০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছেন কর্মমুখী মানুষ

➣যাত্রীর চাপ আছে তবে যানজট-ভোগান্তি নেই
➣গণপরিবহনের চেয়ে ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রী বেশি
➣অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে

ঈদের নির্ধারিত ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মমুখী মানুষ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষও। ঈদ ও নববর্ষের ছুটির পর গতকাল সোমবার থেকে সব অফিস-আদালত খুলেছে। তাই কর্মস্থলে যোগ দিতে এদিন সকাল থেকেই ট্রেন, বাস ও লঞ্চে করে অনেকেই ঢাকায় ফিরেছেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এদিন কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চঘাট এবং মহাখালী, গাবতলী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে সকাল থেকে ভরপুর যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার ট্রেন, বাস ও লঞ্চ ঢাকায় ফিরেছে। উপচেপড়া চাপ না থাকলেও যাত্রীদের কমতি নেই। তবে গণপরিবহনের চেয়ে ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীর সংখ্যা বেশি।

যাত্রীরা বলছেন, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। যাওয়ার সময় কষ্ট হলেও ফিরতি যাত্রায় স্বস্তিতে তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন। কোথাও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বিশেষ করে রাস্তা-ঘাট ফাঁকা থাকায় বাসযাত্রীরা নির্বিঘ্নে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন।
নোয়াখালী থেকে আসা সাজেদুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় কোনো যানজট নেই। তাই খুব কম সময়ে ঢাকায় চলে এসেছি। আজকে থেকে অফিস খোলা তাই তড়িঘড়ি করে ঢাকায় আসা। ছেলে-মেয়েকে বাড়ি রেখে এসেছি। তারা কয়দিন পর ঢাকায় আসবে।

এদিকে ঈদের ফিরতি যাত্রায় বাসে কোনো ভোগান্তি পোহাতে না হলেও ট্রেনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এবার অনেকদিনের ছুটি ছিল। আসার সময় অনেক ভিড় হবে চিন্তা করে ছোট দুই ছেলে মেয়েসহ স্ত্রীকে বাড়িতেই রেখে এসেছি। কয়েকদিন পর যাত্রীর চাপ কমলে ছোট ভাই তাদের ঢাকায় নিয়ে আসবে। আমার অফিস খোলা তাই আমি লোকাল ট্রেনে দাঁড়িয়েই কোনোরকম চলে এসেছি।
অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চল থেকে লঞ্চযোগে আসা মানুষের চাপ গত দুদিনের চেয়ে বেড়েছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর সদরঘাট ঘুরে এবং বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেখা যায়, সকাল ৮টা পর্যন্ত সদরঘাটে ৭৮টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকায় এসেছে। ঘরে ফেরা মানুষের চাপ সামলাতে প্রায় সব লঞ্চ ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে ফের যাত্রী আনতে দ্রুত টার্মিনাল ত্যাগ করছে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিটিএর কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭৮টি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে। যেখানে এর আগের দিন একই সময়ে ৯১টি লঞ্চ রাজধানীতে এসেছিল।

নির্বিঘ্নে রাজধানীতে ফিরলেও বিভিন্ন জায়গায় চালকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, ঈদ এলেই পরিবহনগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় দেখার যেন কেউ নেই। কোনো যাত্রী প্রতিবাদ করলে অপযস্থ-অপমানিত হতে হয় তাকে। প্রশাসন থেকেও নেওয়া হয় না কোনো ব্যবস্থা। এক যাত্রী বলেন, ঈদে এবার লাল সবুজ পরিবহন নোয়াখালী থেকে ঢাকা ভাড়া আদায় করছে ৮০০ টাকা। অথচ নির্ধারিত মূল্য ৫৫০ টাকা। একই রকমভাবে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে একুশে পরিবহন ও হিমাচল পরিবহনও। লাল সবুজ পরিবহন সোনাপুর কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে জানতে চাইলে কোনো সঠিক তথ্য দেয়নি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে প্রশাসন জরিমানা করবে এক যাত্রীর এমন কথায় কাউন্টার ম্যানেজার জানান, জরিমানা করার জন্য।
এদিকে এবারের ঈদের ছুটি লম্বা হওয়ায় কর্মজীবী মানুষের বাড়ি যেতে ও ঢাকায় ফিরতে কোনো ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি। সড়ক, নৌ, রেল সব পথেই ছিল স্বস্তির যাত্রা। তাই মানুষ টানা ছুটি শেষে আনন্দের সুখ-স্মৃতি নিয়ে ফিরছেন রাজধানীতে। যা চলমান থাকবে সপ্তাহজুড়েই।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে গতকাল সোমবার অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজার খুলেছে। ঈদুল ফিতরের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল গত ৯ এপ্রিল। ঈদ ও বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছিল ১০ এপ্রিল থেকে, যা শেষ হয় ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ এবং ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে টানা ১০ দিন ছুটি কাটিয়েছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

ঈদ শেষে ঢাকায় ফিরছেন কর্মমুখী মানুষ

আপডেট সময় : ০৫:১৬:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

➣যাত্রীর চাপ আছে তবে যানজট-ভোগান্তি নেই
➣গণপরিবহনের চেয়ে ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রী বেশি
➣অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে

ঈদের নির্ধারিত ছুটি শেষে রাজধানী ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন কর্মমুখী মানুষ। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষও। ঈদ ও নববর্ষের ছুটির পর গতকাল সোমবার থেকে সব অফিস-আদালত খুলেছে। তাই কর্মস্থলে যোগ দিতে এদিন সকাল থেকেই ট্রেন, বাস ও লঞ্চে করে অনেকেই ঢাকায় ফিরেছেন।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এদিন কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চঘাট এবং মহাখালী, গাবতলী ও সায়দাবাদ বাস টার্মিনালে সকাল থেকে ভরপুর যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার ট্রেন, বাস ও লঞ্চ ঢাকায় ফিরেছে। উপচেপড়া চাপ না থাকলেও যাত্রীদের কমতি নেই। তবে গণপরিবহনের চেয়ে ট্রেন ও লঞ্চে যাত্রীর সংখ্যা বেশি।

যাত্রীরা বলছেন, পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। যাওয়ার সময় কষ্ট হলেও ফিরতি যাত্রায় স্বস্তিতে তারা ঢাকায় পৌঁছেছেন। কোথাও কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি। বিশেষ করে রাস্তা-ঘাট ফাঁকা থাকায় বাসযাত্রীরা নির্বিঘ্নে দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকায় ফিরতে পেরেছেন।
নোয়াখালী থেকে আসা সাজেদুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় কোনো যানজট নেই। তাই খুব কম সময়ে ঢাকায় চলে এসেছি। আজকে থেকে অফিস খোলা তাই তড়িঘড়ি করে ঢাকায় আসা। ছেলে-মেয়েকে বাড়ি রেখে এসেছি। তারা কয়দিন পর ঢাকায় আসবে।

এদিকে ঈদের ফিরতি যাত্রায় বাসে কোনো ভোগান্তি পোহাতে না হলেও ট্রেনে ছিল উপচেপড়া ভিড়। তূর্ণা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসা মোজাম্মেল হোসেন বলেন, এবার অনেকদিনের ছুটি ছিল। আসার সময় অনেক ভিড় হবে চিন্তা করে ছোট দুই ছেলে মেয়েসহ স্ত্রীকে বাড়িতেই রেখে এসেছি। কয়েকদিন পর যাত্রীর চাপ কমলে ছোট ভাই তাদের ঢাকায় নিয়ে আসবে। আমার অফিস খোলা তাই আমি লোকাল ট্রেনে দাঁড়িয়েই কোনোরকম চলে এসেছি।
অন্যদিকে দক্ষিণাঞ্চল থেকে লঞ্চযোগে আসা মানুষের চাপ গত দুদিনের চেয়ে বেড়েছে।

গতকাল সোমবার রাজধানীর সদরঘাট ঘুরে এবং বাংলাদেশ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে দেখা যায়, সকাল ৮টা পর্যন্ত সদরঘাটে ৭৮টি লঞ্চ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ঢাকায় এসেছে। ঘরে ফেরা মানুষের চাপ সামলাতে প্রায় সব লঞ্চ ঢাকায় যাত্রী নামিয়ে ফের যাত্রী আনতে দ্রুত টার্মিনাল ত্যাগ করছে। এ বিষয়ে বিআইডব্লিটিএর কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, সকাল ৮টা পর্যন্ত ৭৮টি লঞ্চ ঢাকায় এসেছে। যেখানে এর আগের দিন একই সময়ে ৯১টি লঞ্চ রাজধানীতে এসেছিল।

নির্বিঘ্নে রাজধানীতে ফিরলেও বিভিন্ন জায়গায় চালকদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। যাত্রীরা বলছেন, ঈদ এলেই পরিবহনগুলোর কাছে জিম্মি হয়ে পড়ে সাধারণ যাত্রীরা। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় দেখার যেন কেউ নেই। কোনো যাত্রী প্রতিবাদ করলে অপযস্থ-অপমানিত হতে হয় তাকে। প্রশাসন থেকেও নেওয়া হয় না কোনো ব্যবস্থা। এক যাত্রী বলেন, ঈদে এবার লাল সবুজ পরিবহন নোয়াখালী থেকে ঢাকা ভাড়া আদায় করছে ৮০০ টাকা। অথচ নির্ধারিত মূল্য ৫৫০ টাকা। একই রকমভাবে অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে একুশে পরিবহন ও হিমাচল পরিবহনও। লাল সবুজ পরিবহন সোনাপুর কাউন্টারে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়ে জানতে চাইলে কোনো সঠিক তথ্য দেয়নি। অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করলে প্রশাসন জরিমানা করবে এক যাত্রীর এমন কথায় কাউন্টার ম্যানেজার জানান, জরিমানা করার জন্য।
এদিকে এবারের ঈদের ছুটি লম্বা হওয়ায় কর্মজীবী মানুষের বাড়ি যেতে ও ঢাকায় ফিরতে কোনো ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি। সড়ক, নৌ, রেল সব পথেই ছিল স্বস্তির যাত্রা। তাই মানুষ টানা ছুটি শেষে আনন্দের সুখ-স্মৃতি নিয়ে ফিরছেন রাজধানীতে। যা চলমান থাকবে সপ্তাহজুড়েই।

উল্লেখ্য, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও পহেলা বৈশাখের ছুটি শেষে গতকাল সোমবার অফিস-আদালত, ব্যাংক-বিমা ও শেয়ারবাজার খুলেছে। ঈদুল ফিতরের আগে শেষ কর্মদিবস ছিল গত ৯ এপ্রিল। ঈদ ও বাংলা নববর্ষ মিলিয়ে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি শুরু হয়েছিল ১০ এপ্রিল থেকে, যা শেষ হয় ১৫ এপ্রিল। তবে অনেকেই ৮ এবং ৯ এপ্রিল দুদিনের ছুটি নিয়ে টানা ১০ দিন ছুটি কাটিয়েছেন।