১১:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুর সিটি কর্পোরেশনে জরুরি সেবায় স্থবিরতা

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের তিন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় জরুরি পরিসেবা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জোড়াতালির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে জরুরি সেবা কার্যক্রম। লিখিতভাবে জানানো সত্ত্বেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর ফলে নভেম্বর মাসের বেতন নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) যোগদান না করলে দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন প্রদান সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রশাসন বিভাগ। অক্টোবর মাসের বেতনও বিশেষ অনুমতিতে এক কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিয়ে ১০ নভেম্বর দেওয়া হয়েছিল।

সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসক ও সিইও’র যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া কোনও চেক ইস্যু করা যায় না। কিন্তু ১৩ অক্টোবর সিইও উম্মে ফাতেমা বদলি হয়ে অন্যত্র যোগদান করেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে সচিব জয়শ্রী রাণী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদলি হন। ফলে গত দুই মাস ধরে এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

কর্মকর্তারা জানান, সিইও ও প্রশাসকের যৌথ স্বাক্ষর না থাকায় আর্থিক লেনদেনসহ কোনও গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না। এতে নগরবাসী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্ল্যান পাস, অনুমোদনসহ বিভিন্ন জনসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। উন্নয়নমূলক কাজও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ঠিকাদাররা কাজের বিল না পাওয়ায় অভিযোগ করছেন।

খামার এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, “মাস্টার প্ল্যানের ফি জমা দিয়েছি দুই মাস আগে। কিন্তু এখনো কোনও কাজ হয়নি।” একই অভিজ্ঞতার কথা জানান কেরানীপাড়ার মমতাজ বেগমসহ অনেকে।

প্রকৌশল বিভাগ জানায়, নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও ড্রেন জরুরিভাবে সংস্কারের প্রয়োজন হলেও অর্থের অভাবে কাজ হচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, “যান্ত্রিক, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্য শাখার কাজ পুরোপুরি স্থবির। ধারদেনা করে জরুরি কাজ চালাতে হচ্ছে।”

হিসাব শাখা জানায়, সিটি কর্পোরেশনে ৮০০–এর বেশি পরিচ্ছন্নতা কর্মী দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেন। তাদের মাসিক বেতন প্রায় ৪৫ লাখ টাকা। একইভাবে আরও প্রায় ৮০০ কর্মচারী দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করেন। অক্টোবর মাসের বেতন দেওয়া গেলেও নভেম্বর মাসের বেতন অনিশ্চিত।

সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম বলেন, “তিন কর্মকর্তা বদলি হয়ে যাওয়ায় নানা সমস্যা হচ্ছে। জরুরি সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।”

শু/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুর সিটি কর্পোরেশনে জরুরি সেবায় স্থবিরতা

আপডেট সময় : ০৫:৩১:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৫

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের তিন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার পদ শূন্য থাকায় জরুরি পরিসেবা থেকে শুরু করে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জোড়াতালির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে জরুরি সেবা কার্যক্রম। লিখিতভাবে জানানো সত্ত্বেও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এর ফলে নভেম্বর মাসের বেতন নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) যোগদান না করলে দুই হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন প্রদান সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রশাসন বিভাগ। অক্টোবর মাসের বেতনও বিশেষ অনুমতিতে এক কর্মকর্তার স্বাক্ষর নিয়ে ১০ নভেম্বর দেওয়া হয়েছিল।

সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসক ও সিইও’র যৌথ স্বাক্ষর ছাড়া কোনও চেক ইস্যু করা যায় না। কিন্তু ১৩ অক্টোবর সিইও উম্মে ফাতেমা বদলি হয়ে অন্যত্র যোগদান করেন। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে সচিব জয়শ্রী রাণী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বদলি হন। ফলে গত দুই মাস ধরে এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য রয়েছে। এখন পর্যন্ত এসব পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

কর্মকর্তারা জানান, সিইও ও প্রশাসকের যৌথ স্বাক্ষর না থাকায় আর্থিক লেনদেনসহ কোনও গুরুত্বপূর্ণ ফাইলে অনুমোদন দেওয়া যাচ্ছে না। এতে নগরবাসী চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। বিশেষ করে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্ল্যান পাস, অনুমোদনসহ বিভিন্ন জনসেবা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। উন্নয়নমূলক কাজও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ঠিকাদাররা কাজের বিল না পাওয়ায় অভিযোগ করছেন।

খামার এলাকার বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, “মাস্টার প্ল্যানের ফি জমা দিয়েছি দুই মাস আগে। কিন্তু এখনো কোনও কাজ হয়নি।” একই অভিজ্ঞতার কথা জানান কেরানীপাড়ার মমতাজ বেগমসহ অনেকে।

প্রকৌশল বিভাগ জানায়, নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও ড্রেন জরুরিভাবে সংস্কারের প্রয়োজন হলেও অর্থের অভাবে কাজ হচ্ছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, “যান্ত্রিক, প্রকৌশল ও স্বাস্থ্য শাখার কাজ পুরোপুরি স্থবির। ধারদেনা করে জরুরি কাজ চালাতে হচ্ছে।”

হিসাব শাখা জানায়, সিটি কর্পোরেশনে ৮০০–এর বেশি পরিচ্ছন্নতা কর্মী দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কাজ করেন। তাদের মাসিক বেতন প্রায় ৪৫ লাখ টাকা। একইভাবে আরও প্রায় ৮০০ কর্মচারী দৈনিক হাজিরা ভিত্তিতে কাজ করেন। অক্টোবর মাসের বেতন দেওয়া গেলেও নভেম্বর মাসের বেতন অনিশ্চিত।

সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আশরাফুল ইসলাম বলেন, “তিন কর্মকর্তা বদলি হয়ে যাওয়ায় নানা সমস্যা হচ্ছে। জরুরি সেবা দিতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। তবে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।”

শু/সবা