০৮:২৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা

► নিহত ১১, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়
► কঠোর প্রতিশোধের হুমকি ইরানের
► আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা

 

 

সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনের এনেক্স ভবনে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এ হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূলক জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান। এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে বিশ^জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠছে। এ হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি বলে সতর্ক করা হয়েছে।

 

গত সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের মেজেহ জেলাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলিদের চালানো হামলায় ইরানি কনস্যুলেটের সেই ভবনটি পুরোপুরি ধসে গেছে। হামলার পরপর ভবনটি থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখা যায়। তবে হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি দখলদার ইসরায়েল।

 

এক বিবৃতিতে আইআরজিসি বলেছে, সোমবারের হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও তার ডেপুটি জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমি নিহত হয়েছেন। হামলার সময় আইআরজিসির বেশ কয়েকজন সামরিক উপদেষ্টা ভবনটিতে ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে জাহেদি ও রাহিমিও রয়েছেন। জাহেদি ২০১৬ সাল পর্যন্ত লেবানন ও সিরিয়ায় কুদস ফোর্সের প্রধান ছিলেন।

 

দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও তাদের মিত্রদের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে ইসরায়েল। তবে সোমবারের হামলাটি প্রথমবারের মতো ইরানের কনস্যুলেট ভবনে চালানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকারবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, ইসরায়েলি ওই হামলায় আট ইরানি, দুই সিরিয়ান এবং একজন লেবানিজসহ মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের সবাই যোদ্ধা।

 

সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হোসেন আকবরী হামলায় আহত হননি। তিনি বলেছেন, তেহরানের প্রতিক্রিয়া হবে চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূলক। এ হামলাকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও চুক্তির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে দূতাবাস ভবনে হামলার ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত বলে দাবি করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান। পৃথক এক বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, ইরানের প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রয়েছে। আর এ প্রতিক্রিয়ার ধরন ও হামলার শাস্তি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তেহরান।

 

জাতিসংঘে ইরানের মিশন বলেছে, এ হামলার ঘটনাটি জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ও কনস্যুলার চত্বর রক্ষার মূলনীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। অন্যদিকে, হামলার নিন্দা জানাতে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি মিশন সংস্থার নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি বলে সতর্ক করে দিয়ে ইরানি মিশন বলেছে, হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার অধিকার রয়েছে তেহরানের।

সিরিয়ায় কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলি হামলার ঘটনার পরপরই তেহরানের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

ইরানের অন্যতম মিত্র সিরিয়া বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। হামলার পরপরই ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মেকদাদ। তিনি বলেন, আমরা দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবন লক্ষ্য করে চালানো এই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই।

 

 

ইরানি কনস্যুলেটে হামলার নিন্দা জানিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলার মিশনের বিরুদ্ধে এই অগ্রহণযোগ্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে, দামেস্কে হামলার ঘটনায় ইসরায়েলকে চড়া মূল্য দিতে হবে। এ অপরাধের জন্য শত্রুপক্ষকে শাস্তি পেতে হবে। অবশ্যই হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। ইরাক, জর্ডান, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য মুসলিম দেশও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

 

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেছেন, ওয়াশিংটন ওই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান সংঘাত বৃদ্ধির কারণ হতে পারে এমন যেকোনো বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে। তবে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করি না। তবে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত চারজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা স্বীকার করেছে, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত।

 

ইসরায়েল যে ইরানের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করছে, কনস্যুলেট ভবনে হামলার ঘটনায় সেটি মনে হচ্ছে। কারণ দেশটির সামরিক বাহিনী গাজা ও লেবাননের সাথে সীমান্তে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করে। তবে বিশ্লেষকরা এ হামলার ঘটনাটি আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু করতে পারে কি না তা নিয়ে বিভক্ত। ওয়াশিংটন ডিসির সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জন অল্টারম্যান বলেছেন, ইসরায়েল সম্ভবত এ হামলাকে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। ইসরায়েলিরা নিশ্চিত যে, তারা যদি পিছিয়ে যায়, তাহলে হুমকি কমার পরিবর্তে আরও বাড়বে। এ ধরনের হামলার ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে গেলে তা প্রতিপক্ষ শক্তিকে দুর্বল করবে বলে তারা মনে করে। তবে ওয়াশিংটনের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের বিশ্লেষক স্টিভেন কুক বলেছেন, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আইআরজিসি ইরাক এবং সিরিয়ায় প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করতে পারে। এর মাধ্যমে মার্কিন বাহিনীকে আবারও বিপদে ফেলতে পারে তারা। ইরানিরা হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা বাড়ানোর নির্দেশও দিতে পারে; যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান প্রোজেক্টের পরিচালক আলী ভায়েজ বলেছেন, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জেরে সংঘাত বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। তবে সেটি ইসরায়েলের জন্য খুব বেশি উদ্বেগের বিষয় নাও হতে পারে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বেড়েছে চুরি-নারী নির্যাতন

ইরানের দূতাবাসে ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলা

আপডেট সময় : ০৭:৪৫:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

► নিহত ১১, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়
► কঠোর প্রতিশোধের হুমকি ইরানের
► আঞ্চলিক যুদ্ধের শঙ্কা

 

 

সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনের এনেক্স ভবনে ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এ হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ হামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূলক জবাব দেওয়ার হুমকি দিয়েছে তেহরান। এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে বিশ^জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠছে। এ হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি বলে সতর্ক করা হয়েছে।

 

গত সোমবার বিকাল ৫ টার দিকে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের মেজেহ জেলাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ইসরায়েলিদের চালানো হামলায় ইরানি কনস্যুলেটের সেই ভবনটি পুরোপুরি ধসে গেছে। হামলার পরপর ভবনটি থেকে ধোঁয়ার কুণ্ডলি বের হতে দেখা যায়। তবে হামলার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি দখলদার ইসরায়েল।

 

এক বিবৃতিতে আইআরজিসি বলেছে, সোমবারের হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কোরের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদি ও তার ডেপুটি জেনারেল মোহাম্মদ হাদি হাজি রাহিমি নিহত হয়েছেন। হামলার সময় আইআরজিসির বেশ কয়েকজন সামরিক উপদেষ্টা ভবনটিতে ছিলেন। তাদের মধ্যে অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে জাহেদি ও রাহিমিও রয়েছেন। জাহেদি ২০১৬ সাল পর্যন্ত লেবানন ও সিরিয়ায় কুদস ফোর্সের প্রধান ছিলেন।

 

দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা ও তাদের মিত্রদের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে ইসরায়েল। তবে সোমবারের হামলাটি প্রথমবারের মতো ইরানের কনস্যুলেট ভবনে চালানো হয়েছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকারবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস বলেছে, ইসরায়েলি ওই হামলায় আট ইরানি, দুই সিরিয়ান এবং একজন লেবানিজসহ মোট ১১ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের সবাই যোদ্ধা।

 

সিরিয়ায় নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত হোসেন আকবরী হামলায় আহত হননি। তিনি বলেছেন, তেহরানের প্রতিক্রিয়া হবে চূড়ান্ত নিষ্পত্তিমূলক। এ হামলাকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা ও চুক্তির লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে দূতাবাস ভবনে হামলার ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত বলে দাবি করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান। পৃথক এক বিবৃতিতে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি বলেছেন, ইরানের প্রতিক্রিয়া জানানোর অধিকার রয়েছে। আর এ প্রতিক্রিয়ার ধরন ও হামলার শাস্তি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে তেহরান।

 

জাতিসংঘে ইরানের মিশন বলেছে, এ হামলার ঘটনাটি জাতিসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন এবং কূটনৈতিক ও কনস্যুলার চত্বর রক্ষার মূলনীতির স্পষ্ট লঙ্ঘন। অন্যদিকে, হামলার নিন্দা জানাতে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানি মিশন সংস্থার নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ হামলা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উল্লেখযোগ্য হুমকি বলে সতর্ক করে দিয়ে ইরানি মিশন বলেছে, হামলার চূড়ান্ত জবাব দেওয়ার অধিকার রয়েছে তেহরানের।

সিরিয়ায় কনস্যুলেট ভবনে ইসরায়েলি হামলার ঘটনার পরপরই তেহরানের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

 

ইরানের অন্যতম মিত্র সিরিয়া বলেছে, ইসরায়েলি হামলায় নিরপরাধ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। হামলার পরপরই ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল মেকদাদ। তিনি বলেন, আমরা দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেট ভবন লক্ষ্য করে চালানো এই নৃশংস সন্ত্রাসী হামলা ও নিরপরাধ মানুষকে হত্যার তীব্র নিন্দা জানাই।

 

 

ইরানি কনস্যুলেটে হামলার নিন্দা জানিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমরা সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলার মিশনের বিরুদ্ধে এই অগ্রহণযোগ্য হামলার তীব্র নিন্দা জানাই। লেবাননের ইরান-সমর্থিত শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ বলেছে, দামেস্কে হামলার ঘটনায় ইসরায়েলকে চড়া মূল্য দিতে হবে। এ অপরাধের জন্য শত্রুপক্ষকে শাস্তি পেতে হবে। অবশ্যই হামলার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। ইরাক, জর্ডান, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অন্যান্য মুসলিম দেশও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

 

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেছেন, ওয়াশিংটন ওই অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান সংঘাত বৃদ্ধির কারণ হতে পারে এমন যেকোনো বিষয় নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছে। তবে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিদেশি গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বিষয়ে মন্তব্য করি না। তবে মার্কিন প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অন্তত চারজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা স্বীকার করেছে, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার ঘটনায় ইসরায়েল জড়িত।

 

ইসরায়েল যে ইরানের সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করছে, কনস্যুলেট ভবনে হামলার ঘটনায় সেটি মনে হচ্ছে। কারণ দেশটির সামরিক বাহিনী গাজা ও লেবাননের সাথে সীমান্তে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত গোষ্ঠীগুলোকে অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ করে। তবে বিশ্লেষকরা এ হামলার ঘটনাটি আঞ্চলিক যুদ্ধ শুরু করতে পারে কি না তা নিয়ে বিভক্ত। ওয়াশিংটন ডিসির সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের জন অল্টারম্যান বলেছেন, ইসরায়েল সম্ভবত এ হামলাকে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। ইসরায়েলিরা নিশ্চিত যে, তারা যদি পিছিয়ে যায়, তাহলে হুমকি কমার পরিবর্তে আরও বাড়বে। এ ধরনের হামলার ঘটনা দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে গেলে তা প্রতিপক্ষ শক্তিকে দুর্বল করবে বলে তারা মনে করে। তবে ওয়াশিংটনের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের বিশ্লেষক স্টিভেন কুক বলেছেন, উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আইআরজিসি ইরাক এবং সিরিয়ায় প্রক্সি গোষ্ঠীগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করতে পারে। এর মাধ্যমে মার্কিন বাহিনীকে আবারও বিপদে ফেলতে পারে তারা। ইরানিরা হিজবুল্লাহকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলা বাড়ানোর নির্দেশও দিতে পারে; যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইরান প্রোজেক্টের পরিচালক আলী ভায়েজ বলেছেন, দামেস্কে ইরানি কনস্যুলেটে হামলার জেরে সংঘাত বৃদ্ধির ঝুঁকি রয়েছে। তবে সেটি ইসরায়েলের জন্য খুব বেশি উদ্বেগের বিষয় নাও হতে পারে।