গত দুই আসরের মতো এবারও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে আয়োজন করা হয়েছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার (ডিআইটিএফ) ২৮তম আসরের। গতকাল (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মাসব্যাপী এ মেলার স্টল ও প্রবেশমূল্যও বাড়ানো হয়েছে বলে জানান তারা। দেশি-বিদেশি পণ্য প্রদর্শনীর সবচেয়ে বড় এই আসরটি যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি।
ইপিবি (রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো) জানায়, এবারের বাণিজ্য মেলায় বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন, রেস্তোরাঁ ও স্টলের মোট সংখ্যা ৩৫১টি। অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এক্সিবিশন সেন্টারের ১ লাখ ৬৬ হাজার ৩০০ বর্গফুট আয়তনের দুটি হলে (এ ও বি) ১৭৪টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
সেন্টারের প্রধান ফটকের পূর্বপাশে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৬২টি। হলের পেছনে ফরেন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়ন এবং প্রিমিয়ার ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নসহ প্রিমিয়ার ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৫৩টি। সেন্টারের মূল কম্পাউন্ডের বাইরে ৬ একর জমির একাংশে ফুড জোন (৩২টি রেস্তোরাঁ ও মিনি রেস্তোরাঁ) এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ক্যাটাগরির স্টল রয়েছে ৬২টি। দেশীয় উদ্যোক্তাদের পাশাপাশি সিঙ্গাপুর, তুরস্ক, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে অংশ নেওয়া ব্যবসায়ীরা মেলায় নিজেদের পণ্য বিক্রি করছেন।
মেলায় এসব দেশের বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিক্স অ্যান্ড বিউটি এইডস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স, ফার্নিচার, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহসামগ্রী, চামড়া-আর্টিফিসিয়াল চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকরসহ বিভিন্ন পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে।
গত বছরের তুলনায় এ বছর মেলায় প্রবেশমূল্যও বেড়েছে। এ বছর সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য ৫০ টাকা ও ১২ বছরের কম বয়সিদের জন্য ২৫ টাকা টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে। গত বছর যা ছিল যথাক্রমে ৪০ ও ২০ টাকা। তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধীরা তাদের কার্ড দেখিয়ে বিনামূল্যে মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। মেলার টিকিট অনলাইনেও বিক্রি হবে। এছাড়া বিকাশের মাধ্যমে ডিসকাউন্টেও টিকিট বিক্রি হবে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। ছুটির দিন মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের জন্য রাজধানীর ফার্মগেট ও কুড়িল বিশ্বরোড থেকে আলাদা বাস ছাড়বে। মেলায় আসতে ফার্মগেট থেকে ৭০ টাকা ও কুড়িল থেকে ৩৫ টাকা মূল্যের টিকিট কাটতে হবে দর্শনার্থীদের।
প্রসঙ্গত, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ইপিবির যৌথ উদ্যোগে ১৯৯৫ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন, উৎপাদনে সহায়তার লক্ষ্যে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে আয়োজন করা হতো। করোনা মহামারির কারণে ২০২১ সালে মেলা আয়োজন করা হয়নি। আর মহামারির বিধিনিষেধের মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবার মেলা পূর্বাচলে বিবিসিএফইসিতে আয়োজন করা হয়। আর এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে ২০ দিন পিছিয়ে মেলার আয়োজন করা হলো।


























