্ষ।

মার্কিন নৌবাহিনীর এক সাবেক কর্মকর্তা ট্র্যাভিস ম্যাকহেনরি ২০০১ সালে ওয়েস্টার্কটিকা প্রতিষ্ঠা করেন এবং নিজেকে তার ‘গ্র্যান্ড ডিউক’ হিসেবে দাবি করেন। ওয়েস্টার্কটিকার আয়তন ৬ লাখ ২০ হাজার বর্গমাইল। ওয়েস্টার্কটিকা দাবি করে, তাদের ২,৩৫৬ জন নাগরিক রয়েছেন। তবে তাদের কেউই ওয়েস্টার্কটিকায় থাকেন না। ওয়েস্টার্কটিকার নিজস্ব পতাকা এবং মুদ্রাও রয়েছে। তবে তাদের কোনো প্রতিষ্ঠিত দেশ স্বীকৃতি দেয়নি।

এমআর/সবা