১০:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষনীয়

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশে যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে, তার প্রভাব পড়ছে ঘরে ঘরেও। এই উৎসব থেকে বাদ যাননি নারী ভোটাররাও। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিচ্ছেন নারীরা। রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ভোত দিতে এসেছেন আসমাআক্তার। তিনি বলেন, এই তিন বার ভোট দিলাম জাতীয় নির্বাচনে। প্রতিবারই ভোট দিতে পেরে ভালো লাগে। নাগরিকত্বের একটা আলাদা অনুভূতি এটা। এটা আমাদের অধিকার। আইডিয়াল স্কুলে ভোট দিতে আসা সায়মা বেগম জানান, ভোটের সকালে ভিড় কম ছিল। সে সময় এসে একবার ঘুরে গেছি। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে চেয়েছিলাম। তাই দুপুরে আবার এলাম ভোট দিতে। সবাই মিলে লাইনে দাঁড়িয়ে গল্প করছি, কথা বলছি। আবার ভোট নিয়েও তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। এদিকে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে ভোট দেন তরুণী অদিতি সরকার। তিনি বলেন, ভোট দেওয়ার আলাদা একটা আনন্দ আছে। এখানে না এলে এই অনুভূতি বোঝা যায় না। তবে এবার ভোটের উৎসব আগের মতো জমেনি। সব দল এলে হয়তো জমে যেতো। বদরুন নাহার করুনা হাঁটতে হাঁটতে স্বামী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আব্দুল মালেককে নিয়ে ভোট দিতে আসেন মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে। মহিলা ভোটকেন্দ্রে প্রথম ভোটার হিসেবে তিনিই ভোট দেন সকালে। ভোট দিয়ে বললেন, এইবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভোট দিলাম। এর আগে যাকে ভোট দিয়েছি তিনিই বিজয়ী হয়েছেন। এবারও হবে আশা করি। মুগদাপাড়ার এসসি ন্যাশনাল মডেল হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন তৌহিদা ফেরদৌস। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পর ভোট দিতে পারলাম, সেজন্য আমি খুশি। নিজের ভোট নিজেই দিতে পেরে আরও ভালো লাগছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে ভোট জমতো। আরও বেশি আনন্দ লাগতো। ৮০ ঊর্ধ্ব বছর বয়সী  রিজিয়া বেগম ছেলে সামসুল আলম বয়াতী (৫৩) ও ছেলের বউ মিনারা বেগমকে সঙ্গে সপরিবারে ভোট দিতে এসেছেন সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে। ভোট দেওয়াটা উৎসব জানিয়ে তিনি বলেন, আমার পরিবার আওয়ামী লীগ করে। আমি প্রত্যেক ইলেকশনেই ভোট দেই। কোনও ইলেকশন বাদ দেই না। এটা একটা আনন্দ। ভোট নষ্ট করতে চান না বলে ভোট দিতে আসছেন বলে জানান আছিয়া বেগম নামে আরেক নারী ভোটার। তিনি বলেন, ভোট তো সব সময় দেওয়া যায় না। একটা দিন সুযোগ আসে এদিন বাসায় বসে ভোট নষ্ট কইরা তো কোনও লাভ নাই। ভোটাভুটির লাইগাই তো সব। ভোট দেওয়া আমার অধিকার, তাই ভোট দিয়েছি।

ঢাকা-৯ আসনের হায়দার আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কেন্দ্রগুলোতে পুরুষের চেয়ে মহিলা ভোট বেশি পড়েছে। হুইল চেয়ারে করে ভোট দিতে আসা শাহিদা বেগমের বয়স ৬৭ বছর। তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসে ভোট দিতে এসেছি। শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি। তাই এই ভোট দেওয়া আমার দায়িত্ব মনে করে এসেছি। ভোট  ভালো হচ্ছে। আরেক ভোটার মনোয়ারা বেগম বলেন, ভোট মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তবে আগের নির্বাচনগুলোর থেকে এবার ভিন্নতা রয়েছে। নিরিবিলি ভেট দিয়েছি। কেউ জোরাজুরি করেনি। বাধাও দেয়নি। ভালো লাগছে ভোট দিয়ে। ঢাকার কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ৬৫ বছরের বয়সী নারী রাবেয়া খাতুন। তিনি বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্টকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভোট দেবো দেবো ভেবে আনন্দ লাগছে। আজকে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠে রেডি হয়ে ছেলের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে এসেছি। ভোট দিতে এসে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেছে। ভোটার না হয়েও ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে ভোটকেন্দ্রে যেতাম। তখন অনেক মজা হতো। এখনও সেই আনন্দই অনুভব করছি। জামিয়া ইসলামিয়া মোহাম্মদী আশরাফুল মাদারিস ও এতিমখানা মহিলা ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন ক্রিস্টিনা রজার।  জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দিলেন তিনি। বলেন, ভোট দিতে পেরেছেন নির্বিঘ্নে এটাই বেশি।  কিন্তু উৎসব মুখর পরিবেশ নেই সে রকম। ভোটার উপস্থিতি কম, কাউন্সিলর নির্বাচনের সময় যে উপস্থিতি ছিল, এখন তাও নেই বলেও তিনি জানান।নারী ভোটার মরিয়ম  বেগম। ভোট দিতে আসেন শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে৷ তিনি বলেন, অন্যান্য বছর দুপুরের পরে ভোট দেই। এ বছর শুরুতেই আসলাম। ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ খুব সুন্দর এবং শান্তিপূর্ণ।  প্রথমে আসলাম বলে লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। সময় বেঁচে গেছে। এখন গিয়ে সংসারের কাজ করবো।

জনপ্রিয় সংবাদ

মূল্যস্ফীতি এখনো ঊর্ধ্বমুখী

ভোটকেন্দ্রগুলোতে নারী ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষনীয়

আপডেট সময় : ০৩:২৯:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৪

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশে যে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে, তার প্রভাব পড়ছে ঘরে ঘরেও। এই উৎসব থেকে বাদ যাননি নারী ভোটাররাও। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোট দিচ্ছেন নারীরা। রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলে ভোত দিতে এসেছেন আসমাআক্তার। তিনি বলেন, এই তিন বার ভোট দিলাম জাতীয় নির্বাচনে। প্রতিবারই ভোট দিতে পেরে ভালো লাগে। নাগরিকত্বের একটা আলাদা অনুভূতি এটা। এটা আমাদের অধিকার। আইডিয়াল স্কুলে ভোট দিতে আসা সায়মা বেগম জানান, ভোটের সকালে ভিড় কম ছিল। সে সময় এসে একবার ঘুরে গেছি। লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে চেয়েছিলাম। তাই দুপুরে আবার এলাম ভোট দিতে। সবাই মিলে লাইনে দাঁড়িয়ে গল্প করছি, কথা বলছি। আবার ভোট নিয়েও তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে। এদিকে হাবিবুল্লাহ বাহার কলেজে ভোট দেন তরুণী অদিতি সরকার। তিনি বলেন, ভোট দেওয়ার আলাদা একটা আনন্দ আছে। এখানে না এলে এই অনুভূতি বোঝা যায় না। তবে এবার ভোটের উৎসব আগের মতো জমেনি। সব দল এলে হয়তো জমে যেতো। বদরুন নাহার করুনা হাঁটতে হাঁটতে স্বামী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আব্দুল মালেককে নিয়ে ভোট দিতে আসেন মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে। মহিলা ভোটকেন্দ্রে প্রথম ভোটার হিসেবে তিনিই ভোট দেন সকালে। ভোট দিয়ে বললেন, এইবার নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ভোট দিলাম। এর আগে যাকে ভোট দিয়েছি তিনিই বিজয়ী হয়েছেন। এবারও হবে আশা করি। মুগদাপাড়ার এসসি ন্যাশনাল মডেল হাই স্কুল কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন তৌহিদা ফেরদৌস। তিনি বলেন, পাঁচ বছর পর ভোট দিতে পারলাম, সেজন্য আমি খুশি। নিজের ভোট নিজেই দিতে পেরে আরও ভালো লাগছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে ভোট জমতো। আরও বেশি আনন্দ লাগতো। ৮০ ঊর্ধ্ব বছর বয়সী  রিজিয়া বেগম ছেলে সামসুল আলম বয়াতী (৫৩) ও ছেলের বউ মিনারা বেগমকে সঙ্গে সপরিবারে ভোট দিতে এসেছেন সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে। ভোট দেওয়াটা উৎসব জানিয়ে তিনি বলেন, আমার পরিবার আওয়ামী লীগ করে। আমি প্রত্যেক ইলেকশনেই ভোট দেই। কোনও ইলেকশন বাদ দেই না। এটা একটা আনন্দ। ভোট নষ্ট করতে চান না বলে ভোট দিতে আসছেন বলে জানান আছিয়া বেগম নামে আরেক নারী ভোটার। তিনি বলেন, ভোট তো সব সময় দেওয়া যায় না। একটা দিন সুযোগ আসে এদিন বাসায় বসে ভোট নষ্ট কইরা তো কোনও লাভ নাই। ভোটাভুটির লাইগাই তো সব। ভোট দেওয়া আমার অধিকার, তাই ভোট দিয়েছি।

ঢাকা-৯ আসনের হায়দার আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কেন্দ্রগুলোতে পুরুষের চেয়ে মহিলা ভোট বেশি পড়েছে। হুইল চেয়ারে করে ভোট দিতে আসা শাহিদা বেগমের বয়স ৬৭ বছর। তিনি বলেন, দেশকে ভালোবাসে ভোট দিতে এসেছি। শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি। তাই এই ভোট দেওয়া আমার দায়িত্ব মনে করে এসেছি। ভোট  ভালো হচ্ছে। আরেক ভোটার মনোয়ারা বেগম বলেন, ভোট মোটামুটি ভালো হচ্ছে। তবে আগের নির্বাচনগুলোর থেকে এবার ভিন্নতা রয়েছে। নিরিবিলি ভেট দিয়েছি। কেউ জোরাজুরি করেনি। বাধাও দেয়নি। ভালো লাগছে ভোট দিয়ে। ঢাকার কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে আসেন ৬৫ বছরের বয়সী নারী রাবেয়া খাতুন। তিনি বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্টকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ভোট দেবো দেবো ভেবে আনন্দ লাগছে। আজকে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠে রেডি হয়ে ছেলের সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে এসেছি। ভোট দিতে এসে ছোটবেলার স্মৃতি মনে পড়ে গেছে। ভোটার না হয়েও ছোটবেলায় বাবার হাত ধরে ভোটকেন্দ্রে যেতাম। তখন অনেক মজা হতো। এখনও সেই আনন্দই অনুভব করছি। জামিয়া ইসলামিয়া মোহাম্মদী আশরাফুল মাদারিস ও এতিমখানা মহিলা ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে এসেছিলেন ক্রিস্টিনা রজার।  জাতীয় নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ভোট দিলেন তিনি। বলেন, ভোট দিতে পেরেছেন নির্বিঘ্নে এটাই বেশি।  কিন্তু উৎসব মুখর পরিবেশ নেই সে রকম। ভোটার উপস্থিতি কম, কাউন্সিলর নির্বাচনের সময় যে উপস্থিতি ছিল, এখন তাও নেই বলেও তিনি জানান।নারী ভোটার মরিয়ম  বেগম। ভোট দিতে আসেন শামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে৷ তিনি বলেন, অন্যান্য বছর দুপুরের পরে ভোট দেই। এ বছর শুরুতেই আসলাম। ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ খুব সুন্দর এবং শান্তিপূর্ণ।  প্রথমে আসলাম বলে লাইনে দাঁড়াতে হয়নি। সময় বেঁচে গেছে। এখন গিয়ে সংসারের কাজ করবো।