◉আয় ৫ লাখ ৪৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা
◉ব্যয় ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা
◉ঘাটতি ২ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা
◉বাংলাদেশের জিডিপির নতুন রেকর্ড
◉সংকট অর্থনীতিতেও ঘাটতি বাজেট
◉সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ বাড়ছে
◉সর্বোচ্চ বরাদ্দ সেবাখাত কার্যক্রমে
◉বড় চাপে পড়বে রাজস্ব খাত
মূল্যস্ফীতি, সুদের হার, রাজস্ব আহরণে প্রবৃদ্ধিসহ নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে বাজেট প্রণয়ন করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে। দেশে অর্থনীতির কঠিন সময়ে প্রায় ৮ লাখ কোটি টাকার বাজেট সামাল দেওয়া অর্থমন্ত্রীর জন্য বড্ড চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেন, রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও চাপে পড়বে এনবিআর।
প্রস্তাবিত বাজেটে বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাকি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা আসবে ঋণ থেকে। এছাড়া বাজেটে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ধরা রাখার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছ। মোট জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এটি জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের টানা ১৬তম এবং দেশের ৫৩তম বাজেট। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন ঘটবে বাজেটে- এমন মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। এবার বাজেটের প্রতিপাদ্য নিধারণ করা হয়েছে ‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার’।
২০২৬ সালে এলডিসি-উত্তরণ, ২০৩১ সালে উচ্চ মধ্যম আয়ের মর্যাদা এবং ২০৪১ সালে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরিত হওয়ার মতো তবে বাজেট নিয়ে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা বস্তাবায়ন করা সম্ভব নয়। বিশাল ঘাটতি বাজেটে থাকছে ব্যাংক ঋণ। আর ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে মূল্যস্ফীতির চাপ আরও বাড়বে।
এদিকে বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে করছাড় সুবিধা দিতে হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আবার রাজস্ব আদায়ের বড় প্রাক্কলন বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাজেট বাস্তবায়ন কঠিন, খোদ অর্থমন্ত্রীই উল্লেখ করেছেন তার বক্তৃতায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আকারে যা ৫৫ লাখ ৯৭ হাজার ৪১৪ কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে যা ছিল ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। পরে তা কমিয়ে সাড়ে ৬ শতাংশ করা হয়। প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে মোট রাজস্ব প্রাপ্তি ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। যা চলতি বছরের চেয়ে ৮ শতাংশ বেশি। রাজস্ব আহরণে বরাবরের মতো এবারও বেশিরভাগ আয় করার দায়িত্ব থাকবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ওপর। আগামী অর্থবছরে এনবিআরকে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।

এনবিআরের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে আয়কর, মুনাফা ও মূলধনের ওপর কর থেকে আসবে এক লাখ ৭৫ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। এছাড়া, ভ্যাট থেকে এক লাখ ৮২ হাজার ৭৮৩ কোটি, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৬৪ হাজার ২৭৮ কোটি, আমদানি শুল্ক থেকে ৪৯ হাজার ৪৬৪ কোটি, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৭০ কোটি, আবগারি শুল্ক থেকে পাঁচ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা ও অন্যান্য কর থেকে আসবে এক হাজার ৯৮০ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। পাশাপাশি মাদক শুল্ক, যানবাহন শুল্ক, ভূমি রাজস্ব, স্ট্যাম্প ও সারচার্জসহ সংশ্লিষ্ট খাত থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা এবং কর ব্যাতীত প্রাপ্তি থেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরের চেয়ে যা ৫০ হাজার কোটি টাকা বেশি। নন-এনবিআর খাত থেকে রাজস্ব আসবে আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা। আর কর ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। রাজস্ব আদায়ে বিদায়ী অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যা আদায় হয়েছে, তাতে এনবিআর লক্ষ্য পূরণ থেকে অনেকটাই দূরে আছে। এর সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেটে আরও ৫০ হাজার কোটি টাকা বাড়নো হয়েছে। ফলে আগামী বাজেটের লক্ষ্য পূরণ রাজস্ব বোর্ডের জন্য অনেকটাই কঠিন হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার ধরা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। বিদায়ী অর্থবছরে যা ছিল দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে ১৮ হাজার কোটি টাকা কমিয়ে এডিপির আকার করা হয়েছে দুই লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) তুলনায় নতুন বাজেটে এডিপির আকার ২০ হাজার কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে এক লাখ ৬৫ হাজার কোটি এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে এক লাখ কোটি টাকার সংস্থান ধরা হয়েছে।
বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। যা জিডিপির ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এই বিশাল ঘাটতি পূরণে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎসের ওপর নির্ভর করতে হবে। অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে নেওয়া হবে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি। এর মধ্যে প্রধান উৎস হচ্ছে ব্যাংক খাত। এই খাত থেকে মোট এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে। আর ৯৫ হাজার ১০০ টাকা বৈদেশিক উৎস থেকে পাওয়ার আশা করছে সরকার। বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে ঘাটতি ছিল দুই লাখ ৮৩ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
নতুন বাজেটে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা, বৈদেশিক মুদ্রার হার ও রিজার্ভ স্থিতিশীল করা, আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা, রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং জ্বালানি ও সারের ভর্তুকি বকেয়া পরিশোধ করার কথা বলা হয়েছে।
অর্থমন্ত্রীর সামনে অন্যান্য চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে, বিগত তিন বছরের কৃচ্ছ্রসাধন নীতি থেকে ধীরে ধীরে বের হওয়া, সময়মতো সমাপ্তির উদ্দেশ্যে অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোয় অর্থায়নের জন্য কম-প্রয়োজনীয় প্রকল্পগুলো বাদ দেওয়া, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বিদেশি অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলো ত্বরান্বিত করা এবং কাঠামোগত সংস্কার অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশের উন্নতি ঘটানো।
এবারে বাজেটে ফের কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকছে। তবে এটি নিয়ে নানা মহলে বিতর্কের সৃষ্টিও হয়েছে। শতাংশ কর দিয়ে এই কালো টাকা সাদা করা যাবে।
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, দেশের প্রচলিত আইনে যাই থাক না কেন কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন- ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট করহারে এবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না। এর আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০ শতাংশ কর পরিশোধ সাপেক্ষে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছিল সরকার। চার বছর পর এবার আবারও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
মন্ত্রণালয় ভিত্তিক বরাদ্দ : রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ৩৩ কোটি টাকা, জাতীয় সংসদ ৩৪৭ কোটি টাকা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ১২২, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ২৪৮, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ১ হাজার ২৩০, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ৫ হাজার ৩৭৭, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ১৬৬, অর্থ বিভাগ ২ লাখ ৪৮ হাজার ২০৫, বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় ২৯০, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ৩ হাজার ২১৭, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ৩ হাজার ৪১৮, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ ২১ হাজার ৩০৮, পরিকল্পনা বিভাগ ৬ হাজার ৪৯২, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ ১৯৫, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগ ৬৬২, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৯৩২, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৭২৬, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৪২ হাজার ৩১৫, সশস্ত্রবাহিনী বিভাগ ৪৬, আইন ও বিচার বিভাগ ২ হাজার ২২, জননিরাপত্তা বিভাগ ২৬ হাজার ৮৭৭, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ ৪৫, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩৮ হাজার ৮১৯, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ৪৪ হাজার ১০৮, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ১৩ হাজার ৫৭৩, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ ৩০ হাজার ১২৫, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ২ হাজার ৮৭২, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ১২ হাজার ৮৬৯, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৫ হাজার ২২২, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ৪৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে।

অন্যদিকে, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ৯২৯, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় ১ হাজার ১০৮, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ৭৭৯, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৬০২, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ২ হাজার ২১২, স্থানীয় সরকার বিভাগ ৪৫ হাজার ২০৬, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ ১ হাজার ৩৪৬, শিল্প মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৫১০, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ১ হাজার ২১৭, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় ৫৭৪, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ১ হাজার ৮৭, কৃষি মন্ত্রণালয় ২৭ হাজার ২১৪, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৪ হাজার ২৮৮, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ২ হাজার ১৩০, ভূমি মন্ত্রণালয় ২ হাজার ৫০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ পাচ্ছে।
এ ছাড়া, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ১৯৪, খাদ্য মন্ত্রণালয় ৬ হাজার ৭৫৭, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ৩, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ৩৮ হাজার ১৪৩, রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৮ হাজার ৭২, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ১১ হাজার ২৭০, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৫ হাজার ৬৯৫, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ২ হাজার ৪২০, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয় ১ হাজার ৪০০, বিদ্যুৎ বিভাগ ২৯ হাজার ২৩০, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ৭ হাজার ৪৭৪, দুর্নীতি দমন কমিশন ১৯১, সেতু বিভাগ ৭ হাজার ৩১৮, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ ১১ হাজার ৭৮৩, সুরক্ষা সেবা বিভাগ ৪ হাজার ১৩৭ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগকে ১১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী জানান, প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স দেশের অর্থনীতিকে স্বাবলম্বী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ২০০৯-১০ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ১০.৯৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দ্বিগুণ হয়ে ২১.৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
বিদেশ ফেরত কর্মীদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের অনুকূলে সরকার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দ প্রদান করেছে বলে জানিয়েছেন মাহমুদ আলী।
দেশে নারীবান্ধব কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানান, কর্মক্ষেত্রে আহত হওয়ার ঝুঁকি থেকে সুরক্ষার জন্য নারীদের জন্য ‘এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি ইনস্যুরেন্স’ স্কিম পাইলট ভিত্তিতে চালু করা হয়েছে।
মাহমুদ আলী বলেন, শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাতে ১ হাজার ৫৫০টি কারখানার কমপ্লায়েন্স নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে বর্তমানে সংসদ সদস্যরা শুল্কমুক্ত সুবিধায় গাড়ি আমদানি করতে পারেন। বৈষম্য হ্রাসে প্রস্তাবিত বাজেটে এই সুবিধা বাতিল করে শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করা হচ্ছে।

সংসদ সদস্যদের গাড়ি আমদানিতে সব প্রকার শুল্ক কর অব্যাহতি বিদ্যমান রয়েছে। কর অব্যাহতি সুবিধা কিছুটা হ্রাস করে কেবলমাত্র আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ এবং মূসক (মূল্য সংযোজন কর) ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে অন্যান্য সব শুল্ক-করাদির অব্যাহতি সুবিধা বহাল রাখার প্রস্তাব করছি। এজন্য বিদ্যমান প্রজ্ঞাপন বাতিল করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করার সুপারিশ করছি।
বাজেটের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও যাতে মানুষের কল্যাণে একটা বাজেট দেওয়া যায়। যতদূর সম্ভব আমরা কমিয়ে দিয়েছি, কারণ বাজেটে অকারণে অর্থ বৃদ্ধি করে লাভ হবে না। সেটার প্রস্তুতিই এখন চলছে যা কিছুক্ষণ পর আপনারা দেখতে পাবেন। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদ শুরুর আগে সাবেক অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল পাঁচটি এবং আরেক সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ১০টি বাজেট উত্থাপন করেছিলেন। আবুল হাসান মাহমুদ আলী যখন বাংলাদেশের ৫৪তম বাজেট দিতে যাচ্ছেন, সময়টা তখন খুব বেশি অনুকূল নয়।
মূল্যস্ফীতি, ডলার সংকট, টাকার দরপতনসহ বেশ কিছু সমস্যায় জর্জরিত অর্থনীতিতে আইএমএফের বিভিন্ন সংস্কারমূলক পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কঠিন বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে উত্তরণের পর্ব পাড়ি দিতে চূড়ান্ত কর্মসূচি ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।





















