এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি প্রত্যাহারের পর গতকাল সোমবার থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। টানা দুদিন কাজ বন্ধ থাকার পর আজ কাস্টমসের সেবাগ্রহীতারা পড়েছেন সার্ভার ত্রুটির বিড়ম্বনায়। সার্ভারের ধীরগতির কারণে যে পরিমাণ বিল অব এন্ট্রি এবং বিল অব এক্সপোর্ট দাখিল হওয়ার কথা ছিল, সে পরিমাণ হয়নি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, সার্ভারে কিছুটা ধীরগতি ছিল। আন্দোলনের কারণে অনেক কাজ জমে যায়। একসাথে সার্ভার সিস্টেমে চাপ পড়ার কারণে যে কাজ ৫ মিনিটে হওয়ার কথা সেটার জন্য আধা ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। ফলে শুল্কায়ন কার্যক্রমও ব্যাহত হয়েছে। তবে বিকালের দিকে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়।চট্টগ্রাম কাস্টমসের আমদানি–রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা জানান, গতকাল ছাড়াও কাস্টমসে সার্ভার সিস্টেমে প্রায় সময় ত্রুটি দেখা দেয়। এ বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে। কিন্তু স্থায়ী কোনো সমাধান মিলেনি। প্রায় সময় সার্ভার হ্যাং করে ও নেটওয়ার্ক চলে যায়। ফলে ব্যবসায়ীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য গতিশীল করার লক্ষ্যে ১৯৯৫ সালে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে অটোমেশনের যাত্রা শুরু হয়। একসময় অ্যাসাইকুডা প্লাস প্লাস ভার্সন থাকলেও গত ২০১৩ সাল থেকে কাস্টমসে অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড পদ্ধতি চালু হয়। এই পদ্ধতিতে আমদানি–রপ্তানি কার্যক্রমের প্রায় সবকিছুই অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হচ্ছে। কিন্তু মাঝে মাঝে সার্ভারের গতি কমে যাওয়া কিংবা বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে আমদানিকারকদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দেখা গেছে, যে কাজ এক মিনিটে হওয়ার কথা সেটি করতে পাঁচ মিনিট লাগছে। কাস্টমসে আমদানি–রপ্তানি মিলে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার পর্যন্ত বিল অব এন্ট্রি দাখিল হয়।চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রিগ্যান বলেন, চট্টগ্রামে সার্ভারের সমস্যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ভুগতে হচ্ছে। বিষয়টি এনবিআরকে জানানোর পরও কোনো কাজ হচ্ছে না। কিছুদিন পরপর সার্ভারের ত্রুটির কারণে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করতে বেগ পেতে হচ্ছে। আজকে সার্ভার ধীরগতির ছিল। এছাড়া মাঝে মাঝে সার্ভার হ্যাং করেছে। এতে শুল্কায়ন কাজের ওপর প্রভাব পড়ে।চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সহকারী প্রোগ্রামার মো. সোহাগ হোসেন বলেন, আজকে সিস্টেম সার্ভার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত স্লো ছিল। তবে কাজ বন্ধ হয়নি। সময়ক্ষেপণ হয়েছে। বিষয়টি এনবিআরকে অবহিত করা হয়েছে।এদিকে টানা দুদিন কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেনার জট আরো বাড়ে। গতকাল প্রচুর পরিমাণ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান বন্দরের বিভিন্ন প্রবেশ গেটে অপেক্ষমাণ থাকতে দেখা যায়। বন্দর সূত্রে জানা গেছে, যে পরিমাণ পণ্য খালাস হওয়ার কথা ছিল, সার্ভার বিভ্রাট এবং শুল্কায়ন কাজের ধীরগতির কারণে সে পরিমাণ পণ্য খালাস হয়নি।
এমআর/সবা


























