১১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ব্যাটারদের ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

শুধু কিউইদের মোকাবিলাই নয় বরং আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল। তাইতো টসে জেতা বাংলাদেশ শুরুতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠাল। সিধান্তটা তেমন প্রশ্নবিদ্ধ না হলেও বোলারদের জন্য বিরুদ্ধ কন্ডিশনে ভালো শুরু পাওয়া আশীর্বাদস্বরূপ। শান্তকে যেন সেই বার্তাটা দিচ্ছিলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের প্রথম ওভারে রাচিন রাবিন্দ্র ও হেনরি নিকলসকে ফিরিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু সৌম্যের ক্যাচ মিসের দিনে লাথাম-ইয়াং জুটি টাইগারদের জয়বঞ্চিত করেছে। অবশ্য বোলারদের দায় দিয়ে ব্যাটারদের প্রশংসা করার সুযোগ নেই। যেই ভঙ্গিমায় ব্যাটাররা উইকেটগুলো বিলিয়ে দিয়েছেন, তাতে আক্ষেপের সুর কানে বাজাটাই স্বাভাবিক। খরচে বোলিংয়ের দিনে ওপেনিংয়ে নেমে ব্যর্থ সৌম্য সরকার। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে স্লিপে আত্মাহুতি দিয়ে শুরু। এর পর এনামুলের সাথে সঙ্গ দেয়ার বদলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে সোদির বলে আউট দলীয় অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা লিটন দাসও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শর্ট বল গ্ল্যান্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে দৃষ্টিকটু আউট হন। স্কোরবোর্ড সচল রাখতে গিয়ে অভিষিক্ত ক্লাকসনের বলে পুল করতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন। এভাবেই টাইগারদের টপাটপ উইকেট বিলিয়ে আসা যেন পুরোনো সফরগুলোকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল। সিনিয়র মুশফিকও রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এর পর আফিফ-তাওহিদ জুটি জয়ের স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেননি। কাছে গিয়েও জয়বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। সেই আক্ষেপের সুর সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা বিজয়ের মধ্যেও ছিল। তিনি বলেন, ‘আজকে (গতকাল) আমি সেট হয়েছি, ইনিংস বড় করতে পারিনি। আফসোস হচ্ছে কিন্তু পরবর্তীতে যখন সুযোগ পাব এটা যেন বড় করতে পারি।’ একইভাবে তার সতীর্থরাও যেন এ বিষয়টির খেয়াল রাখে সেই কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, ‘একই শিক্ষাটা কিন্তু অন্য ব্যাটারদেরও। হয়ত লিটন সেট হবে, শান্ত সেট হবে কিংবা সৌম্য সেট হবে, তারা যদি সুযোগটা পায় তাহলে যেন বড় করতে পারে।’ তার মতো অভিজ্ঞ লিটনও বাউন্সে পরাস্ত হয়েছেন। এর কারণ হিসেবে শারীরিকভাবে কিউই পেসাররা লম্বা হওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাইতো এর সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা ছিল তার কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আমরা এটাকে মানিয়ে নিতে পারব খুব তাড়াতাড়ি। আরো দুই দিন প্র্যাকটিসের সুযোগ আছে। আমরা নিজেদেরকে ট্রেইন করব বা চিন্তা করব কিভাবে খেলা যায়। কিন্তু আশার কথা হলো আমাদের ক্যামব্যাক করার সুযোগ আছে’।

বাংলাদেশের সঙ্গে জয়ের পরও টাইগার বোলারদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান উইল ইয়াং। তিনি বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) শুরুতে অনেক ভালো বোলিং করেছে। সুইং পেয়েছে। যেখানে সফরকারী দলের জন্য নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ঠিকঠাক লেংথ খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন। তবে মূল বোলারদের বোলিং যখন শেষ হয়ে যায়, ওই সময় শেষ ১০ ওভার কঠিন ছিল বাংলাদেশের জন্য। এখানে বাংলাদেশকে আমার কাছে কিছুটা দুর্ভাগা মনে হচ্ছে।’ নিজেদের ভাগ্যবান মনে করে ইয়াং বলেন, ‘নতুন বলে ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন ছিল। এ সময় আমরা রয়েসয়ে খেলে হাতে উইকেট রাখতে চেয়েছিলাম, যাতে শেষ দিকে দ্রুত রান করা যায়। এদিক থেকে আমরা ভাগ্যবান। কারণ তাদের মূল বোলারদের ওভার শেষ হয়ে গিয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ষষ্ঠ বোলারের জন্য কঠিন। বাউন্ডারিও ছোট ছিল। সব মিলিয়ে দিনটা আমাদের পক্ষে কাজ করেছে।’

নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট মাঠগুলো সাধারণত ছোট সীমানার হয়। কখনো কখনো অতিরিক্ত বাউন্স ব্যাটারদের পরীক্ষায় ফেলে। গতকাল সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা ফেল করে সিরিজ হারিয়েছে। আগামী বুধবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটাররা যদি উইকেট বুঝে দায়িত্বশীল আচরণ করতে না পারে, তবে আবারো কপালে দুর্ভাগ্য জোটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। সিরিজ শুরুর দিনে শান্ত যে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন, তা আর রক্ষা করা যাবে না। তাই ব্যাটারদের জন্য দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাবা শরীফ চত্বরে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা এক ব্যক্তির

ব্যাটারদের ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ

আপডেট সময় : ০৭:৪৪:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

শুধু কিউইদের মোকাবিলাই নয় বরং আবহাওয়ার সাথে মানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল। তাইতো টসে জেতা বাংলাদেশ শুরুতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠাল। সিধান্তটা তেমন প্রশ্নবিদ্ধ না হলেও বোলারদের জন্য বিরুদ্ধ কন্ডিশনে ভালো শুরু পাওয়া আশীর্বাদস্বরূপ। শান্তকে যেন সেই বার্তাটা দিচ্ছিলেন পেসার শরিফুল ইসলাম। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের প্রথম ওভারে রাচিন রাবিন্দ্র ও হেনরি নিকলসকে ফিরিয়ে জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু সৌম্যের ক্যাচ মিসের দিনে লাথাম-ইয়াং জুটি টাইগারদের জয়বঞ্চিত করেছে। অবশ্য বোলারদের দায় দিয়ে ব্যাটারদের প্রশংসা করার সুযোগ নেই। যেই ভঙ্গিমায় ব্যাটাররা উইকেটগুলো বিলিয়ে দিয়েছেন, তাতে আক্ষেপের সুর কানে বাজাটাই স্বাভাবিক। খরচে বোলিংয়ের দিনে ওপেনিংয়ে নেমে ব্যর্থ সৌম্য সরকার। অফ স্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা দিয়ে স্লিপে আত্মাহুতি দিয়ে শুরু। এর পর এনামুলের সাথে সঙ্গ দেয়ার বদলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে সোদির বলে আউট দলীয় অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত। দীর্ঘদিন পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরা লিটন দাসও ইনিংস বড় করতে পারেননি। শর্ট বল গ্ল্যান্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে দৃষ্টিকটু আউট হন। স্কোরবোর্ড সচল রাখতে গিয়ে অভিষিক্ত ক্লাকসনের বলে পুল করতে গিয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন। এভাবেই টাইগারদের টপাটপ উইকেট বিলিয়ে আসা যেন পুরোনো সফরগুলোকে মনে করিয়ে দিচ্ছিল। সিনিয়র মুশফিকও রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। এর পর আফিফ-তাওহিদ জুটি জয়ের স্বপ্ন দেখালেও শেষ পর্যন্ত পেরে উঠেননি। কাছে গিয়েও জয়বঞ্চিত হয় বাংলাদেশ। সেই আক্ষেপের সুর সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে আসা বিজয়ের মধ্যেও ছিল। তিনি বলেন, ‘আজকে (গতকাল) আমি সেট হয়েছি, ইনিংস বড় করতে পারিনি। আফসোস হচ্ছে কিন্তু পরবর্তীতে যখন সুযোগ পাব এটা যেন বড় করতে পারি।’ একইভাবে তার সতীর্থরাও যেন এ বিষয়টির খেয়াল রাখে সেই কথাও বলেছেন। তিনি বলেন, ‘একই শিক্ষাটা কিন্তু অন্য ব্যাটারদেরও। হয়ত লিটন সেট হবে, শান্ত সেট হবে কিংবা সৌম্য সেট হবে, তারা যদি সুযোগটা পায় তাহলে যেন বড় করতে পারে।’ তার মতো অভিজ্ঞ লিটনও বাউন্সে পরাস্ত হয়েছেন। এর কারণ হিসেবে শারীরিকভাবে কিউই পেসাররা লম্বা হওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাইতো এর সঙ্গে দ্রুত মানিয়ে নেয়ার প্রত্যাশা ছিল তার কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘আশা করছি, আমরা এটাকে মানিয়ে নিতে পারব খুব তাড়াতাড়ি। আরো দুই দিন প্র্যাকটিসের সুযোগ আছে। আমরা নিজেদেরকে ট্রেইন করব বা চিন্তা করব কিভাবে খেলা যায়। কিন্তু আশার কথা হলো আমাদের ক্যামব্যাক করার সুযোগ আছে’।

বাংলাদেশের সঙ্গে জয়ের পরও টাইগার বোলারদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান উইল ইয়াং। তিনি বলেন, ‘তারা (বাংলাদেশ) শুরুতে অনেক ভালো বোলিং করেছে। সুইং পেয়েছে। যেখানে সফরকারী দলের জন্য নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ঠিকঠাক লেংথ খুঁজে পাওয়া একটু কঠিন। তবে মূল বোলারদের বোলিং যখন শেষ হয়ে যায়, ওই সময় শেষ ১০ ওভার কঠিন ছিল বাংলাদেশের জন্য। এখানে বাংলাদেশকে আমার কাছে কিছুটা দুর্ভাগা মনে হচ্ছে।’ নিজেদের ভাগ্যবান মনে করে ইয়াং বলেন, ‘নতুন বলে ব্যাটিং করাটা একটু কঠিন ছিল। এ সময় আমরা রয়েসয়ে খেলে হাতে উইকেট রাখতে চেয়েছিলাম, যাতে শেষ দিকে দ্রুত রান করা যায়। এদিক থেকে আমরা ভাগ্যবান। কারণ তাদের মূল বোলারদের ওভার শেষ হয়ে গিয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে ষষ্ঠ বোলারের জন্য কঠিন। বাউন্ডারিও ছোট ছিল। সব মিলিয়ে দিনটা আমাদের পক্ষে কাজ করেছে।’

নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট মাঠগুলো সাধারণত ছোট সীমানার হয়। কখনো কখনো অতিরিক্ত বাউন্স ব্যাটারদের পরীক্ষায় ফেলে। গতকাল সেই পরীক্ষায় বাংলাদেশের ব্যাটাররা ফেল করে সিরিজ হারিয়েছে। আগামী বুধবার সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটাররা যদি উইকেট বুঝে দায়িত্বশীল আচরণ করতে না পারে, তবে আবারো কপালে দুর্ভাগ্য জোটা সময়ের ব্যাপার মাত্র। সিরিজ শুরুর দিনে শান্ত যে আশার বাণী শুনিয়েছিলেন, তা আর রক্ষা করা যাবে না। তাই ব্যাটারদের জন্য দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি হতে যাচ্ছে ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ।