ইলিশের ভরা মৌসুমে কক্সবাজার উপকূলে চলছে ইলিশের ছড়াছড়ি। জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে উঠছে রুপালি ইলিশ। মাছবোঝাই ট্রলার আসায় ফিশারীঘাট এখন উৎসবের আমেজে ভরা। তবে প্রাচুর্য থাকলেও ইলিশ ছোট হওয়ায় দামের ব্যাপারে কিছুটা হতাশ জেলেরা।
ফিশারীঘাটে এফবি ফাতেমা ট্রলারের মাঝি সামছুল আলম জানান, “ইলিশ উঠছে ঠিকই, তবে বেশিরভাগই ছোট সাইজ। বড় গুলো বেছে ১ হাজার ইলিশ বিক্রি করেছি প্রায় ৮ লাখ টাকায়।”
মাঝি সালামত উল্লাহ বলেন, “মাছের পরিমাণ ভালো, কিন্তু সাইজ ছোট হওয়ায় ভালো দর পাওয়া যাচ্ছে না।” একই চিত্র এফবি আল্লাহরদান ট্রলারের ক্ষেত্রেও—২ হাজার ইলিশ বিক্রি হয়েছে আনুমানিক ১৫ লাখ টাকায়।

২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ২৫ অক্টোবর থেকে জেলেরা সাগরে নামার প্রস্তুতি নিলেও নিম্নচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে কয়েক দিন মাছধরা বন্ধ ছিল। পরে ৩০ অক্টোবর থেকে পুনরায় গভীর সাগরে নামলে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করে। আজ আরও বেশি সংখ্যায় ট্রলার ঘাটে ফিরবে বলে আশা জেলেদের।
ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, “গভীর সাগরে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু আকার ছোট। বড় হলে বাজারে দামে বেশি পাওয়া যেত। এখন তেমন লাভ হচ্ছে না।”
ফিশারীঘাটে বর্তমানে ৩০০-৪৫০ গ্রামের ইলিশ কেজিপ্রতি ৬৫০ টাকা, ৪৫০-৬০০ গ্রাম ৭৫০ টাকা, ৮০০-৯০০ গ্রাম ৯০০-৯৫০ টাকা এবং ৯০০-১,০০০ গ্রামের ইলিশ ১,২০০-১,৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শহরের অন্যান্য বাজারে দাম আরও ১০০-২০০ টাকা বেশি।
ঘাট থেকেই ইলিশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী ঐক্য সমবায় সমিতির উপদেষ্টা মো. জয়নাল আবেদীন জানান, গতকাল দুপুর পর্যন্ত প্রায় ১৪ টন ইলিশ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হুদা বলেন, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সামুদ্রিক মাছের প্রজনন বেড়েছে। তবে ইলিশ এখনো পুরোপুরি পরিপুষ্ট না হওয়ায় আকার ছোট। গত বছর কক্সবাজারে ৪০ হাজার ৪৪৮ টন ইলিশ আহরণ হয়েছিল; এবার লক্ষ্য ৪২ হাজার টন।
ইলিশের মৌসুমে কক্সবাজার উপকূল এখন প্রাণচাঞ্চল্যে ভরা। আকার ছোট হলেও প্রাচুর্য আশাব্যঞ্জক—আর মৌসুমের শেষ দিকে ইলিশ মোটা হলে বাজারে দামও বাড়বে বলে আশা জেলে ও ব্যবসায়ীদের।
এমআর/সবা




















