দীর্ঘ ১৫ বছর পর বাবা হতে যাচ্ছিলেন রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী সুমন মিয়া। তার যমজ বাচ্চা হবে; দ্রুতই করা হবে অস্ত্রোপচার। কিন্তু অনাগত সন্তানকে দেখে যেতে পারলেন না সুমন মিয়া। নির্বাচনের প্রচারণার সময় প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন তিনি। নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ই মে) উপজেলার সেরাজনগর এম.এ.পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাদ আছরের পর এবং নিজ গ্রাম চরসুবুদ্ধি ঈদ গাঁ মাঠে বাদ মাগরিব জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। নিহত সুমন মিয়া উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউপি চেয়ারম্যান হাজী নাসির উদ্দীনের ছেলে।
প্রথম জানাজায় পৌরসভা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুবুল আলম শাহীনের পরিচালনায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট এবিএম রিয়াজুল কবীর কাওসার, সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলী, রায়পুরা পৌরসভার মেয়র জামাল মোল্লা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক ইমান উদ্দিন ভূইয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ পার্থ, রায়পুরা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ সাফায়েত হোসেন পলাশ, উপজেলা চেয়ারম্যান ফোরামের সভাপতি ও অলিপুরা ইউপি চেয়ারম্যান আল-আমিন ভূইয়া মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক ও শ্রীনগর ইউপি চেয়ারম্যান রিয়াজ মুর্শেদ খান রাসেল, মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুর এলাহী প্রমুখ।
এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু নিহত সুমনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, সুমন একজন ভালো ছেলে ছিল। সে খুব মেধাবী ও ছাত্রলীগের সাবেক একনিষ্ঠ কর্মী ছিল। তাকে যারা হত্যা করেছে এবং এ হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী যারা তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
পরে বক্তারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানান। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার না করতে পারলে জেলায় নৌপথ, রেলপথ, সড়কপথে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
জানা যায়, নিহত সুমন মিয়া এবারের উপজেলা নির্বাচনে তালা প্রতীকের ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তিনি অ্যাগ্রো ফার্ম, পোলট্রি ফিড ও মাছের খামারের ব্যবসা করতেন। নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন।
নিহত সুমন মিয়ার বাবা নাসির উদ্দীন বলেন, প্রায় ১৫ বছর পর পুত্রবধূ সন্তান জন্ম দিতে চলেছে। এ নিয়ে ছেলের কত স্বপ্ন ছিলো। কিন্তু এক পলকেই সব শেষ।
তিনি আরো বলেন, সুমনের হত্যাকাণ্ডের খবর শুনে তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রসবের অপেক্ষায় থাকা সুমনের স্ত্রী লিজাকে এখনো ঘটনা জানানো হয়নি। স্বামীর হত্যাকাণ্ডের খবর জানানোর আগেই তার প্রসব করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
রায়পুরা থানার উপপরিদর্শক আব্দুল হালিম বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে আটক করা হয়েছে।






















