চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের দাবি দিন দিন জোরালো হচ্ছে। উত্তর চট্টগ্রামের ছয়টি উপজেলা এবং পার্বত্য দুই জেলার রোগীদের সময়মতো চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতালটি নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন বলে দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।
সম্প্রতি হাটহাজারী উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের কুমারিকুল এলাকায় দুটি মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান সাজ্জাদ নামে এক তরুণ। আহত হন আরও চারজন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন আশঙ্কাজনক। সময়মতো উন্নত চিকিৎসা না পাওয়ায় জীবনহানি ঘটে। দুর্ঘটনার পরপরই এলাকাবাসী এক কণ্ঠে হাটহাজারীতে আধুনিক মানের চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের দাবি আরো জোরালো করে তোলে।
হাটহাজারী শুধু একটি উপজেলা নয়—এটি উত্তর চট্টগ্রামের শিক্ষা, কৃষি, গবেষণা, স্বাস্থ্য ও বানিজ্যিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। এখানে রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ঐতিহ্যবাহী হাটহাজারী মাদ্রাসা, কৃষি গবেষণাগার, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, আঞ্চলিক কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, সরকারি দুগ্ধ খামার, নানা ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠান। ফলে স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রতিদিন বিভিন্ন পার্বত্য এলাকা, রাউজান, ফটিকছড়ি, রাঙ্গুনিয়া, মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড থেকেও অসংখ্য মানুষ আসেন হাটহাজারীতে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছাতে দূরত্ব ও যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় লাগে। এতে অনেক মুমূর্ষু রোগী মাঝপথেই মৃত্যুবরণ করেন। তাই হাটহাজারীতে আধুনিক ও পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল স্থাপন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
এই প্রেক্ষাপটে চায়না-বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের জন্য হাটহাজারী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ফটিকা বিল ও ১ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়াননগর মিঠাছড়া এলাকা পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। তিনি জানান, হাটহাজারীতে হাসপাতাল নির্মিত হলে পুরো অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবায় অভাবনীয় পরিবর্তন আসবে এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওপর চাপ কমবে।
হাসপাতাল নির্মাণের দাবি জানিয়ে সোমবার হাটহাজারী সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। সংগঠনের সভাপতি মো. আসলাম পারভেজ বলেন, “হাসপাতাল নির্মাণের জন্য হাটহাজারীই সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। যোগাযোগ ব্যবস্থা, খাসজমি, সামাজিক পরিবেশ—সবই রয়েছে।” সাধারণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দিন বলেন, “হাসপাতালটি হলে অন্তত ৫০ লক্ষ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, “এটি একটি যৌক্তিক দাবি। স্মারকলিপিটি দ্রুত প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে পাঠানো হবে।”
স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ।


























