১১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তীব্র গরমে দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে লোডশেডিং

 

◉ ডলার সংকটে জ্বালানী আমদানিতে হিমশিম
◉ আমদানি নির্ভরতাকে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা
◉ বকেয়া দায়ে বিপাকে বিদ্যুৎ বিভাগ

➥ বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নের প্রধান বাধা সরকারের নীতি-পরিকল্পনায় বড় ধরনের বিভ্রান্তি- এম শামসুল আলম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, ক্যাব

২৫ হাজারের অধিক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্তে¦ও লোডশেডিং করতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরও বিদ্যুতের ঘাটতি নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহের আবারও রেকর্ড করেছে দেশ। কয়েকদিন যাবত মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ থাকলেও কয়েকদিন যাবত তাপপ্রবাহ তীব্র হতে শুরু করেছে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে আজ থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাজধানী ও বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। এর ওপর দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়েছে লোডশেডিং। জেলা শহরে সহনীয় হলেও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ থাকছে না ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেখা নেই বৃষ্টির। প্রখর রোদের দাপটে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। তার ওপর লোডশেডিং, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে বাড়িয়েছে বহুগুণে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা রহমত আলী সবুজ বাংলাকে বলেন, রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। এতে ঘুমের চরম ব্যাঘাত ঘটে। গতকাল রাত ১২টার পর তিনবার বিদ্যুৎ চলে যায়।
কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা মামুন হোসেন সবুজ বাংলাকে বলেন, একদিকে তীব্্র গরম অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কবল- এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
জামালপুরের সাত উপজেলাসহ কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও গাইবান্ধার চরাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক ৭ লাখ ১৫ হাজার। এসব এলাকায় ১৭০ মেগাওয়াটের বিপরীতে মিলছে ৮০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট। এভাবে সারা দেশে খবর নিয়ে একই চিত্র পাওয়া যায়।

বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্রে জানা যায়, সক্ষমতার অর্ধেকই উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে জ¦ালানি সংকট। বিডিবির বিল বকেয়া।
অর্থ সংকটে পিডিবি : বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি যত বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে তার সমস্ত বিদ্যুৎ এবং আমদানির অংশ একক ক্রেতা হিসেবে কিনে নেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। পিডিবি আবার বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে সেই বিদ্যুৎ বিক্রি করে। কিন্তু ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি), রেন্টালসহ জ্বালানির ধরন এবং কেন্দ্র ভেদে যে দামে বিদ্যুৎ কিনতে হয়, পিডিবিকে তার চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রির কারণে একটা বড় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছে পিডিবির। এই অর্থ সংকটের কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে সময়মতো বিল পরিশোধ করতে পারেনি পিডিবি। বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে পিডিবির কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে পাওনা প্রতি মাসে পাওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দেড় বছর ধরে বকেয়া পড়ে আছে।
বাংলাদেশে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপ্পা) সভাপতি ফয়সাল কে খান বলেন, বকেয়া টাকা না পেয়ে ঋণ করে তাদের চলতে হচ্ছে। অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব বলছে, গত দুই বছরে আর্থিক সংকট প্রকট হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি এবং বকেয়া পরিশোধের জন্য বিশেষ বন্ড ইস্যু করতে শুরু করেছে সরকার। এছাড়া সামনে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের দামও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি থেকে একটা সময় বের হয়ে আসতে হবে বিদ্যুৎ খাতকে।
ডলার সংকট এবং এলসি জটিলতা: বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে এখন বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানির প্রয়োজন হয়। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এই আমদানি হয়ে থাকে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পাশাপাশি এখন বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো তেল আমদানি করতে পারে। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এখন অনেক কয়লা আমদানি করতে হয়। তেল ও কয়লা এবং গ্যাস আমদানির জন্য প্রচুর ডলার খরচ হয়।

পিডিবির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৮টি। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার ৭৭৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে তেল ভিত্তিক ৪৭টি কেন্দ্রের ক্ষমতা ৫ হাজার ৩৬০ মেগাওয়াট। বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর জানাচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য তেল আমদানি করা এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে বিপিসির কাছ থেকে কিনতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ফয়সাল কে খান বলছেন আগামী তিন মাসের উৎপাদন নিশ্চিত করতে ডলারের সাপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে দরকার।

জ্বালানি এবং আমদানি নির্ভরতা: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়েক বছর আগেও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে গ্যাস নির্ভরতা পঞ্চাশ শতাংশের কম। নিজস্ব গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ এখন এলএনজি আমদানির মাধ্যমে গ্যাস সংকট মেটানোর চেষ্টা করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বাইরে এখন তেল ও কয়লার ব্যবহার বেড়েছে। এই তেল এবং কয়লার সিংহভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জ্বালানিবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নের প্রধান বাধা সরকারের নীতি-পরিকল্পনায় বড় ধরনের বিভ্রান্তি। আমদানি নির্ভর হয়ে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ছিলো বড় ভুল। এ কারণেই আর্থিক ও বিদ্যুৎ উভয়সংকটই তৈরি হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

তীব্র গরমে দুর্ভোগ বাড়াচ্ছে লোডশেডিং

আপডেট সময় : ০৭:২১:৪৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪

 

◉ ডলার সংকটে জ্বালানী আমদানিতে হিমশিম
◉ আমদানি নির্ভরতাকে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা
◉ বকেয়া দায়ে বিপাকে বিদ্যুৎ বিভাগ

➥ বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নের প্রধান বাধা সরকারের নীতি-পরিকল্পনায় বড় ধরনের বিভ্রান্তি- এম শামসুল আলম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, ক্যাব

২৫ হাজারের অধিক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা থাকা সত্তে¦ও লোডশেডিং করতে হচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগকে। শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরও বিদ্যুতের ঘাটতি নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। তীব্র তাপপ্রবাহের আবারও রেকর্ড করেছে দেশ। কয়েকদিন যাবত মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ থাকলেও কয়েকদিন যাবত তাপপ্রবাহ তীব্র হতে শুরু করেছে। এতে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তবে আজ থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রাজধানী ও বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ জনজীবন। হাঁসফাঁস করছে সাধারণ মানুষ। এর ওপর দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়েছে লোডশেডিং। জেলা শহরে সহনীয় হলেও গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ থাকছে না ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর্যন্ত। বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, চাহিদার চেয়ে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকায় পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। দেখা নেই বৃষ্টির। প্রখর রোদের দাপটে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। তার ওপর লোডশেডিং, সাধারণ মানুষের দুর্ভোগকে বাড়িয়েছে বহুগুণে।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা রহমত আলী সবুজ বাংলাকে বলেন, রাতে কয়েকবার বিদ্যুৎ যায়। এতে ঘুমের চরম ব্যাঘাত ঘটে। গতকাল রাত ১২টার পর তিনবার বিদ্যুৎ চলে যায়।
কুমিল্লা জেলার বাসিন্দা মামুন হোসেন সবুজ বাংলাকে বলেন, একদিকে তীব্্র গরম অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কবল- এ যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা।
জামালপুরের সাত উপজেলাসহ কুড়িগ্রামের রৌমারী-রাজিবপুর, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া ও গাইবান্ধার চরাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক ৭ লাখ ১৫ হাজার। এসব এলাকায় ১৭০ মেগাওয়াটের বিপরীতে মিলছে ৮০ থেকে ১০০ মেগাওয়াট। এভাবে সারা দেশে খবর নিয়ে একই চিত্র পাওয়া যায়।

বিদ্যুৎ বিভাগের সূত্রে জানা যায়, সক্ষমতার অর্ধেকই উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে রয়েছে জ¦ালানি সংকট। বিডিবির বিল বকেয়া।
অর্থ সংকটে পিডিবি : বাংলাদেশে সরকারি-বেসরকারি যত বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে তার সমস্ত বিদ্যুৎ এবং আমদানির অংশ একক ক্রেতা হিসেবে কিনে নেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। পিডিবি আবার বিতরণ কোম্পানিগুলোর কাছে সেই বিদ্যুৎ বিক্রি করে। কিন্তু ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রোডিউসার (আইপিপি), রেন্টালসহ জ্বালানির ধরন এবং কেন্দ্র ভেদে যে দামে বিদ্যুৎ কিনতে হয়, পিডিবিকে তার চেয়ে কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। বেশি দামে কিনে কম দামে বিক্রির কারণে একটা বড় অর্থ সংকট তৈরি হয়েছে পিডিবির। এই অর্থ সংকটের কারণে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে সময়মতো বিল পরিশোধ করতে পারেনি পিডিবি। বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে যে পিডিবির কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করে পাওনা প্রতি মাসে পাওয়ার কথা থাকলেও প্রায় দেড় বছর ধরে বকেয়া পড়ে আছে।
বাংলাদেশে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিপ্পা) সভাপতি ফয়সাল কে খান বলেন, বকেয়া টাকা না পেয়ে ঋণ করে তাদের চলতে হচ্ছে। অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্র মারাত্মক সংকটে পড়েছে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের হিসেব বলছে, গত দুই বছরে আর্থিক সংকট প্রকট হয়েছে। এখন বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি এবং বকেয়া পরিশোধের জন্য বিশেষ বন্ড ইস্যু করতে শুরু করেছে সরকার। এছাড়া সামনে ভর্তুকি কমাতে বিদ্যুতের দামও বাড়ানোর চিন্তাভাবনা চলছে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি থেকে একটা সময় বের হয়ে আসতে হবে বিদ্যুৎ খাতকে।
ডলার সংকট এবং এলসি জটিলতা: বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে এখন বিপুল পরিমাণ জ্বালানি আমদানির প্রয়োজন হয়। সরকারি ও বেসরকারিভাবে এই আমদানি হয়ে থাকে। সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের পাশাপাশি এখন বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো তেল আমদানি করতে পারে। এছাড়া বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য এখন অনেক কয়লা আমদানি করতে হয়। তেল ও কয়লা এবং গ্যাস আমদানির জন্য প্রচুর ডলার খরচ হয়।

পিডিবির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৮টি। যার মোট উৎপাদন ক্ষমতা ৮ হাজার ৭৭৮ মেগাওয়াট। এর মধ্যে তেল ভিত্তিক ৪৭টি কেন্দ্রের ক্ষমতা ৫ হাজার ৩৬০ মেগাওয়াট। বেসরকারি বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর জানাচ্ছে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য তেল আমদানি করা এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে বিপিসির কাছ থেকে কিনতেও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ফয়সাল কে খান বলছেন আগামী তিন মাসের উৎপাদন নিশ্চিত করতে ডলারের সাপোর্ট জরুরি ভিত্তিতে দরকার।

জ্বালানি এবং আমদানি নির্ভরতা: বাংলাদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়েক বছর আগেও গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ছিল। বর্তমানে গ্যাস নির্ভরতা পঞ্চাশ শতাংশের কম। নিজস্ব গ্যাসক্ষেত্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পর্যাপ্ত গ্যাস পাওয়া যায় না। বাংলাদেশ এখন এলএনজি আমদানির মাধ্যমে গ্যাস সংকট মেটানোর চেষ্টা করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাসের বাইরে এখন তেল ও কয়লার ব্যবহার বেড়েছে। এই তেল এবং কয়লার সিংহভাগই বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়।
ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষায় গঠিত কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও জ্বালানিবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ খাত উন্নয়নের প্রধান বাধা সরকারের নীতি-পরিকল্পনায় বড় ধরনের বিভ্রান্তি। আমদানি নির্ভর হয়ে শতভাগ বিদ্যুতায়ন ছিলো বড় ভুল। এ কারণেই আর্থিক ও বিদ্যুৎ উভয়সংকটই তৈরি হয়েছে।