১১:৩২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চসিকে ২৬ কোটি টাকার কর ঘষামাজায় হয়ে গেল ৬ কোটি

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) হোল্ডিং ট্যাক্স (গৃহকর ও অন্যান্য রেইট) নির্ধারণে একটি প্রতিষ্ঠানের ২০ কোটি টাকার রাজস্ব জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে চসিকের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

জানা গেছে, চসিকের ৮নং রাজস্ব সার্কেলের আওতাধীন দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর এলাকার ইছহাক ব্রাদার্স জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, চসিকের কর কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম এবং উপ-কর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেন সরাসরি জড়িত ছিলেন।

২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ইছহাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বার্ষিক মূল্যায়ন ছিল ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু ফিল্ডবুকে ঘষামাজা ও সাদা ফ্লুইড ব্যবহার করে তা ২০ কোটি টাকা কমিয়ে দেখানো হয়, ফলে নতুন হিসাব দাঁড়ায় ৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। সব নথি যাচাই করে তদন্ত কমিটি দেখতে পায়, ফিল্ডবুকের বিকৃত তথ্য রিভিউ বোর্ডে উপস্থাপন করা হয় এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতে কর নির্ধারণ করা হয়।

এ ঘটনায় চসিক বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় এবং সংশ্লিষ্টরা অনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইছহাক ব্রাদার্সের মতো একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়নে এমন জালিয়াতি হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিরব ছিলেন। হোল্ডিং মালিকপক্ষও এ অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ও সুবিধাভোগী।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম এবং উপ-কর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেন বিকৃত ফিল্ডবুকের তথ্য যাচাই ছাড়াই আপিল বোর্ডে উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া হিসাব সহকারী আহসান উল্লাহ স্বীকার করেছেন যে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে ফিল্ডবুক না দেখেই আপিল ফরমে স্বাক্ষর করেছেন।

তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে, পূর্বের ভুল তথ্য বাতিল করে প্রকৃত মূল্যায়নের (২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা) ভিত্তিতে নতুন শুনানি করা প্রয়োজন।

চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, এ ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় গুড়িয়ে দেয়া হয় দু’টি প্রতিষ্ঠান, একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

চসিকে ২৬ কোটি টাকার কর ঘষামাজায় হয়ে গেল ৬ কোটি

আপডেট সময় : ০৭:৩৯:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) হোল্ডিং ট্যাক্স (গৃহকর ও অন্যান্য রেইট) নির্ধারণে একটি প্রতিষ্ঠানের ২০ কোটি টাকার রাজস্ব জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে চসিকের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি। সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তদন্ত কমিটি চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

জানা গেছে, চসিকের ৮নং রাজস্ব সার্কেলের আওতাধীন দক্ষিণ-মধ্যম হালিশহর এলাকার ইছহাক ব্রাদার্স জালিয়াতির মাধ্যমে ২০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে। তদন্তে দেখা গেছে, চসিকের কর কর্মকর্তা মো. নুরুল আলম এবং উপ-কর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেন সরাসরি জড়িত ছিলেন।

২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ইছহাক ব্রাদার্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বার্ষিক মূল্যায়ন ছিল ২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। কিন্তু ফিল্ডবুকে ঘষামাজা ও সাদা ফ্লুইড ব্যবহার করে তা ২০ কোটি টাকা কমিয়ে দেখানো হয়, ফলে নতুন হিসাব দাঁড়ায় ৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা। সব নথি যাচাই করে তদন্ত কমিটি দেখতে পায়, ফিল্ডবুকের বিকৃত তথ্য রিভিউ বোর্ডে উপস্থাপন করা হয় এবং সেই তথ্যের ভিত্তিতে কর নির্ধারণ করা হয়।

এ ঘটনায় চসিক বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয় এবং সংশ্লিষ্টরা অনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ইছহাক ব্রাদার্সের মতো একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানের মূল্যায়নে এমন জালিয়াতি হওয়ার পরও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা নিরব ছিলেন। হোল্ডিং মালিকপক্ষও এ অপরাধে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ও সুবিধাভোগী।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, কর কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরুল আলম এবং উপ-কর কর্মকর্তা জয় প্রকাশ সেন বিকৃত ফিল্ডবুকের তথ্য যাচাই ছাড়াই আপিল বোর্ডে উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া হিসাব সহকারী আহসান উল্লাহ স্বীকার করেছেন যে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপে ফিল্ডবুক না দেখেই আপিল ফরমে স্বাক্ষর করেছেন।

তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে, পূর্বের ভুল তথ্য বাতিল করে প্রকৃত মূল্যায়নের (২৬ কোটি ৩৮ লাখ ১৯ হাজার ২৫০ টাকা) ভিত্তিতে নতুন শুনানি করা প্রয়োজন।

চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, এ ঘটনার সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

এমআর/সবা