🔰 বঞ্চিতদের প্রাধান্য দেবে আওয়ামী লীগ
🔰 শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় স্বতন্ত্ররা
🔰 জাপার মনোনয়ন পাচ্ছেন শেরীফা ও সালমা
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন বসতে যাচ্ছে আগামী ৩০ জানুয়ারি। এরপর নির্বাচন করা হবে সংরক্ষিত ৫০ আসনের সংসদ সদস্য। ৩০০ আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করবেন।
আগামী ফেব্রয়ারিতে এই নির্বাচন হওয়ার কথা ইঙ্গিত দিয়েছে নির্বাচন কমশিন। তাই সংসদে নাম লেখাতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির (জাপা) সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেত্রী, পেশাজীবী ও তারকারা।
গত মঙ্গলবার ইসি মো. আলমগীর বলেন, সংরক্ষিত আসনের তফসিলের জন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) জাতীয় সংসদের চিঠির অপেক্ষায় আছে। জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। চিঠির জবাব এলে সংসদের সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কারা কতটা আসন পেয়েছে, তার অনুপাতে সংরক্ষিত আসন বণ্টন করা হয়। প্রতি ছয় আসনের বিপরীতে একটি করে সংরক্ষিত আসন থাকে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২৯৯ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসনে জয় পেয়েছে। জাতীয় পার্টি ১১টি আসনে জয় পেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬২ আসনে জয় পেয়েছেন। অনুপাত হিসেবে আওয়ামী লীগ ৩৭টি, স্বতন্ত্ররা ১০টি, জাপা পাবে ২টি আসন আর কল্যাণ পার্টি, জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি জোট করলে ১টি আসন পবে। তবে স্বতন্ত্ররা আওয়ামী লীগে যোগ দিলে সব মিলিয়ে ৪৮টি আসন পাবে দলটি। আর জাপা পাবে দুটি আসন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেছেন, শিডিউল ঘোষণার পর দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভায় এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনগুলোতে প্রার্থী মনোনয়নে কয়েকটি বিষয়ে প্রাধান্য দেবে দলটি। এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে যারা দলের মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছেন বা মনোনয়ন পেয়েও জোটের প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেছেন, তাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে। এছাড়া জেলা কোটা, পারিবারিক অবদান বিবেচনায়ও অনেকে সুয়োগ পাবেন। সাংস্কৃতিক ও চলচ্চিত্র অঙ্গন থেকে একজনকে সংসদ সদস্য করার সম্ভাবনা বেশি। আর একই মুখ বারবার সুযোগ না দিয়ে নতুন মুখ আনার বিষয়ে দলের হাইকমান্ডকে বার্তা পৌঁছেছেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
সেক্ষেত্রে একাধিকবার যারা সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হয়েছেন এবার তাদের বেশির ভাগই বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর সুযোগ পেতে পারেন কেন্দ্রীয় কমিটির ৫-৭ জন। এছাড়া জেলা পর্যায়ে দীর্ঘদিন দলের সঙ্গে আছেন এমন কয়েকজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। সহযোগী সংগঠন মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগের একাধিক সাবেক ও বর্তমান নেত্রীকে সংসদ সদস্য করা হতে পারে।
আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, স্বতন্ত্ররা সংসদে আওয়ামী লীগে যোগ দিক বা না দিক, তাদের সমর্থনে সংরক্ষিত আসনে দলীয় নেত্রীদেরই সংসদ সদস্য করা হবে। সেক্ষেত্রে দলের পক্ষ থেকে সংরক্ষিত আসনের একটি তালিকা করে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সমর্থন চাওয়া হতে পারে। আর স্বতন্ত্র অধিকাংশ সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগে যুক্ত হতে আগ্রহী। ফলে এ বিষয়ে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশনার অপেক্ষায় তারা।
এরই মধ্যে সংরক্ষিত আসনে দলের মনোনয়ন পেতে জোর লবিং, তদবির শুরু করেছেন, করছেন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। গণভবন থেকে দলীয় কার্যালয়, দলের সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রের সিনিয়র নেতাদের অফিস থেকে শুরু করে বাসায়ও হানা দিচ্ছেন তারা। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে শীর্ষ আওয়ামী লীগ নেতার স্বজন, স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি, কেউ জনপ্রতিনিধির স্ত্রী এবং ছাত্রলীগ নেত্রীসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত, সেলিব্রেটিরাও রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, সংরক্ষিত আসনে দক্ষ, সৎ, ত্যাগী নেতারা গুরুত্ব পাবেন।
আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কাজী জাফর উল্যাহ বলেন, প্রার্থী মনোনয়নে যারা দীর্ঘদিন দলের জন্য কাজ করছেন, যাদের মা-বাবার দলের জন্য অবদান রয়েছে এ বিষয়গুলো গুরুত্ব দেওয়া হবে।
আর জাপা সূত্র বলছে, জাপার দুটি সংরক্ষিত আসনে দলের দুই কো-চেয়ারম্যান শেরীফা কাদের ও সালমা ইসলামের মনোনয়ন অনেকটা নিশ্চিত। সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য হতে কয়েকজন জোর চেষ্টা চালালেও এবারের সংসদে জাপার সংরক্ষিত আসন কম থাকায় এ দুজনের মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে।
স/ম


























