১০:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিবালয়ে আওয়ামীলীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দ্বন্দ্ব, উত্তপ্ত ভোটের মাঠ

Oplus_131072

মানিকগঞ্জে শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দ্বন্দ্বে  উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। হামলা, মামলার ঘটনায় পক্ষে বিপক্ষের দুই প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। দলীয় নেতাকর্মীরা দুই প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরীন দলীয় কোন্দল। তাই এলাকার সাধারণ ভোটার থেকে পোলিং এজেন্ট, প্রিজাইডিং অফিসারসহ যারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন তাদের সবার মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক । এছাড়া সাধারন ভোটারদের মধ্যে সুষ্ঠ ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে।  

জানা গেছে, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু এবং আরেক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রহিম খান এর মধ্যে নানা কারনে ব্যাপক দ্বন্দ্ব চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আবদুর রহিম খানের গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরন ও গুলিবর্ষণ করার ঘটনা উল্লেখ করে রেজাউর রহমান খান জানুর ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক ফাহিম খান রনি এবং উপজেলার আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুন্তাকিম অনিক এর নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে এ ঘটনা নিয়ে রহিম খানের সমর্থকেরা মানব বন্ধন করে। পরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করায় এর প্রতিবাদে পাল্টা মানববন্ধন করে শিবালয়ের রেজাউর রহমান খান জানুর সমর্থকেরা।

 মানববন্ধনে একদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে নেতাকর্মীরা রহিম খানকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে জনসস্মূখে ক্ষমা চাইতে বলেন। এর পরই অভিযোগ সংশোধন করে অজ্ঞাতনামা আসামী উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন রহিম খান। মানববন্ধনে উভয় পক্ষের হাজার হাজার জনগন অংশ নেয়। বর্তমানে উপজেলা জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এতে করে সাধারন ভোটারসহ বিভিন্ন মহলে ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ নিয়ে বাড়ছে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউর রহমান খান জানুর ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক ফাহিম খান রনি বলেন, শিবালয়ে সন্ত্রাসী ও অপরাধের প্রশ্রয়দাতা, মসজিদ মন্দিরে হামলাকারী, ভূমিদর্স্যু, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে রহিমখানের বিরুদ্ধে। আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তার পিতার জানুর জনপ্রিয়তা ও জনগণের ভালোবাসা দেখে রহিম খান ও তার কর্মীদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে ।

এ বিষয়ে আব্দুর রহিম খান বলেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমাকে নির্বাচন করতে দেয়া হয় নাই। বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান খান জানু নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেছে। এবছরও তারা নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে। তাই নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দেয়ার লক্ষ্যে আইন-শৃংখলা ঠিক রাখার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।

শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুর রউফ সরকার জানান, সম্প্রতি একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিম খান ও রেজাউর রহমান খান জানুর সমর্থকরা পাল্টাপাল্টি মানব বন্ধন করেছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশন ও উর্দ্ধতন মহল অবগত আছে। তবে ভোটের পরিবেশ কেউ যাতে নষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী সর্বদা সজাগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শিবালয় উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সোনারগাঁয়ে অবৈধ গ্যাস ব্যবহার করায় গুড়িয়ে দেয়া হয় দু’টি প্রতিষ্ঠান, একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

শিবালয়ে আওয়ামীলীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দ্বন্দ্ব, উত্তপ্ত ভোটের মাঠ

আপডেট সময় : ০৫:৩৭:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪

মানিকগঞ্জে শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর দ্বন্দ্বে  উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোটের মাঠ। হামলা, মামলার ঘটনায় পক্ষে বিপক্ষের দুই প্রার্থীর কর্মীদের মধ্যে বাড়ছে উত্তেজনা। দলীয় নেতাকর্মীরা দুই প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় দেখা দিয়েছে অভ্যন্তরীন দলীয় কোন্দল। তাই এলাকার সাধারণ ভোটার থেকে পোলিং এজেন্ট, প্রিজাইডিং অফিসারসহ যারা নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন তাদের সবার মধ্যে বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক । এছাড়া সাধারন ভোটারদের মধ্যে সুষ্ঠ ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা বিরাজ করছে।  

জানা গেছে, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউর রহমান খান জানু এবং আরেক প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রহিম খান এর মধ্যে নানা কারনে ব্যাপক দ্বন্দ্ব চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি আবদুর রহিম খানের গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরন ও গুলিবর্ষণ করার ঘটনা উল্লেখ করে রেজাউর রহমান খান জানুর ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক ফাহিম খান রনি এবং উপজেলার আরুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুন্তাকিম অনিক এর নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরে এ ঘটনা নিয়ে রহিম খানের সমর্থকেরা মানব বন্ধন করে। পরে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করায় এর প্রতিবাদে পাল্টা মানববন্ধন করে শিবালয়ের রেজাউর রহমান খান জানুর সমর্থকেরা।

 মানববন্ধনে একদিনের আল্টিমেটাম দিয়ে নেতাকর্মীরা রহিম খানকে অভিযোগ প্রত্যাহার করে জনসস্মূখে ক্ষমা চাইতে বলেন। এর পরই অভিযোগ সংশোধন করে অজ্ঞাতনামা আসামী উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন রহিম খান। মানববন্ধনে উভয় পক্ষের হাজার হাজার জনগন অংশ নেয়। বর্তমানে উপজেলা জুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এতে করে সাধারন ভোটারসহ বিভিন্ন মহলে ভোটের সুষ্ঠ পরিবেশ নিয়ে বাড়ছে চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক।

এ বিষয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউর রহমান খান জানুর ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ সম্পাদক ফাহিম খান রনি বলেন, শিবালয়ে সন্ত্রাসী ও অপরাধের প্রশ্রয়দাতা, মসজিদ মন্দিরে হামলাকারী, ভূমিদর্স্যু, বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারসহ সাধারন মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে রহিমখানের বিরুদ্ধে। আগামী ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের শিবালয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী তার পিতার জানুর জনপ্রিয়তা ও জনগণের ভালোবাসা দেখে রহিম খান ও তার কর্মীদের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা মিথ্যা অভিযোগ তুলে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছে ।

এ বিষয়ে আব্দুর রহিম খান বলেন, গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমাকে নির্বাচন করতে দেয়া হয় নাই। বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউর রহমান খান জানু নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করেছে। এবছরও তারা নির্বাচনে আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করছে। তাই নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে সুষ্ঠ নির্বাচন উপহার দেয়ার লক্ষ্যে আইন-শৃংখলা ঠিক রাখার জন্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তিনি।

শিবালয় থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুর রউফ সরকার জানান, সম্প্রতি একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহিম খান ও রেজাউর রহমান খান জানুর সমর্থকরা পাল্টাপাল্টি মানব বন্ধন করেছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশন ও উর্দ্ধতন মহল অবগত আছে। তবে ভোটের পরিবেশ কেউ যাতে নষ্ট করতে না পারে সে বিষয়ে আইন শৃংখলা বাহিনী সর্বদা সজাগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, দ্বিতীয় ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে শিবালয় উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী এবং ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।