০৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নান্দাইলে এলজিইডির শফিকুল—ঘুষ বাণিজ্যের সম্রাট! বছরের পর বছর দুর্নীতির রাজত্ব

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা এলজিইডি অফিস যেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত টোল প্লাজা। এখানে কোনো কাজ পেতে হলে বা বিল তুলতে হলে ‘ট্যাক্স’ নামে ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না—এমন অভিযোগ নতুন নয়, দীর্ঘদিনের চলমান চিত্র।

উপজেলায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করতে করতে শফিকুল নির্মাণ করেছেন দুর্নীতির এক অঘোষিত সাম্রাজ্য। ঠিকাদারদের অভিযোগ—শফিকুলের সামনে ফাইল মানেই টাকা; টাকা ছাড়া তার টেবিলে ফাইল উঠানোর সাহস কারোই নেই। গ্রামীণ সড়কের পিচ ঢালাইসহ বিভিন্ন কাজে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারদের জিম্মি করে রেখেছেন। কাজ শেষে বিলের প্রয়োজনীয়তা তিনি অস্ত্রে পরিণত করে প্রকাশ্যেই ঘুষ আদায় করেন।

সম্প্রতি তার ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর নান্দাইলজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়—শফিকুল ফাইলের ভেতরে লুকানো টাকার বান্ডিল বের করে কোনো কথা না বলেই ড্রয়ারে রেখে দিচ্ছেন। কাজের মান বা নথিপত্রের গুরুত্ব সেখানে তুচ্ছ; টাকাই তার কাছে ‘ফাইনাল পারমিশন’।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এলজিইডির সার্বিক কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ—এ ধরনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা প্রশাসনের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বছরের পর বছর তার দৌরাত্ম্য থামাতে প্রশাসনের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা।

ভিডিও নিয়ে জানতে চাইলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, “ভিডিওটি দেখেছি। তবে শফিকুর রহমান দাবি করেছে, এটি তিন বছর আগের ভিডিও।” তিন বছর আগে হলেও ঘুষ নেওয়া অপরাধ কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

ময়মনসিংহ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সামলান রহমান রাসেল বলেন, “অভিযোগ এবং টাকা নেওয়ার ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

নান্দাইলে এলজিইডির শফিকুল—ঘুষ বাণিজ্যের সম্রাট! বছরের পর বছর দুর্নীতির রাজত্ব

আপডেট সময় : ০৪:৫৭:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলা এলজিইডি অফিস যেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলামের ব্যক্তিগত টোল প্লাজা। এখানে কোনো কাজ পেতে হলে বা বিল তুলতে হলে ‘ট্যাক্স’ নামে ঘুষ না দিলে ফাইল নড়ে না—এমন অভিযোগ নতুন নয়, দীর্ঘদিনের চলমান চিত্র।

উপজেলায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করতে করতে শফিকুল নির্মাণ করেছেন দুর্নীতির এক অঘোষিত সাম্রাজ্য। ঠিকাদারদের অভিযোগ—শফিকুলের সামনে ফাইল মানেই টাকা; টাকা ছাড়া তার টেবিলে ফাইল উঠানোর সাহস কারোই নেই। গ্রামীণ সড়কের পিচ ঢালাইসহ বিভিন্ন কাজে তিনি দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারদের জিম্মি করে রেখেছেন। কাজ শেষে বিলের প্রয়োজনীয়তা তিনি অস্ত্রে পরিণত করে প্রকাশ্যেই ঘুষ আদায় করেন।

সম্প্রতি তার ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর নান্দাইলজুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়—শফিকুল ফাইলের ভেতরে লুকানো টাকার বান্ডিল বের করে কোনো কথা না বলেই ড্রয়ারে রেখে দিচ্ছেন। কাজের মান বা নথিপত্রের গুরুত্ব সেখানে তুচ্ছ; টাকাই তার কাছে ‘ফাইনাল পারমিশন’।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর এলজিইডির সার্বিক কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ—এ ধরনের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা প্রশাসনের ভাবমূর্তিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। বছরের পর বছর তার দৌরাত্ম্য থামাতে প্রশাসনের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন তারা।

ভিডিও নিয়ে জানতে চাইলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী শফিকুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আব্দুল মালেক বিশ্বাস জানান, “ভিডিওটি দেখেছি। তবে শফিকুর রহমান দাবি করেছে, এটি তিন বছর আগের ভিডিও।” তিন বছর আগে হলেও ঘুষ নেওয়া অপরাধ কি না—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”

ময়মনসিংহ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী সামলান রহমান রাসেল বলেন, “অভিযোগ এবং টাকা নেওয়ার ভিডিও আমাদের নজরে এসেছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত ও ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

এমআর/সবা