০৬:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে রেকর্ড প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন জাপানের

আসন্ন অর্থবছরের জন্য ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৯ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার) প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন করেছে জাপানের মন্ত্রিসভা। চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সামরিক ও কৌশলগত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দেশটির সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরদারের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খবর আল জাজিরার।

তবে প্রস্তাবিত এই বাজেট কার্যকর করতে আগামী মার্চের মধ্যে জাপানের সংসদের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রয়োজন। কয়েক বছর ধরেই জাপান তার প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। মূলত চীনের সামরিক শক্তি ও আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থেকেই এই ব্যয় বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত নভেম্বরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সতর্ক করে বলেন, চীন যদি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তবে সেই সংঘাতে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী জড়িয়ে পড়তে পারে। তার এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বেইজিং। এরপর থেকেই সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সব ক্ষেত্রেই টোকিও ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, নতুন বাজেট অনুমোদন পেলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর প্রতিরক্ষা ব্যয়ের দিক থেকে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসবে জাপান। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী মার্চের মধ্যেই জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে রয়েছে তারা। নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগেই এই লক্ষ্য পূরণের জন্য জাপান সরকারকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

নতুন বাজেটের আওতায় জাপানের ‘স্ট্যান্ড-অফ’ ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াতে ৯৭০ বিলিয়ন ইয়েনের বেশি (প্রায় ৬.২ বিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত ও উন্নত টাইপ-১২ সারফেস-টু-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ১৭৭ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ১.১৩ বিলিয়ন ডলার) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের আনুমানিক পাল্লা প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার।

এদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া এবং সৈন্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানববিহীন সামরিক ব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছে জাপান সরকার। উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরদারে নজরদারি ও প্রতিরক্ষামূলক কাজে আকাশ, জলপৃষ্ঠ ও জলতলের মানববিহীন ড্রোন মোতায়েন করতে ১০০ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৬৪০ মিলিয়ন ডলার) ব্যয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, ‘শিল্ড’ নামে পরিচিত এই ব্যবস্থা ২০২৮ সালের মার্চের মধ্যে কার্যকর হতে পারে।

শু/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

তারেক রহমানের পক্ষে স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন

চীনের সঙ্গে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে রেকর্ড প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন জাপানের

আপডেট সময় : ০৪:৩৯:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫

আসন্ন অর্থবছরের জন্য ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৯ ট্রিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৫ হাজার ৮০০ কোটি মার্কিন ডলার) প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন করেছে জাপানের মন্ত্রিসভা। চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সামরিক ও কৌশলগত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে দেশটির সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরদারের লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খবর আল জাজিরার।

তবে প্রস্তাবিত এই বাজেট কার্যকর করতে আগামী মার্চের মধ্যে জাপানের সংসদের চূড়ান্ত অনুমোদন প্রয়োজন। কয়েক বছর ধরেই জাপান তার প্রতিরক্ষা ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২ শতাংশে উন্নীত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। মূলত চীনের সামরিক শক্তি ও আঞ্চলিক প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থেকেই এই ব্যয় বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত নভেম্বরে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সতর্ক করে বলেন, চীন যদি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে কোনো সামরিক পদক্ষেপ নেয়, তবে সেই সংঘাতে জাপানের আত্মরক্ষা বাহিনী জড়িয়ে পড়তে পারে। তার এই মন্তব্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় বেইজিং। এরপর থেকেই সামরিক, অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সব ক্ষেত্রেই টোকিও ও বেইজিংয়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

বিশ্লেষকদের ধারণা, নতুন বাজেট অনুমোদন পেলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর প্রতিরক্ষা ব্যয়ের দিক থেকে বিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে উঠে আসবে জাপান। দেশটির অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী মার্চের মধ্যেই জিডিপির ২ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের পথে রয়েছে তারা। নির্ধারিত সময়ের দুই বছর আগেই এই লক্ষ্য পূরণের জন্য জাপান সরকারকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

নতুন বাজেটের আওতায় জাপানের ‘স্ট্যান্ড-অফ’ ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা বাড়াতে ৯৭০ বিলিয়ন ইয়েনের বেশি (প্রায় ৬.২ বিলিয়ন ডলার) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে দেশীয়ভাবে উৎপাদিত ও উন্নত টাইপ-১২ সারফেস-টু-শিপ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার জন্য ১৭৭ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ১.১৩ বিলিয়ন ডলার) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের আনুমানিক পাল্লা প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার।

এদিকে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া এবং সৈন্য ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানববিহীন সামরিক ব্যবস্থার ওপর জোর দিচ্ছে জাপান সরকার। উপকূলীয় প্রতিরক্ষা জোরদারে নজরদারি ও প্রতিরক্ষামূলক কাজে আকাশ, জলপৃষ্ঠ ও জলতলের মানববিহীন ড্রোন মোতায়েন করতে ১০০ বিলিয়ন ইয়েন (প্রায় ৬৪০ মিলিয়ন ডলার) ব্যয়ের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের মতে, ‘শিল্ড’ নামে পরিচিত এই ব্যবস্থা ২০২৮ সালের মার্চের মধ্যে কার্যকর হতে পারে।

শু/সবা