রবিবার সকালে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বালিঘাটা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৃশ্য ছিল অচেনা—নেই সমবেত প্রার্থনা, নেই শিশুর কোলাহল। চারদিকে শুধু থমথমে নীরবতা আর অভিভাবক-শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ। প্রধান শিক্ষক শামীমা সুলতানার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের দিয়ে শ্রেণিকক্ষ ও টয়লেট পরিষ্কার করানো হয়, প্রায়ই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন তিনি। সহকারী তিন শিক্ষকও নানা অসদাচরণের শিকার হয়েছেন অভিযোগ করে জানান। অভিভাবকরাও বলেন, প্রধান শিক্ষক নিয়মিত স্কুলে আসেন না এবং দায়িত্বশীল আচরণও দেখান না।
অভিযোগের তদন্তে দল ঘটনাস্থলে পৌঁছালে সকাল ১১টার দিকে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। এ সময় প্রধান শিক্ষকের পক্ষে থাকা কয়েকজন নারীর সঙ্গে অভিভাবকদের চুল ছেঁড়াছেঁড়ির ঘটনাও ঘটে। উত্তেজনার মধ্যেই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দ্রুত সরে যান। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয়ের গেট তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। মাঠে বসে থাকা সহকারী শিক্ষক ও কয়েকজন শিক্ষার্থীর চোখেমুখে ছিল আতঙ্ক, হতাশা আর অজানা প্রশ্নের ছায়া। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট্ট শিক্ষার্থীরা কাঁদতে কাঁদতে বারবার বলছিল— “স্যার, আজ কি ক্লাস হবে না?”
তালা ঝুলে থাকা গেট যেন বলে দিচ্ছে, কোথাও হয়তো শিক্ষা ব্যবস্থারই দরজায় তালা পড়ে গেছে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা রীতা রানী মজুমদার বলেন, খবর পেয়েই প্রধান শিক্ষককে নিরাপদে সরে যেতে বলা হয়েছে, যেন উত্তেজনা না বাড়ে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, এর আগেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের তদন্ত হয়েছিল। আজকের ঘটনার বিষয়েও বিস্তারিত খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
এমআর/সবা




















