০৭:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ম্যুরাল কাপড় দিয়ে ঢেকে স্বাধীনতা দিবস পালন করায় চলছে তীব্র প্রতিক্রিয়া

জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় লালমনিরহাটে মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চে স্থাপিত ম্যুরাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চটি লালমনিরহাট শহরের কলেজ রোডে বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, মুজিবনগর সরকার গঠন, চরমপত্র পাঠ, উদিত সূর্য, ৭১-এর গণহত্যা, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী, বিজয়ে উল্লাসে মুক্তিযোদ্ধারা, পতাকা হাতে হাতে বিজয়ে উচ্ছ্বসিত জনতা, ৭ বীরশ্রেষ্ঠ ও পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) এইচ এম রকিব হায়দার সাংবাদিকদের জানান, জুলাই আন্দোলনকারীদের আপত্তির কারণে ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

টিআইবি এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মোরশেদ আলম বলেন, ‘২৬ মার্চ সকালে আমরা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে যাই শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর জন্য। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধের পাশে স্মৃতিমঞ্চটি কাপড়ে ঢেকে রাখা ছিল। আমরা স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ না করে স্টেশন রোডে রেলওয়ে শহীদ স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেই।’ টিআইবি জানায়, ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চের ম্যুরাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে জেলা প্রশাসন। এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও একই ঘটনা ঘটায় তারা।

লালমনিরহাট জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুফী মোহাম্মদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও অবদানে আমরা এ দেশ পেয়েছি। সারা বছরই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চের ম্যুরাল উন্মুক্ত রাখা হয়। কিন্তু বিশেষ দিনে ঢেকে রাখা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সচেতন নাগরিক কমিটি লালমনিরহাট জেলা ইউনিটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল ইসলাম বীরপ্রতীক বলেন, ‘ওই ম্যুরালে বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত ধারাবাহিক ঘটনাগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে। কাপড় দিয়ে তা ঢেকে রাখার ঘটনা আমাকে খুবই ব্যথিত করেছে। এটি মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের ইতিহাস ও স্মৃতিচিহ্ন ঢেকে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অস্বীকার করা।’

জনপ্রিয় সংবাদ

মালিকানা বদলের পর ১ কোটি ১০ লাখ টাকা কী পাবেন নাঈম?

মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্মারক মঞ্চের ম্যুরাল কাপড় দিয়ে ঢেকে স্বাধীনতা দিবস পালন করায় চলছে তীব্র প্রতিক্রিয়া

আপডেট সময় : ১০:১০:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় লালমনিরহাটে মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চে স্থাপিত ম্যুরাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চটি লালমনিরহাট শহরের কলেজ রোডে বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ, মুজিবনগর সরকার গঠন, চরমপত্র পাঠ, উদিত সূর্য, ৭১-এর গণহত্যা, মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক এম এ জি ওসমানী, বিজয়ে উল্লাসে মুক্তিযোদ্ধারা, পতাকা হাতে হাতে বিজয়ে উচ্ছ্বসিত জনতা, ৭ বীরশ্রেষ্ঠ ও পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের ছবি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এখানে। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক (ডিসি) এইচ এম রকিব হায়দার সাংবাদিকদের জানান, জুলাই আন্দোলনকারীদের আপত্তির কারণে ও জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হওয়ায় ম্যুরালটি কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

টিআইবি এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মোরশেদ আলম বলেন, ‘২৬ মার্চ সকালে আমরা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে যাই শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানোর জন্য। এ সময় মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধের পাশে স্মৃতিমঞ্চটি কাপড়ে ঢেকে রাখা ছিল। আমরা স্তম্ভিত হয়ে পড়ি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ না করে স্টেশন রোডে রেলওয়ে শহীদ স্মৃতিসৌধে গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেই।’ টিআইবি জানায়, ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চের ম্যুরাল কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে জেলা প্রশাসন। এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসেও একই ঘটনা ঘটায় তারা।

লালমনিরহাট জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সুফী মোহাম্মদ বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের ত্যাগ ও অবদানে আমরা এ দেশ পেয়েছি। সারা বছরই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিমঞ্চের ম্যুরাল উন্মুক্ত রাখা হয়। কিন্তু বিশেষ দিনে ঢেকে রাখা হচ্ছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

সচেতন নাগরিক কমিটি লালমনিরহাট জেলা ইউনিটের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল ইসলাম বীরপ্রতীক বলেন, ‘ওই ম্যুরালে বায়ান্ন থেকে একাত্তর পর্যন্ত ধারাবাহিক ঘটনাগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়েছে। কাপড় দিয়ে তা ঢেকে রাখার ঘটনা আমাকে খুবই ব্যথিত করেছে। এটি মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের ইতিহাস ও স্মৃতিচিহ্ন ঢেকে দেওয়ার অর্থ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অস্বীকার করা।’