১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

‘হাইব্রিড মডেলে’ চলবে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি

 

* ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীরে
* এক বা একাধিক কলেজে অনুষদভিত্তিক ক্লাস হবে
* ডিসেম্বরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজ শেষ করার চিন্তা
* আপাতত চলবে প্রশাসকের অধীন
* ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ কাঠামো প্রত্যাখ্যান তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের

এসব মডেল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত একটি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চালু হতে পারে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, ইউজিসির সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়)

ঢাকার সরকারি সাত কলেজ নিয়ে সমন্বিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে যাচ্ছে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ)। নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি চলবে ‘হাইব্রিড মডেলে’। এই মডেল অনুযায়ী ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীরে। নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সবকিছুই চলবে নতুন ও ভিন্ন মডেলে। এক বা একাধিক কলেজে হবে অনুষদভিত্তিক ক্লাস। অন্যান্য কলেজে হবে আলাদা অনুষদ। এভাবে অন্যান্য কলেজে হতে পারে অন্যান্য অনুষদভুক্ত বিষয়ের ক্লাস। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। গত রোববার সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল নিয়ে এখনও আলাপ-আলোচনা চলছে। সার্বিক রূপরেখা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজটি শেষ করার চিন্তা ইউজিসিএ এদিকে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ কাঠামো প্রত্যাখ্যান করেছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ঢাকার সাতটি কলেজ একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু অধিভুক্ত করার পর থেকে যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন দাবিতে সময়-সময় আন্দোলন করে আসছিলেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। আট বছরে ক্ষুদ্র সমস্যাগুলো পুঞ্জীভূত হয়ে বড় রূপ নেয়। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। এরপর এই সাত বড় কলেজের জন্য পৃথক একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। প্রাথমিকভাবে এ কমিটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ করার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। গত রোববারের সভায় এই সাত কলেজের জন্য ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি এবং ঢাকা ফেডারেল ইউনিভার্সিটি করার পক্ষে মত আসে। শেষ পর্যন্ত আলোচনায় ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নাম নির্ধারণ করা হয়।
জানা গেছে, সাত কলেজের কার্যক্রম চলবে নতুন ও ভিন্নধর্মী এক হাইব্রিড মডেলে। সাত কলেজের মধ্যে এখন ইডেন মহিলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ বাদে বাকিগুলোয় স্নাতক-স্নাতকোত্তরের পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকেও শিক্ষার্থী পড়ানো হয়। সাত কলেজের শিক্ষকেরা আবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। এ অবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এসব কলেজে রেখে একটি ভিন্ন রকমের মডেলে বিশ্ববিদ্যালয়টি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বর্তমানে একেকটি কলেজে অনেকগুলো বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরে পড়ানো হলেও নতুন মডেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে তা আর হবে না। কলেজগুলোতে অনুষদভিত্তিক ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কোন কলেজে কোন অনুষদভুক্ত বিষয়ের ক্লাস হবে, তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। এদিকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ও সশরীর মিলে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই মডেল অনুযায়ী ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীরে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঠিক হওয়ার পর এখন বাকি অনেকগুলো কাজের চিন্তা করছে এসংক্রান্ত কমিটি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজটি শেষ করার চিন্তা করা হচ্ছে। এখন কমিটির মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আইনের খসড়া হবে। এরপর সেটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হতে পারে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির তত্ত্বাবধানে সমন্বিত কাঠামোর অধীন সাত কলেজের কাজ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চালু হতে পারে। এ কাঠামোর প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সাত কলেজের যেকোনো একজন অধ্যক্ষ। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব দপ্তরের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। যেসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে। আর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সমন্বিত কাঠামোর মধ্যে চলবে। ইউজিসির এমন সুপারিশ বাস্তবায়ন করার জন্য গত ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনুরোধও করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, এ সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ও ইউজিসির সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, এসব মডেল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত একটি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চালু হতে পারে।
এদিকে, ঢাকার সাতটি কলেজকে একীভূত করে ‘‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’’ নামের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিতুমীর কলেজকে কাঠামোর আওতায় আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। গত রবিবার রাতে কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন “তিতুমীর ঐক্যের” পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

‘হাইব্রিড মডেলে’ চলবে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি

আপডেট সময় : ০৮:৫২:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ ২০২৫

 

* ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীরে
* এক বা একাধিক কলেজে অনুষদভিত্তিক ক্লাস হবে
* ডিসেম্বরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজ শেষ করার চিন্তা
* আপাতত চলবে প্রশাসকের অধীন
* ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ কাঠামো প্রত্যাখ্যান তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীদের

এসব মডেল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত একটি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চালু হতে পারে।
অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান, ইউজিসির সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়)

ঢাকার সরকারি সাত কলেজ নিয়ে সমন্বিত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হতে যাচ্ছে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ)। নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি চলবে ‘হাইব্রিড মডেলে’। এই মডেল অনুযায়ী ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীরে। নতুন এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সবকিছুই চলবে নতুন ও ভিন্ন মডেলে। এক বা একাধিক কলেজে হবে অনুষদভিত্তিক ক্লাস। অন্যান্য কলেজে হবে আলাদা অনুষদ। এভাবে অন্যান্য কলেজে হতে পারে অন্যান্য অনুষদভুক্ত বিষয়ের ক্লাস। এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বে একটি কমিটি কাজ করছে। গত রোববার সাত কলেজের শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল নিয়ে এখনও আলাপ-আলোচনা চলছে। সার্বিক রূপরেখা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজটি শেষ করার চিন্তা ইউজিসিএ এদিকে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ কাঠামো প্রত্যাখ্যান করেছে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ঢাকার সাতটি কলেজ একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু অধিভুক্ত করার পর থেকে যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন দাবিতে সময়-সময় আন্দোলন করে আসছিলেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। আট বছরে ক্ষুদ্র সমস্যাগুলো পুঞ্জীভূত হয়ে বড় রূপ নেয়। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। এরপর এই সাত বড় কলেজের জন্য পৃথক একটি বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। প্রাথমিকভাবে এ কমিটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’ করার বিষয়ে আলোচনা করেছিল। গত রোববারের সভায় এই সাত কলেজের জন্য ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি এবং ঢাকা ফেডারেল ইউনিভার্সিটি করার পক্ষে মত আসে। শেষ পর্যন্ত আলোচনায় ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি নাম নির্ধারণ করা হয়।
জানা গেছে, সাত কলেজের কার্যক্রম চলবে নতুন ও ভিন্নধর্মী এক হাইব্রিড মডেলে। সাত কলেজের মধ্যে এখন ইডেন মহিলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ বাদে বাকিগুলোয় স্নাতক-স্নাতকোত্তরের পাশাপাশি উচ্চমাধ্যমিকেও শিক্ষার্থী পড়ানো হয়। সাত কলেজের শিক্ষকেরা আবার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা। এ অবস্থায় উচ্চ মাধ্যমিক স্তর ও বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের এসব কলেজে রেখে একটি ভিন্ন রকমের মডেলে বিশ্ববিদ্যালয়টি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বর্তমানে একেকটি কলেজে অনেকগুলো বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তরে পড়ানো হলেও নতুন মডেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে তা আর হবে না। কলেজগুলোতে অনুষদভিত্তিক ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। কোন কলেজে কোন অনুষদভুক্ত বিষয়ের ক্লাস হবে, তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। এদিকে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ও সশরীর মিলে ক্লাস নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এই মডেল অনুযায়ী ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে আর ৬০ শতাংশ ক্লাস হবে সশরীরে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঠিক হওয়ার পর এখন বাকি অনেকগুলো কাজের চিন্তা করছে এসংক্রান্ত কমিটি। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আইন প্রণয়নের কাজটি শেষ করার চিন্তা করা হচ্ছে। এখন কমিটির মাধ্যমে আইন মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় আইনের খসড়া হবে। এরপর সেটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করা হতে পারে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত ইউজিসির তত্ত্বাবধানে সমন্বিত কাঠামোর অধীন সাত কলেজের কাজ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসকের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চালু হতে পারে। এ কাঠামোর প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সাত কলেজের যেকোনো একজন অধ্যক্ষ। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব দপ্তরের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। যেসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে। আর ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় সমন্বিত কাঠামোর মধ্যে চলবে। ইউজিসির এমন সুপারিশ বাস্তবায়ন করার জন্য গত ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনুরোধও করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে, এ সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ও ইউজিসির সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, এসব মডেল নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত একটি কলেজের অধ্যক্ষকে প্রশাসক করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা চালু হতে পারে।
এদিকে, ঢাকার সাতটি কলেজকে একীভূত করে ‘‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’’ নামের প্রশাসনিক কাঠামোর প্রস্তাবনা প্রত্যাখ্যান করেছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তিতুমীর কলেজকে কাঠামোর আওতায় আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা। গত রবিবার রাতে কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন “তিতুমীর ঐক্যের” পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।