প্রায় চার দশক পর আবারও নিজস্ব জমিতে শ্যামাপূজার আয়োজন— এই একটিমাত্র বাক্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে কেশবপুরের সরাপপুর দক্ষিণপাড়া সর্বজনীন কালিমন্দিরকে ঘিরে এলাকার মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষা, কষ্ট, লড়াই ও অবশেষে প্রাপ্তির আবেগ। ৩৯ বছরের বিরতির পর আজ সেই জমিতেই শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি আর প্রদীপশিখায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো পাড়া। যেন বিজয়ের মতো এক উপলক্ষ্য, যেন ফিরে পাওয়ার আনন্দে উচ্ছ্বাসে ভাসছে মানুষ।
স্থানীয়রা জানান, চার দশক ধরে মন্দিরের রেকর্ডকৃত জমিতে পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছিল না নানা বিরোধ ও জটিলতার কারণে। এক প্রজন্ম কেটে গেছে সেই অপেক্ষায়। অনেকেই হয়তো ভেবেছিলেন আর কোনোদিন হয়তো স্বপ্নটা পূরণ হবে না। কিন্তু এবার সব বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে, ঐক্য ও সদিচ্ছার শক্তিতে সম্ভব হয়েছে বহু কাঙ্ক্ষিত শ্যামাপূজা।
এ সফলতার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন চিংড়া বাজার পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই শামীম হোসাইন। তার তত্ত্বাবধান ও মধ্যস্থতায়, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও এলাকাবাসীর ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বিরোধ মিটে যায় এবং অবশেষে রেকর্ডকৃত জমিতে শান্তিপূর্ণভাবে পূজার আয়োজন নিশ্চিত হয়।
এ বিষয়ে এসআই শামীম হোসাইন বলেন, “শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রেখে ধর্মীয় উৎসব নির্ভয়ে উদযাপন নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।”
উৎসবের এই আবেগের ছোঁয়া ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে পুরো এলাকায়। পূজা উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু— সবাই যেন প্রত্যক্ষ করছে ইতিহাসের এক প্রত্যাবর্তন।
কারও কারও চোখে জল, কারও কণ্ঠে উচ্ছ্বাস— কিন্তু সবার মনেই এক অনুভূতি:
“দীর্ঘ অপেক্ষার শেষ, অবশেষে আমরা ফিরে পেলাম আমাদের জমি, আমাদের পূজা, আমাদের ঐতিহ্য।”
এমআর/সবা





















