অভিবাসীদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এবার পারিবারিক ভিসার শর্ত কঠোর করেছে যুক্তরাজ্য। বাড়ানো হয়েছে ন্যূনতম আয়ের সীমা। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
গত শুক্রবার অভিবাসীদের নিয়ে কাজ করা অনলাইন সংবাদমাধ্যম ইনফোমাইগ্রেন্টসের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল থেকে কোনো অভিবাসী যদি তার পরিবারের কোনো সদস্যকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসতে চান তাহলে তার ন্যূনতম আয় হতে হবে ২৯ হাজার পাউন্ড। এই আয় সীমা আগে ছিল ১৮ হাজার ৬০০ পাউন্ড। আগামী বছর এটি বাড়িয়ে ৩৮ হাজার ৭০০ পাউন্ডে উন্নীত করা হতে পারে। এই সিদ্ধান্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনার অংশ। দেশটির করদাতার বোঝা কমাতেই অভিবাসনকে নিয়ন্ত্রণ করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিয়মিত এবং অনিয়মিত মিলিয়ে রেকর্ডসংখ্যক অভিবাসী এসেছেন যুক্তরাজ্যে। চলতি বছর দেশটিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভোটের মাঠে অভিবাসন অন্যতম প্রধান ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে জনমত জরিপে পিছিয়ে আছে ক্ষমতাসীন রক্ষণশীলেরা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি বলেছেন, গণঅভিবাসন একটি ঊর্ধ্ব সীমায় পৌঁছে গেছে। ফলে, এমন কোনো সহজ সমাধান বা সহজ সিদ্ধান্ত নেই, যা এই সংখ্যাটিকে ব্রিটিশ জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে দিতে পারে। অদক্ষদের সংখ্যা কমানোর চেষ্টা করছি, যাতে ব্রিটিশ কর্মীদের এবং তাদের মজুরি রক্ষা করা যায়। আমরা চাই, যেসব অভিবাসী তাদের পরিবারকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসবেন তাদের কারণে যেন ব্রিটিশ নাগরিকদের ওপর করের বোঝা চাপাতে না হয়।
ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অভিবাসীদের পরিবারগুলো যেন যুক্তরাজ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকে, কারো ওপর নির্ভর করতে না হয়, তা নিশ্চিত করতেই আয় সীমা বাড়ানো হয়েছে। কর্মক্ষেত্র থেকে অর্জিত আয় আর সঞ্চয় মিলিয়েও এই শর্ত পূরণের সুযোগ থাকবে অভিবাসীদের। দক্ষ কর্মী হিসেবে ভিসা পাওয়ার শর্তকেও কঠোর করেছে যুক্তরাজ্য। গত ডিসেম্বরে দক্ষ কর্মী হিসেবে যুক্তরাজ্যে আসার ন্যূনতম বেতনের হার ৪৭ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসাবে শিক্ষার্থীদের জন্য কঠোর নীতি এবং ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের সেবাগ্রহীতা বিদেশিদের সারচার্জ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৬৬ শতাংশ। ২০২২ সালে যুক্তরাজ্যে নিট মাইগ্রেশন রেকর্ডসংখ্যক সাত লাখ ৪৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে।
অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিকস (ওএনএস) জানিয়েছেন, ২০২২ সালে নিট মাইগ্রেশন (ব্রিটেন ছেড়ে যাওয়া মানুষ এবং দেশটিতে নতুন করে আসা মানুষের সংখ্যার পার্থক্য) ধারণার চেয়ে অনেক বেশি। নিট মাইগ্রেশন হবে ছয় লাখ ছয় হাজার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সংখ্যাটি ১ লাখ ৩৯ হাজার বেড়ে উন্নীত হয়েছে ৭ লাখ ৪৫ হাজারে। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে নিট মাইগ্রেশন ছিল ৪ লাখ ৮৮ হাজার।


























