০৭:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শৈশবের ক্লাবে ফিরেই গোল এবং ইনজুরিতে মাঠ ত্যাগ মারিয়ার

কিছুদিন আগেই ক্লাব-ফুটবলে ইউরোপ-অধ্যায় চুকিয়ে ফেলেছেন আর্জেন্টাইন গ্রেট আনহেল ডি মারিয়া। এখন তিনি স্বদেশের-শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে যোগ দিয়েছেন। গতকাল রাতে এই ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করেছেন গোল করে। কিন্তু ম্যাচের শেষদিকে চোট পেয়ে মাঠও ছেড়েছেন! আর তার দলও শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ম্যাচটা ১-১ গোলে ড্র করেছে। ফলে রোজারিওতে মারিয়ার ফেরাটা পুরোপুরি সুখকর হয়নি!

১৯৮৮ সালে দি মারিয়ার জন্ম আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের সর্ববৃহৎ শহর রোজিরিওতে। ১৯৯২ সালে মাত্র ৪ বছর বয়সে তিনি রোজারিও সেন্ট্রাল একাডেমিতে যোগ দেন। ১৩ বছর ক্লাবটির বয়সভিত্তিক ও যুব দলে খেলার পর ২০০৫ সালে মূল দলে তাঁর অভিষেক হয়। ২০০৭ সাল পর্যন্ত মূল দলের হয়ে ৩৯ ম্যাচ খেলেন, ৬ গোলের পাশাপাশি ২টি অ্যাসিস্ট করেন।

ওই বছরই ইউরোপে পাড়ি জমান দি মারিয়া। নাম লেখান পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকায়। এরপর রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি, জুভেন্টাস এবং আবার বেনফিকায় খেলে কদিন আগে ফেরেন শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে।
১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলতে নামেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা আনহেল ডি মারিয়া। তিনি মাঠের নামার পর কেঁদেছেন আবেগে, মাঠ ছাড়ার সময়ও তাঁকে কাঁদতে দেখা গেছে চোট পাওয়ার কারণে।

মারিয়া এমনিতেই আবেগপ্রবল মানুষ। তাই ১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে ফেরা দি মারিয়া বরণের দিনে যে আবারও আবেগে ভেসে যাবেন, তা অনুমেয়ই ছিল।

রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে আবারও খেলতে নামার আগে তাঁকে রাজসিকভাবে বরণ করে নিয়েছেন এস্তাদিও জিহান্তে দে আরোয়িতোয় উপস্থিত ৪৬ হাজারের বেশি দর্শক।

তাঁদের ভালোবাসার সিক্ত এই আর্জেন্টাইন তারকা নিজেকে সামলাতে পারেননি। হাত নেড়ে অভিবাদনের জবাব দেওয়ার সময় তাঁর দুই চোখ বেয়ে ঝরেছে পানি।

তবে আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগের (প্রিমেরা ডিভিশন) ম্যাচটি শুরু হতেই দি মারিয়া আবার হয়ে ওঠেন সত্যিকারের পেশাদার ফুটবলার। ঘরের মাঠে সমর্থকদের ভালোবাসার প্রতিদান দেন গোল করে।

৭৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা দি মারিয়ার গোলেই এগিয়ে যায় রোজারিও সেন্ট্রাল। গোলবারের ডান পাশ দিয়ে তাঁর নিচু করে নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি প্রতিপক্ষ গোদোই ক্রুজের গোলকিপার। সেই গোলের পর দর্শকদের গগণবিদারি চিৎকার যেন সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে গেছে ভিআইপি বক্সে থাকা তাঁর পরিবারকেও।

এরপরও মারিয়ার দিনটা অম্লমধুর কেটেছে। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড় বাজেভাবে ট্যাকল করলে আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন ৩৭ বছর বয়সী উইঙ্গার। এ সময় তাঁকে আবারও কাঁদতে দেখা যায়।

মারিয়া মাঠের বাইরে যাওয়ার পর ম্যাচের মোড়ও ঘুরে যায়। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে গোদোই ক্রুজের ভিসেন্তে পোগ্গি গোল করলে রোজারিও সেন্ট্রালকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়।

অবশ্য স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হলেও গুরুতর কিছু ঘটেনি বলে ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন মারিয়া। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আর্জেন্টিনার এই বিশ্বকাপজয়ী তারকা শৈশবের ক্লাবে ফেরা নিয়ে লিখেছেন, ‘এ অবিস্মরণীয় মুহূর্তের জন্য এত বছর অপেক্ষা করেছি। এতটা ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা যে ফল (জয়) চেয়েছিলাম, তা এই ম্যাচে পাইনি। তবে এটি সবে শুরু। এখনো অনেক পথ বাকি। চলো, এগিয়ে যাই সেন্ট্রাল।’

মারিয়ার দলের পরের ম্যাচ আগামী শনিবার লানুসের বিপক্ষে।

আরকে/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

মালিকানা বদলের পর ১ কোটি ১০ লাখ টাকা কী পাবেন নাঈম?

শৈশবের ক্লাবে ফিরেই গোল এবং ইনজুরিতে মাঠ ত্যাগ মারিয়ার

আপডেট সময় : ০৬:৩৩:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

কিছুদিন আগেই ক্লাব-ফুটবলে ইউরোপ-অধ্যায় চুকিয়ে ফেলেছেন আর্জেন্টাইন গ্রেট আনহেল ডি মারিয়া। এখন তিনি স্বদেশের-শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে যোগ দিয়েছেন। গতকাল রাতে এই ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু করেছেন গোল করে। কিন্তু ম্যাচের শেষদিকে চোট পেয়ে মাঠও ছেড়েছেন! আর তার দলও শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ম্যাচটা ১-১ গোলে ড্র করেছে। ফলে রোজারিওতে মারিয়ার ফেরাটা পুরোপুরি সুখকর হয়নি!

১৯৮৮ সালে দি মারিয়ার জন্ম আর্জেন্টিনার সান্তা ফে প্রদেশের সর্ববৃহৎ শহর রোজিরিওতে। ১৯৯২ সালে মাত্র ৪ বছর বয়সে তিনি রোজারিও সেন্ট্রাল একাডেমিতে যোগ দেন। ১৩ বছর ক্লাবটির বয়সভিত্তিক ও যুব দলে খেলার পর ২০০৫ সালে মূল দলে তাঁর অভিষেক হয়। ২০০৭ সাল পর্যন্ত মূল দলের হয়ে ৩৯ ম্যাচ খেলেন, ৬ গোলের পাশাপাশি ২টি অ্যাসিস্ট করেন।

ওই বছরই ইউরোপে পাড়ি জমান দি মারিয়া। নাম লেখান পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকায়। এরপর রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, পিএসজি, জুভেন্টাস এবং আবার বেনফিকায় খেলে কদিন আগে ফেরেন শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে।
১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে খেলতে নামেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী তারকা আনহেল ডি মারিয়া। তিনি মাঠের নামার পর কেঁদেছেন আবেগে, মাঠ ছাড়ার সময়ও তাঁকে কাঁদতে দেখা গেছে চোট পাওয়ার কারণে।

মারিয়া এমনিতেই আবেগপ্রবল মানুষ। তাই ১৮ বছর পর শৈশবের ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালে ফেরা দি মারিয়া বরণের দিনে যে আবারও আবেগে ভেসে যাবেন, তা অনুমেয়ই ছিল।

রোজারিও সেন্ট্রালের হয়ে আবারও খেলতে নামার আগে তাঁকে রাজসিকভাবে বরণ করে নিয়েছেন এস্তাদিও জিহান্তে দে আরোয়িতোয় উপস্থিত ৪৬ হাজারের বেশি দর্শক।

তাঁদের ভালোবাসার সিক্ত এই আর্জেন্টাইন তারকা নিজেকে সামলাতে পারেননি। হাত নেড়ে অভিবাদনের জবাব দেওয়ার সময় তাঁর দুই চোখ বেয়ে ঝরেছে পানি।

তবে আর্জেন্টিনার শীর্ষ লিগের (প্রিমেরা ডিভিশন) ম্যাচটি শুরু হতেই দি মারিয়া আবার হয়ে ওঠেন সত্যিকারের পেশাদার ফুটবলার। ঘরের মাঠে সমর্থকদের ভালোবাসার প্রতিদান দেন গোল করে।

৭৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে করা দি মারিয়ার গোলেই এগিয়ে যায় রোজারিও সেন্ট্রাল। গোলবারের ডান পাশ দিয়ে তাঁর নিচু করে নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে পড়েও ঠেকাতে পারেননি প্রতিপক্ষ গোদোই ক্রুজের গোলকিপার। সেই গোলের পর দর্শকদের গগণবিদারি চিৎকার যেন সবকিছুর মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। উচ্ছ্বাস ছুঁয়ে গেছে ভিআইপি বক্সে থাকা তাঁর পরিবারকেও।

এরপরও মারিয়ার দিনটা অম্লমধুর কেটেছে। ম্যাচের ৮৯ মিনিটে প্রতিপক্ষের এক খেলোয়াড় বাজেভাবে ট্যাকল করলে আঘাত পেয়ে স্ট্রেচারে মাঠ ছাড়েন ৩৭ বছর বয়সী উইঙ্গার। এ সময় তাঁকে আবারও কাঁদতে দেখা যায়।

মারিয়া মাঠের বাইরে যাওয়ার পর ম্যাচের মোড়ও ঘুরে যায়। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে গোদোই ক্রুজের ভিসেন্তে পোগ্গি গোল করলে রোজারিও সেন্ট্রালকে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে মাঠ ছাড়তে হয়।

অবশ্য স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হলেও গুরুতর কিছু ঘটেনি বলে ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন মারিয়া। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আর্জেন্টিনার এই বিশ্বকাপজয়ী তারকা শৈশবের ক্লাবে ফেরা নিয়ে লিখেছেন, ‘এ অবিস্মরণীয় মুহূর্তের জন্য এত বছর অপেক্ষা করেছি। এতটা ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমরা যে ফল (জয়) চেয়েছিলাম, তা এই ম্যাচে পাইনি। তবে এটি সবে শুরু। এখনো অনেক পথ বাকি। চলো, এগিয়ে যাই সেন্ট্রাল।’

মারিয়ার দলের পরের ম্যাচ আগামী শনিবার লানুসের বিপক্ষে।

আরকে/সবা