০২:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রংপুরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতি প্রায় ১১ কোটি

কোটা সংস্কারের আন্দোলনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রংপুর। অকালেই ঝড়ে যায় কয়েকটি প্রাণ। সন্তান হারা মা-বাবা ও স্বজনদের কান্নায় ভারি হয় আকাশ বাতাস। গশু পাখিরাও কেঁদেছে নিরবে। চোখের পানিতে বুক ভাসিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সন্তান হারা পরিবারের স্বপ্ন মহুর্তে ভেঙ্গে হয়েছে খান খান। সুখের আশায় যে সন্তানকে তিলে তিলে বড় করেছেন সেই সন্তানকে হারিয়ে দুঃখের সাগরে ভাসিয়েছেন তারা। রংপুরবাসী হারিয়েছেন সন্তান আর হারিয়েছেন সম্পদ। চোখে দেখেছেন ধবংসযজ্ঞ। রংপুর মহানগরীতে নাশকতার ঘটনায় অন্তত আধাশতাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে একটি থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ডিবি অফিস, পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। রংপুর মহানগরীতে তাজহাট থানাসহ একে একে পুড়িয়ে দেয়া হয় বহু গাড়ি, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস। কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে পুঁজি করে রংপুরে নাশকতাকারীরা পরিকল্পিতভাবে তান্ডব চালায় নগরজুড়ে। তাজহাট থানাসহ পুড়িয়ে দেয়া হয় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা অফিস, পরিবার পরিকল্পনা অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি ও ডিবি অফিসসহ আধাশতাধিক ভবন ও মার্কেট। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বাইরে থেকে আসা অপরিচিত লোকজন এসে হঠাৎ আক্রমণ চালায়। তাদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। মোটরসাইকেল, রিকশা, গাড়ি ও থানা সব পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলাকারী নগরীতে নাশকতা চালায়। তারা থানা, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও ব্যাংকে ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কৌশলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা যুক্ত হয়ে এ ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালিয়েছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, সবকিছু মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১০ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা। প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টের মামলা থেকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষতির পরিমাণ পাওয়া যাবে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, নগরজুড়ে চালানো ভাংচুর ও নাশকতায় শিক্ষার্থীরা জড়িত নয়। তবে যারাই জড়িত থাকুক, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নাশকতায় একাধিক দল এবং শ্রেণি ও পেশার মানুষ জড়িত রয়েছে। এখানে রাজনৈতিক স্বার্থ যেমন রয়েছে, তেমন নিজেদের বিষয়ও আছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, যারা নৈরাজ্যের চরম অবস্থা সৃষ্টি করছে। কোনোভাবে তারা দেশপ্রেমিক নন। ছাত্ররা এমন কাজ করতে পারেন না। তারা এমনটা করেনওনি। আমরা অবশ্যই চূড়ান্তভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বলেন, নাশকতা চালাতে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে তাদের পরিচয় যাই হোক না কেন, নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

রংপুরে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ক্ষতি প্রায় ১১ কোটি

আপডেট সময় : ১০:৪৩:৪০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কারের আন্দোলনে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় রংপুর। অকালেই ঝড়ে যায় কয়েকটি প্রাণ। সন্তান হারা মা-বাবা ও স্বজনদের কান্নায় ভারি হয় আকাশ বাতাস। গশু পাখিরাও কেঁদেছে নিরবে। চোখের পানিতে বুক ভাসিয়েছেন সাধারণ মানুষ। সন্তান হারা পরিবারের স্বপ্ন মহুর্তে ভেঙ্গে হয়েছে খান খান। সুখের আশায় যে সন্তানকে তিলে তিলে বড় করেছেন সেই সন্তানকে হারিয়ে দুঃখের সাগরে ভাসিয়েছেন তারা। রংপুরবাসী হারিয়েছেন সন্তান আর হারিয়েছেন সম্পদ। চোখে দেখেছেন ধবংসযজ্ঞ। রংপুর মহানগরীতে নাশকতার ঘটনায় অন্তত আধাশতাধিক সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে একটি থানা, পুলিশ ফাঁড়ি, ডিবি অফিস, পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স। এতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা। রংপুর মহানগরীতে তাজহাট থানাসহ একে একে পুড়িয়ে দেয়া হয় বহু গাড়ি, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা অফিস। কোটা সংস্কারে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে পুঁজি করে রংপুরে নাশকতাকারীরা পরিকল্পিতভাবে তান্ডব চালায় নগরজুড়ে। তাজহাট থানাসহ পুড়িয়ে দেয়া হয় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়, মুক্তিযোদ্ধা অফিস, পরিবার পরিকল্পনা অফিস, পুলিশ ফাঁড়ি ও ডিবি অফিসসহ আধাশতাধিক ভবন ও মার্কেট। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বাইরে থেকে আসা অপরিচিত লোকজন এসে হঠাৎ আক্রমণ চালায়। তাদের মুখে কাপড় বাঁধা ছিল। মোটরসাইকেল, রিকশা, গাড়ি ও থানা সব পুড়িয়ে দেয়া হয়। হামলাকারী নগরীতে নাশকতা চালায়। তারা থানা, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, পরিবার পরিকল্পনা অফিস ও ব্যাংকে ভাংচুর চালিয়ে লুটপাট করে। পুলিশ সুত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কৌশলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরা যুক্ত হয়ে এ ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড চালিয়েছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করতে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান বলেন, সবকিছু মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১০ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা। প্রত্যেকটি ডিপার্টমেন্টের মামলা থেকে আরও সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষতির পরিমাণ পাওয়া যাবে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেন, নগরজুড়ে চালানো ভাংচুর ও নাশকতায় শিক্ষার্থীরা জড়িত নয়। তবে যারাই জড়িত থাকুক, আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, নাশকতায় একাধিক দল এবং শ্রেণি ও পেশার মানুষ জড়িত রয়েছে। এখানে রাজনৈতিক স্বার্থ যেমন রয়েছে, তেমন নিজেদের বিষয়ও আছে। রংপুর বিভাগীয় কমিশনার জাকির হোসেন বলেন, যারা নৈরাজ্যের চরম অবস্থা সৃষ্টি করছে। কোনোভাবে তারা দেশপ্রেমিক নন। ছাত্ররা এমন কাজ করতে পারেন না। তারা এমনটা করেনওনি। আমরা অবশ্যই চূড়ান্তভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেবো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী বলেন, নাশকতা চালাতে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে তাদের পরিচয় যাই হোক না কেন, নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।