০৭:১০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈদ ঘিরে অস্থির মশলার বাজার

❖এলাচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০০ টাকা
❖বেড়েছে পাঁচফোড়ন, পেস্তাবাদাম, গুঁড়া হলুদ-মরিচের দাম
❖ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও এলসি খোলার জটিলতায় দাম বেড়েছে
❖দাম এতটাই বাড়তি যে, মশলা কেনা হাতের নাগালের বাইরে

►আমদানিনির্ভর পণ্যগুলোর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেÑ অমর কান্তি দাশ, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ মশলা ব্যবসায়ী সমিতি
► মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাজারে নতুন করে দাম বাড়িয়ে দেয়Ñ এশ এম নাজের হোসেন, সহ-সভাপতি, ক্যাব

দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এরইমধ্যে সারাদেশে জমে উঠেছে কোরবানির গরু-ছাগলের হাট-বাজার। তার সঙ্গে ঈদকে কেন্দ্র করে অস্থির হয়ে উঠেছে মশলার বাজার। সমানতালে কোরবানির বাজারের পাশাপাশি দিন দিন মশলার দোকানগুলোয় বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাংস রান্নার প্রধান মশলাগুলোর দামও বাড়ছে। বিক্রেতাদের দাবি ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও এলসি খোলায় জটিলতার কারণেই মশলার দাম কিছুটা বেড়ে যাবে। নতুন করে কোন মশলার দাম বাড়েনি । তবে এলাচের দাম বেড়েছে, কী কারণে বাড়ছে তার নিদির্ষ্ট কোনো কারণ তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন।

 

ক্রেতারা বলছেন, প্রতি ঈদের আগে ভৌতিকভাবে মশলার দাম চড়া থেকে আরও চড়া হচ্ছে। বাজারের সঠিক তদারকির অভাবে ব্যবসায়ীরা তাদের নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী দাম বাড়িয়ে দেয়। দাম এতোটাই বাড়তির দিকে যে, আগে থেকে মশলা কেনা হাতের নাগালের বাইরে চলে এসেছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর কাওরানবাজার ও কাপ্তানবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

 

হঠাৎ করে এই বাড়তি দামের কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মশলার দাম খুব বেশি বাড়েনি। এবার জিরা ও লবঙ্গের দাম কমেছে। এটা সত্যি যে সম্প্রতি এলাচের দাম অনেক বেড়েছে। কেজিতে ছয়শ টাকার মতো। এটা কেন এত বেড়েছে, তার ব্যাখা নেই। অপরদিক বেড়েছে পাঁচফোড়ন, পেস্তাবাদাম, গুঁড়া হলুদ-মরিচের দাম। তবে ভাল মানের অনেক মশলা আমদানি করতে হয়। তাই আমদানি নির্ভর মশলাগুলোর দাম বেড়েছে। এছাড়া যেসব মশলার দাম সামান্য বেড়েছে, তা ঈদকে কেন্দ্র করেই বেড়েছে।

 

বিভিন্ন বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে যেসব মশলা বিক্রি হচ্ছে, তার অধিকাংশই ভারত থেকে আমদানি করা। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন এলাচ, জিরাসহ অন্যসব মশলা আমদানি হচ্ছে। যেখানে আগে প্রতিদিন তিন-চার ট্রাক মশলা আমদানি হতো। এখন সেখানে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমদানি হচ্ছে তার তিনগুণ বেশি। তারা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও এলসি খোলায় জটিলতার কারণেই মশলার দাম কিছুটা বেড়ে যাবে। তবে নিয়মিত বাজার তদারকি হলে দাম খুব একটা বাড়বে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

ঈদকে সামনে রেখে মশলার দাম তেমন বাড়েনি দাবি করে কারওয়ান বাজারের মশলা বিক্রেতা মো. আলম বলেন, মশলার দামের এমন অবস্থাতেও ক্রেতাদের সন্তুষ্টি নেই। কয়েকটির বেড়েছে তবে বাকি সব মশলার দাম এখন স্বাভাবিক অবস্থাতেই আছে।

কারওয়ানবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা আফরোজা বলেন, ‘দুই একটি বাদে প্রতিটি মশলার দাম বাড়তি। আর এলাচের দামে যেন আগুন লেগেছে। এতো দাম যে ধরাই যায় না। কিন্তু মাংস রান্নাতে এলাচ না দিলে কি চলে? তাই দাম বাড়তি হলেও নিরুপায় হয়ে কিনেছি ।’

জিরা ও লবঙ্গের দাম কমেছে জানিয়ে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকটি ছাড়া প্রায় সব মশলার দাম কমবেশি বাড়তি। তবে ঈদ হিসেবে এমন বাড়তি স্বাভাবিক। এর মধ্যে এলাচের দাম একটু বেশি। গত দেড় মাসের তুলনায় কেজিতে পাঁচ-ছয়শ টাকার মতো বেড়েছে।’

কাপ্তান বাজারে মশলা কিনতে আসা মো. সায়েম বলেন, ‘ঈদে গরু কোরবানি দিব। কোরবানির কারণে স্বাভাবিকভাবে মাংস খাওয়া হবে অন্যন্যা সময়ের চেয়ে বেশি। মাংস রান্না সুস্বাদু করতে হরেক রকমের মশলার প্রয়োজন হয় প্রচুর। কিন্তু মশলার বাজারে দেখি সবকিছুরই দাম বেশি। মাংস রান্না সু-স্বাদু করতে এলাচ দিতে হয়। সেই এলাচের দাম এখন অনেক বেশি। গত ঈদুল ফিতরে যেই এলাচের কেজি ছিল ২ হাজার ৪০০ টাকা, এখন সেই এলাচ বিক্রি হচ্ছে প্রায় তিন হাজার টাকা। একই সঙ্গে বেড়েছে পাঁচফোড়নসহ গুঁড়া হলুদ-মরিচের দাম। পেস্তাবাদামের দামও বেড়েছে। তবে বেশকিছু মশলার দাম স্বাভাবিক আছে ।’

একই বাজারের মশলার পাইকারি বিক্রেতা কবির আহমদ বলেন, পাইকারি বাজারে মশলার দাম আগের মতোই আছে। দুই-একটি মশলার দাম বেড়েছে। সেগুলো আমদানি নিভর। সেই হিসেবে, খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা হচ্ছে ঈদের আগে অতিরিক্ত লাভকে কেন্দ্র করে। এই দাম আরও বাড়তেও পারে।
কাপ্তান বাজার ও কারওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ভারতীয় জিরা কেজিপ্রতি প্রায় ৬৮০ টাকা, শাহী জিরা কেজিপ্রতি এক হাজার ১০ টাকা থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা, মিষ্টি জিরা কেজিপ্রতি ২৪০ টাকা, পাঁচফোড়ন কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, রাঁধুনি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা, মেথি কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, চিনাবাদাম কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা, কাজু বাদাম কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা, পেস্তা বাদাম কেজিপ্রতি দুই হাজার ৭৫০ টাকা, ত্রিফলা কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, জয়ফল কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, তেজপাতা কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, সাদা গোলমরিচ কেজিপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, গোলমরিচ কেজিপ্রতি এক হাজার টাকা, ধনিয়া কেজিপ্রতি ২৪০ টাকা, সরিষা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কিসমিশ কেজিপ্রতি ৫২০ থেকে ৫৪০ টাকা, এলাচ কেজিপ্রতি তিন হাজার টাকা, কালো এলাচ কেজিপ্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকা, লবঙ্গ কেজিপ্রতি ১ হাজার ৪৫০ টাকা, জয়ত্রি কেজিপ্রতি দুই হাজার ৯০০ টাকা, পোস্তদানা কেজিপ্রতি এক হাজার ৮০০ টাকা, আলুবোখারা কেজিপ্রতি ৪৬০ টাকা, দারুচিনি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা, খোলা হলুদের গুঁড়া কেজিপ্রতি ৪০০ টাকা, খোলামরিচের গুঁড়া কেজিপ্রতি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ভেদে মশলার দামের ভিন্নতা রয়েছে।

হঠাৎ করে মশলার দাম বেড়েছে এর কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ মশলা ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি অমর কান্তি দাশ সবুজ বাংলাকে বলেন, বাজারে নতুন করে কোন মশলার দাম বাড়ে নাই। কিন্তু দেশের জিরা ও এলাচের বাজার ভারতের ওপর নির্ভরশীল। ভারতেই বর্তমানে এশব পণ্যের সংকট চলছে। আমদানি নির্ভর পণ্যের গুলোর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। বাজারে কোনো ধরনের মজুত ঘাটতি নেই।

কোরবানির আগে এভাবে মশলার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এশ এম নাজের হোসেন সবুজ বাংলাকে বলেন, বর্তমানে ব্যবসায়ীরা মৌসুম অনুযায়ী বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। মৌসুম অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন করে মৌসুমি ব্যবসায়ী যুক্ত হচ্ছে, তারা লাভের আশায় ব্যবসা করে, এতে করে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজারে সরকারের তদারকির অভাবের কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

ঈদ ঘিরে অস্থির মশলার বাজার

আপডেট সময় : ০৬:৫৩:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪

❖এলাচের দাম বেড়েছে কেজিতে ৬০০ টাকা
❖বেড়েছে পাঁচফোড়ন, পেস্তাবাদাম, গুঁড়া হলুদ-মরিচের দাম
❖ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও এলসি খোলার জটিলতায় দাম বেড়েছে
❖দাম এতটাই বাড়তি যে, মশলা কেনা হাতের নাগালের বাইরে

►আমদানিনির্ভর পণ্যগুলোর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেÑ অমর কান্তি দাশ, সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ মশলা ব্যবসায়ী সমিতি
► মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাজারে নতুন করে দাম বাড়িয়ে দেয়Ñ এশ এম নাজের হোসেন, সহ-সভাপতি, ক্যাব

দরজায় কড়া নাড়ছে মুসলিম সম্প্রদায়ের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। এরইমধ্যে সারাদেশে জমে উঠেছে কোরবানির গরু-ছাগলের হাট-বাজার। তার সঙ্গে ঈদকে কেন্দ্র করে অস্থির হয়ে উঠেছে মশলার বাজার। সমানতালে কোরবানির বাজারের পাশাপাশি দিন দিন মশলার দোকানগুলোয় বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাংস রান্নার প্রধান মশলাগুলোর দামও বাড়ছে। বিক্রেতাদের দাবি ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও এলসি খোলায় জটিলতার কারণেই মশলার দাম কিছুটা বেড়ে যাবে। নতুন করে কোন মশলার দাম বাড়েনি । তবে এলাচের দাম বেড়েছে, কী কারণে বাড়ছে তার নিদির্ষ্ট কোনো কারণ তাদের জানা নেই বলে জানিয়েছেন।

 

ক্রেতারা বলছেন, প্রতি ঈদের আগে ভৌতিকভাবে মশলার দাম চড়া থেকে আরও চড়া হচ্ছে। বাজারের সঠিক তদারকির অভাবে ব্যবসায়ীরা তাদের নিজেদের সুবিধা অনুযায়ী দাম বাড়িয়ে দেয়। দাম এতোটাই বাড়তির দিকে যে, আগে থেকে মশলা কেনা হাতের নাগালের বাইরে চলে এসেছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর কাওরানবাজার ও কাপ্তানবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

 

হঠাৎ করে এই বাড়তি দামের কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মশলার দাম খুব বেশি বাড়েনি। এবার জিরা ও লবঙ্গের দাম কমেছে। এটা সত্যি যে সম্প্রতি এলাচের দাম অনেক বেড়েছে। কেজিতে ছয়শ টাকার মতো। এটা কেন এত বেড়েছে, তার ব্যাখা নেই। অপরদিক বেড়েছে পাঁচফোড়ন, পেস্তাবাদাম, গুঁড়া হলুদ-মরিচের দাম। তবে ভাল মানের অনেক মশলা আমদানি করতে হয়। তাই আমদানি নির্ভর মশলাগুলোর দাম বেড়েছে। এছাড়া যেসব মশলার দাম সামান্য বেড়েছে, তা ঈদকে কেন্দ্র করেই বেড়েছে।

 

বিভিন্ন বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশের বাজারে যেসব মশলা বিক্রি হচ্ছে, তার অধিকাংশই ভারত থেকে আমদানি করা। হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন এলাচ, জিরাসহ অন্যসব মশলা আমদানি হচ্ছে। যেখানে আগে প্রতিদিন তিন-চার ট্রাক মশলা আমদানি হতো। এখন সেখানে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আমদানি হচ্ছে তার তিনগুণ বেশি। তারা বলছেন, ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া ও এলসি খোলায় জটিলতার কারণেই মশলার দাম কিছুটা বেড়ে যাবে। তবে নিয়মিত বাজার তদারকি হলে দাম খুব একটা বাড়বে না বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।

ঈদকে সামনে রেখে মশলার দাম তেমন বাড়েনি দাবি করে কারওয়ান বাজারের মশলা বিক্রেতা মো. আলম বলেন, মশলার দামের এমন অবস্থাতেও ক্রেতাদের সন্তুষ্টি নেই। কয়েকটির বেড়েছে তবে বাকি সব মশলার দাম এখন স্বাভাবিক অবস্থাতেই আছে।

কারওয়ানবাজারে বাজার করতে আসা ক্রেতা আফরোজা বলেন, ‘দুই একটি বাদে প্রতিটি মশলার দাম বাড়তি। আর এলাচের দামে যেন আগুন লেগেছে। এতো দাম যে ধরাই যায় না। কিন্তু মাংস রান্নাতে এলাচ না দিলে কি চলে? তাই দাম বাড়তি হলেও নিরুপায় হয়ে কিনেছি ।’

জিরা ও লবঙ্গের দাম কমেছে জানিয়ে কারওয়ান বাজারের বিক্রেতা নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘কয়েকটি ছাড়া প্রায় সব মশলার দাম কমবেশি বাড়তি। তবে ঈদ হিসেবে এমন বাড়তি স্বাভাবিক। এর মধ্যে এলাচের দাম একটু বেশি। গত দেড় মাসের তুলনায় কেজিতে পাঁচ-ছয়শ টাকার মতো বেড়েছে।’

কাপ্তান বাজারে মশলা কিনতে আসা মো. সায়েম বলেন, ‘ঈদে গরু কোরবানি দিব। কোরবানির কারণে স্বাভাবিকভাবে মাংস খাওয়া হবে অন্যন্যা সময়ের চেয়ে বেশি। মাংস রান্না সুস্বাদু করতে হরেক রকমের মশলার প্রয়োজন হয় প্রচুর। কিন্তু মশলার বাজারে দেখি সবকিছুরই দাম বেশি। মাংস রান্না সু-স্বাদু করতে এলাচ দিতে হয়। সেই এলাচের দাম এখন অনেক বেশি। গত ঈদুল ফিতরে যেই এলাচের কেজি ছিল ২ হাজার ৪০০ টাকা, এখন সেই এলাচ বিক্রি হচ্ছে প্রায় তিন হাজার টাকা। একই সঙ্গে বেড়েছে পাঁচফোড়নসহ গুঁড়া হলুদ-মরিচের দাম। পেস্তাবাদামের দামও বেড়েছে। তবে বেশকিছু মশলার দাম স্বাভাবিক আছে ।’

একই বাজারের মশলার পাইকারি বিক্রেতা কবির আহমদ বলেন, পাইকারি বাজারে মশলার দাম আগের মতোই আছে। দুই-একটি মশলার দাম বেড়েছে। সেগুলো আমদানি নিভর। সেই হিসেবে, খুচরা বাজারে দাম কিছুটা বেশি দেখা যাচ্ছে। এটা হচ্ছে ঈদের আগে অতিরিক্ত লাভকে কেন্দ্র করে। এই দাম আরও বাড়তেও পারে।
কাপ্তান বাজার ও কারওরান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ভারতীয় জিরা কেজিপ্রতি প্রায় ৬৮০ টাকা, শাহী জিরা কেজিপ্রতি এক হাজার ১০ টাকা থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা, মিষ্টি জিরা কেজিপ্রতি ২৪০ টাকা, পাঁচফোড়ন কেজিপ্রতি ২০০ টাকা, রাঁধুনি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা, মেথি কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, চিনাবাদাম কেজিপ্রতি ১৬০ টাকা, কাজু বাদাম কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা, পেস্তা বাদাম কেজিপ্রতি দুই হাজার ৭৫০ টাকা, ত্রিফলা কেজিপ্রতি ১৫০ টাকা, জয়ফল কেজিপ্রতি ৮০০ টাকা, তেজপাতা কেজিপ্রতি ১২০ টাকা, সাদা গোলমরিচ কেজিপ্রতি ১ হাজার ২০০ টাকা থেকে এক হাজার ৩০০ টাকা, গোলমরিচ কেজিপ্রতি এক হাজার টাকা, ধনিয়া কেজিপ্রতি ২৪০ টাকা, সরিষা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, কিসমিশ কেজিপ্রতি ৫২০ থেকে ৫৪০ টাকা, এলাচ কেজিপ্রতি তিন হাজার টাকা, কালো এলাচ কেজিপ্রতি ২ হাজার ৮০০ টাকা, লবঙ্গ কেজিপ্রতি ১ হাজার ৪৫০ টাকা, জয়ত্রি কেজিপ্রতি দুই হাজার ৯০০ টাকা, পোস্তদানা কেজিপ্রতি এক হাজার ৮০০ টাকা, আলুবোখারা কেজিপ্রতি ৪৬০ টাকা, দারুচিনি কেজিপ্রতি ৫০০ টাকা, খোলা হলুদের গুঁড়া কেজিপ্রতি ৪০০ টাকা, খোলামরিচের গুঁড়া কেজিপ্রতি ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজার ভেদে মশলার দামের ভিন্নতা রয়েছে।

হঠাৎ করে মশলার দাম বেড়েছে এর কারণ জানতে চাইলে বাংলাদেশ মশলা ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি অমর কান্তি দাশ সবুজ বাংলাকে বলেন, বাজারে নতুন করে কোন মশলার দাম বাড়ে নাই। কিন্তু দেশের জিরা ও এলাচের বাজার ভারতের ওপর নির্ভরশীল। ভারতেই বর্তমানে এশব পণ্যের সংকট চলছে। আমদানি নির্ভর পণ্যের গুলোর প্রভাব পড়ছে দেশের বাজারেও। বাজারে কোনো ধরনের মজুত ঘাটতি নেই।

কোরবানির আগে এভাবে মশলার দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এশ এম নাজের হোসেন সবুজ বাংলাকে বলেন, বর্তমানে ব্যবসায়ীরা মৌসুম অনুযায়ী বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। মৌসুম অনুযায়ী ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন করে মৌসুমি ব্যবসায়ী যুক্ত হচ্ছে, তারা লাভের আশায় ব্যবসা করে, এতে করে তারা দাম বাড়িয়ে দেয়। বাজারে সরকারের তদারকির অভাবের কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের নিজের ইচ্ছে অনুযায়ী দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।