বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে হিন্দু নির্যাতনের ঘটনায় বিরোধীদের নীরবতা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। তিনি বিরোধীদের বিরুদ্ধে ‘বেছে বেছে ক্ষোভ’ দেখানোর অভিযোগ তুলে এ বিষয়ে বিধানসভা থেকে নিন্দা প্রস্তাব আনার আহ্বান জানিয়েছেন। খবর এনডিটিভির।
উত্তর প্রদেশ বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে যোগী আদিত্যনাথ বলেন, বিরোধীরা আন্তর্জাতিক ইস্যুতে নির্বাচিতভাবে প্রতিবাদ করলেও প্রতিবেশী দেশগুলোতে হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনায় নীরব থাকেন। এটিকে তিনি ‘নির্বাচিত ক্ষোভ’ ও তোষণের রাজনীতি হিসেবে অভিহিত করেন।
বাংলাদেশের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “গাজায় কিছু হলে আপনারা চোখের জল ফেলেন। কিন্তু বাংলাদেশে একজন দলিত যুবক নিহত হলো—আপনাদের মুখ থেকে একটি কথাও বেরোল না।”
তিনি অভিযোগ করেন, বিরোধীরা ভোটব্যাংক ও তোষণমূলক রাজনীতির স্বার্থে এসব ইস্যু ব্যবহার করে থাকে। যোগী আদিত্যনাথের দাবি, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সৃষ্টি না হলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা ঘটত না। তিনি বলেন,
“গাজার জন্য মোমবাতি মিছিল করেন; কিন্তু পাকিস্তান বা বাংলাদেশে একজন হিন্দু, একজন দলিত নিহত হলে আপনারা চুপ থাকেন।”
এ বিষয়ে বিরোধীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিধানসভা থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা প্রস্তাব আনা উচিত। বিরোধী দলের নেতার পক্ষ থেকেই এমন প্রস্তাব আসা দরকার। একই সঙ্গে তিনি বলেন,
“আমরা এই ঘটনার নিন্দা জানাই এবং বাংলাদেশ সরকারকে সতর্ক হতে বলি।”
অবৈধ অনুপ্রবেশ ইস্যুতেও বিরোধীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন বিজেপির এই নেতা। তার দাবি, বিরোধীরা বাংলাদেশি নাগরিক ও রোহিঙ্গাদের পক্ষে অবস্থান নেয়।
“আমরা যখন বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠাই বা রোহিঙ্গাদের বের করে দিই, তখন আপনারা তাদের পক্ষ নিয়ে দাঁড়ান। অনেককে আপনারাই ভোটার বানিয়েছেন, এমনকি আধার কার্ডও করে দিয়েছেন,”—বলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন। তার দল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ জুলাই হত্যাযজ্ঞের বিভিন্ন মামলার এজাহারভুক্ত একাধিক আসামিও ভারতে অবস্থান করছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
এ ছাড়া ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাও ভারতে পালিয়ে গেছে বলে দাবি উঠেছে। এসব ঘটনার জেরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্ক বর্তমানে চরম অবনতির দিকে। দুই দেশেই একে অপরের কূটনৈতিক স্থাপনার সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি এখন নিয়মিত চিত্র হয়ে উঠেছে।
শু/সবা

























