ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলায় সাংসারিক কলহে ১২ দিনের ব্যবধানে স্বামীর হাতে স্ত্রী, ছেলের হাতে বাবা ও নাতীর হাতে দাদী খুনের ঘটনা ঘটেছে। এসব খুনের ঘটনাকে পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে মনে করছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, মঙ্গলবার (৭ মে) সকালে উপজেলা কাচিনা গ্রামের পাগলা বাড়ী সংলগ্্ন একটি ধানক্ষেত থেকে হাজেরা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধুর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত হাজেরা খাতুনের স্বজনরা জানান, হাজেরা ও তার স্বামী সোহেলের মাঝে দাম্পত্য কলহ চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। এ ঘটনার পর থেকে স্বামী সোহেল পলাতক রয়েছেন। নিহতের পরিবার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশের ধারনা হাজেরার স্বামী সোহেল তাকে গলাকেটে হত্যা করে ধানক্ষেতে ফেলে পালিয়ে যায়।
এদিকে গত ২৬ এপ্রিল (শুক্রবার) সন্ধ্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভালুকা গ্রামের কোনাপাড়া এলাকায় কলেজ পড়ুয়া ছেলে রাব্বি পারিবারিক কলহে কাটা কম্পাস দিয়ে আঘাত করে শিক্ষক পিতা মজিবর রহমান পান্না (৫৬)কে খুন করে। এছাড়া উপজেলার কুল্লাব গ্রামে গত ৪ মে (শনিবার) সন্ধ্যায় নাতী আশিকের লাঠির আঘাতে দাদী জুলেখা খাতুনের (৭৫) মৃত্যু হয়। তিনটি ঘটনা নিয়েই এখন এলাকার মানুষের মাঝে চলছে বিভিন্ন আলোচনা-সমালোচনা। এসব ঘটনা ভবিষ্যতে পারিবারিক বন্ধন ও সম্পর্ককে কোন দিকে নিয়ে যাবে সেটিই এখন ভাবনার বিষয়।
দি সিনিয়র সিটিজেন সোসাইটি অব ভালুকার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান বলেন, তিনটি ঘটনাই পারিবারিক বা সাংসারিক কলহের কারণেই ঘটেছে বলে বুঝা যায়। এসব ঘটনা হয় যখন পরিবারে একে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তাছাড়া অশিক্ষাও একটি কারণ। এখন বেশির ভাগ মানুষ মোবাইলে আসক্ত ও অপসংস্কৃতির প্রভাব সাংসারিক জীবনে পরায় এসব অবক্ষয় এবং কঠিন পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। সত্যিই এসব ঘটনা দুঃখজনক এবং হতাশার।
ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, পরিবারের সকল সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকতে হবে। ছেলেমেয়েদেরকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোলতে হবে। সম্প্রতি তিনটি ঘটনা মূলত পারিবারিক কলহ জনিত। প্রত্যেকটা ঘটনার তদন্ত করেছেন তারা। তিনটি ঘটনার মধ্যে গৃহবধূ হত্যার ঘটনাটি তিনি পরিকল্পিত বলে মনে করছেন। তিনি আরও বলেন, সামাজিক ও পারিবারিক অপরাধ প্রবনতা থেকে সকলকেই দূরে থাকতে হবে। সবাই যদি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয় তাহলে সমাজ থেকে অপরাধ কর্মকান্ড কমে আসবে বলে তিনি মনে করেন।





















