শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও পর্যটক নেই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। জনশূন্য পড়ে আছে হোটেল মোটেল জোন, সমুদ্রে সুনসান নীরবতা। খালি পড়ে আছে কিটকট। ক্রেতার অভাবে বন্ধ রেখেছে ঝিনুক মার্কেটের প্রায় দোকান। দেখা যায়নি ফটোগ্রাফার, ইজিবাইক, ঘোড়া কিংবা খুচরা হকারদের। স্হানীয় দর্শনার্থীরাও নাই বললেই চলে।
কক্সবাজারে ছোট বড় প্রায় ৫ শতাধিক হোটেল, মোটেল ও গেস্ট হাউস রয়েছে। খাবার হোটেল, রেস্টুরেন্ট, কপিশপ, নামি-দামি খাবারের প্রতিষ্টান কম নেই। পর্যটকদের ঘিরে গড়ে উঠা ঝিনুক মার্কেট, বার্মিজ মার্কেট, শুঁটকি মার্কেট মিলে প্রায় ২শ কোটি টাকার ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে কর্মহীন হয়ে পড়বে পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে কারফিউ শিথিল করা হলেও আতংক বিরাজ করছে মানুষের মাঝে। নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনী, র্যাব,বিজিবি, পুলিশের টহল জোর দার রয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী বলেন, কক্সবাজার এই মুহূর্তে তেমন পর্যটক নেই। যারা কক্সবাজার ভ্রমণে এসে আটকা পড়েছিল তাদের গত ২৩ জুলাই ৭১ টি বাস যোগে সেনাবাহিনীর পাহারায় পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোন পর্যটক আসার সম্ভাবনা আপাততঃ দেখছিনা।
হোটেল মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদারের কাছে জানতে চাইলে, তিনি বলেন, এই কয়দিনে প্রায় ৫ শতাধিক হোটেল মোটেল গেস্ট হাউসে কমপক্ষে ১শ কোটি টাকার মতো ক্ষতি হয়ে গেছে। পর্যটন সেক্টরে এমন ক্ষতি আমরা সহজে পুষিয়ে উঠতে পারবো কিনা জানি না। বিগত সময়ে এমন পরিস্থিতিতে পরেনি পর্যটন সেক্টর।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, প্রতিদিন কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। এই মুহূর্তেকক্সবাজারে পর্যটক নেই। যা ছিল মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর পাহারায় ৭১টি বাসে করে ফিরে গেছে। দেশের পরিবেশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রায় হোটেল,মোটেল বন্ধ হয়ে যাবে।
বার্মিজ মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির নেতা বেলালা হোসেন বলেন, কোটা আন্দোলনকারী ছাত্রদের সাথে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির যুক্ত হয়ে জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে কঠিন লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোরর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে কারফিউ জারি, ইন্টারনেট, পরিবহন, আমদানি রপ্তানির বন্ধ থাকায় এক ধরনের অচলাবস্থায় পড়ে যায়। বিশেষ করে পর্যটন শিল্পে ক্ষতি হয়েছে বেশি। মহৎ, ক্ষুদ্র শিল্প, বাস মিনিবাস পরিবহন সহ সকল সেক্টরে আনুমানিক দুইশত কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়ে গেছে কক্সবাজারে। আশা করছি এই পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসবে।


























