০৫:১৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চাকরিতে প্রবেশে ৩২ বছরের বয়সসীমা কাটলো বঞ্চিতদের

সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৩২ বছরের বেশি বয়সসীমার বিধি ও প্রবিধানমালা কার্যকরের বাধা দূর করতে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের সংশোধনী আনা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এ অধ্যাদেশ জারি করেছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।

সরকারি চাকরির সব স্তরে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করে গত বছর ১৮ নভেম্বর ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪’ জারি করে সরকার।

কিন্তু ওই অধ্যাদেশ জারির ফলে সব পর্যায়ের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের বয়স ৩২ বছর করায় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, চিকিৎসক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বয়সের বিশেষ সুবিধা বাতিল হয়ে যায়। কম্পিউটার-সংশ্লিষ্ট জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রেও বয়সের বিশেষ সুবিধা পাওয়া প্রার্থীরাও বঞ্চিত হন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধি ও প্রবিধানমালায় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছরের বেশি ছিল।

বিশেষ ক্ষেত্রে এই অসুবিধা নিরসনে বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থা থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আসে।

চাকরিপ্রার্থীরাও জনপ্রশাসনে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাদেশে সংশোধন আনে সরকার।
নতুন অধ্যাদেশে ৩(ক) নামে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ‘চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ সম্পর্কিত অন্যান্য বিধানের কার্যকারিতা’ শিরোনামের এ ধারায় বলা হয়েছে-‘এই অধ্যাদেশের ধারা ৩-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যে সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহের স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা বা, ক্ষেত্রমত, প্রবিধানমালার কোনো পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ (বত্রিশ) বৎসরের অধিক নির্ধারিত রহিয়াছে, সেই সকল ক্ষেত্রে উক্তরূপ নির্ধারিত বয়সসীমা অপরিবর্তিত ও বহাল থাকিবে।’
যেসব ক্ষেত্রে ৩২ বছর বয়সসীমা কার্যকর হবে, তা ধারা-৩ এ উল্লেখ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘সরকারি অফিসের কম্পিউটার পারসোনেল নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯’-এ বয়সসীমার বিষয়ে বলা হয়েছে-পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক, উপপরিচালক, উপ-মহাব্যবস্থাপক পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৪৫ বছর। উপপরিচালক/সিস্টেম ম্যানেজার পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে বয়সসীমা ৪৫ বছর। এছাড়া মুখ্য রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট, সিনিয়র রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলীর বয়সসীমাও হবে ৪৫ বছর।

এছাড়া, সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স সিস্টেম অ্যানালিস্টের ৪০ বছর, সিনিয়র প্রোগ্রামারের ৪০ বছর, অপারেশন ম্যানেজারের বয়স ৪০ বছর, সহকারী সিস্টেম অ্যানালিস্টের বয়স ৩৫ বছর, প্রোগ্রামারের ৩৫ বছর, কম্পিউটার সুপারভাইজারের ৩৫ বছর এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলীর ৩৫ বছর নির্ধারণ করা আছে।

কিন্তু গত বছরের ১৮ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সবার বয়স ৩২ বছর করে অধ্যাদেশ জারির পর এসব ক্ষেত্রে এই সুবিধা বাতিল হয়ে যায়।

নতুন অধ্যাদেশ থেকে ‘আধা-স্বায়ত্তশাসিত’ প্রতিষ্ঠান বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ অধ্যাদেশের বিধান কার্যকর হবে না।

জনপ্রিয় সংবাদ

একনেক সভায় ৪৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকার ২২ প্রকল্প অনুমোদন

চাকরিতে প্রবেশে ৩২ বছরের বয়সসীমা কাটলো বঞ্চিতদের

আপডেট সময় : ০৪:০১:৪৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫

সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৩২ বছরের বেশি বয়সসীমার বিধি ও প্রবিধানমালা কার্যকরের বাধা দূর করতে এ সংক্রান্ত অধ্যাদেশের সংশোধনী আনা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এ অধ্যাদেশ জারি করেছেন। আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ জারি করা হয়।

সরকারি চাকরির সব স্তরে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর করে গত বছর ১৮ নভেম্বর ‘সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ অধ্যাদেশ, ২০২৪’ জারি করে সরকার।

কিন্তু ওই অধ্যাদেশ জারির ফলে সব পর্যায়ের সরকারি চাকরিতে নিয়োগের বয়স ৩২ বছর করায় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান, চিকিৎসক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বয়সের বিশেষ সুবিধা বাতিল হয়ে যায়। কম্পিউটার-সংশ্লিষ্ট জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রেও বয়সের বিশেষ সুবিধা পাওয়া প্রার্থীরাও বঞ্চিত হন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধি ও প্রবিধানমালায় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩২ বছরের বেশি ছিল।

বিশেষ ক্ষেত্রে এই অসুবিধা নিরসনে বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থা থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব আসে।

চাকরিপ্রার্থীরাও জনপ্রশাসনে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অধ্যাদেশে সংশোধন আনে সরকার।
নতুন অধ্যাদেশে ৩(ক) নামে নতুন একটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। ‘চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারণ সম্পর্কিত অন্যান্য বিধানের কার্যকারিতা’ শিরোনামের এ ধারায় বলা হয়েছে-‘এই অধ্যাদেশের ধারা ৩-এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, যে সব সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল কর্পোরেশনসহ স্বশাসিত সংস্থাসমূহের স্ব স্ব নিয়োগ বিধিমালা বা, ক্ষেত্রমত, প্রবিধানমালার কোনো পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩২ (বত্রিশ) বৎসরের অধিক নির্ধারিত রহিয়াছে, সেই সকল ক্ষেত্রে উক্তরূপ নির্ধারিত বয়সসীমা অপরিবর্তিত ও বহাল থাকিবে।’
যেসব ক্ষেত্রে ৩২ বছর বয়সসীমা কার্যকর হবে, তা ধারা-৩ এ উল্লেখ করা হয়েছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ‘সরকারি অফিসের কম্পিউটার পারসোনেল নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯’-এ বয়সসীমার বিষয়ে বলা হয়েছে-পরিচালক, মহাব্যবস্থাপক, উপপরিচালক, উপ-মহাব্যবস্থাপক পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রার্থীর সর্বোচ্চ বয়সসীমা হবে ৪৫ বছর। উপপরিচালক/সিস্টেম ম্যানেজার পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সঙ্গে বয়সসীমা ৪৫ বছর। এছাড়া মুখ্য রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী, সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট, সিনিয়র রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলীর বয়সসীমাও হবে ৪৫ বছর।

এছাড়া, সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়স সিস্টেম অ্যানালিস্টের ৪০ বছর, সিনিয়র প্রোগ্রামারের ৪০ বছর, অপারেশন ম্যানেজারের বয়স ৪০ বছর, সহকারী সিস্টেম অ্যানালিস্টের বয়স ৩৫ বছর, প্রোগ্রামারের ৩৫ বছর, কম্পিউটার সুপারভাইজারের ৩৫ বছর এবং রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলীর ৩৫ বছর নির্ধারণ করা আছে।

কিন্তু গত বছরের ১৮ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সবার বয়স ৩২ বছর করে অধ্যাদেশ জারির পর এসব ক্ষেত্রে এই সুবিধা বাতিল হয়ে যায়।

নতুন অধ্যাদেশ থেকে ‘আধা-স্বায়ত্তশাসিত’ প্রতিষ্ঠান বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের ক্ষেত্রে এ অধ্যাদেশের বিধান কার্যকর হবে না।