১১:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিশির ভেজা ঘাসে ভোরের আলো কুয়াশাচ্ছন চাঁদরে রাজশাহী

ঋতুর পালাবদলে পাল্টাচ্ছে প্রকৃতি। ষড় ঋতুর বর্ষপঞ্জিতে এখন হেমনন্তকাল। আর হেমন্তকে অপরূপ রূপের ঋতু। সকালের শিশির ভেজা ঘাস আর হালকা কুয়াশায় প্রকৃতিতে বেজে ওঠছে শীতের আগমনী বার্তা। শীতের আগমনী বার্তায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সোনারাঙা রোঁদ। পাঁচটা না বাজতেই পশ্চিমে ঢলে পড়ছে সূর্য। গোধূলী লগ্ন পেরিয়ে জলদি নেমে আসছে সন্ধ্যা। ভোরের আলো ফুটতেই স্নিগ্ধ শিশিরে ভেজা সবুজ ধানের পাতাগুলো নুয়ে পড়ছে বাতাসে।
সাতসকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে, ধীর পায়ে শীত নামছে প্রকৃতিতে। আর সোমবারের শিশির ভেজা ভোর যেনো জানান দিলো ধীর পায়ে শীত আসছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রকৃতিতে আজ ভর করেছে ঘন কুয়াশা। চারিদিকে তাই আজ সূর্যের আভা ছড়াইনি। নেমে এসেছে শীতের আমেজ।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছেন, হাড়কাঁপুনি শীত ডিসেম্বরের আগে নয়। অর্থাৎ অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ মাস এলেই নামবে হাড়কাঁপানো শীত।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই এবার শীত পড়তে শুরু করবে। রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।


চলতি সপ্তাহে রাজশাহীতে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের আবহ তৈরি হয়েছে। তবে গরম যাই যাই করলেও, শীতের প্রভাব পড়েনি। তবে বিভিন্ন
কারণে এবার হেমন্তেই কড়া নাড়ছে শীত। এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ঘরের
সিলিং ফ্যানটি। কংক্রিটের নগরে বন্দি থাকা মানুষগুলোর শরীরে শেষ রাতে
উঠেছে কাঁথা।
গ্রামের চিত্র আরও সুশোভিত। পাখিদের ডানা ঝাঁপটানো শব্দ আর কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙছে কৃষকের। আগুনে তপ্ত করা শরীর নিয়ে হালকা কুয়াশা ভেদ করে মাঠে নেমে পড়ছেন কৃষক। গাছিরা কোমরে রশি বেঁধে উঠে পড়ছেন খেজুর গাছের পরিচর্জা করতে।
অপরদিকে, বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা বলছেন রাতে কুয়াশা ও দিনের বেলায় গরমের অনূভুতিতে ফসলি জমিতে পোকার আক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। তবে কৃষি অফিস আমাদের পোকামাকড় ও বালাইনাশক স্প্রে পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, এ সময়টাতে ফসলি জমিতে পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। যে
কারণে আমরা আগে থেকেই সঠিক ওষুধ, সঠিক মাত্রা, সঠিক সময় ইত্যাদি নির্ধারণের পর সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে পরামর্শ দিয়েছি কৃষকদের। পাশাপাশি সঠিক পদ্ধতিতে বালাইনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কৃষি অফিসাররা মাঠে ঘুরে ঘুরে কার কি সমস্যা তা
দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আবহাওয়া অফিস জানায়, দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদী অববাহিকায় ভোরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা সূর্যের কিরণকাল থাকতে পারে। তবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে দু’একটি মৃদু অথবা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের
প্রভাবে উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসতে পারে শীত। শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। এছাড়া মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ
বয়ে গেলে আরও ২ ডিগ্রি কমে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলিসয়াসে নেমে আসতে পারে। একইসঙ্গে ঘন কুয়াশাও পড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া
অধিদফতর।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রহিদুল ইসলাম জানান, মৌসুমি বায়ু ধীরে ধীরে বিদায় নিতে শুরু করায় আকাশ পরিস্কার হচ্ছে। সেই সঙ্গে
উত্তরের বাতাস শুরু হওয়ায় শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। সামনের দিনগুলোতে
দিন ও রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আরও কমতে শুরু করছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

শিশির ভেজা ঘাসে ভোরের আলো কুয়াশাচ্ছন চাঁদরে রাজশাহী

আপডেট সময় : ০৩:২১:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৩

ঋতুর পালাবদলে পাল্টাচ্ছে প্রকৃতি। ষড় ঋতুর বর্ষপঞ্জিতে এখন হেমনন্তকাল। আর হেমন্তকে অপরূপ রূপের ঋতু। সকালের শিশির ভেজা ঘাস আর হালকা কুয়াশায় প্রকৃতিতে বেজে ওঠছে শীতের আগমনী বার্তা। শীতের আগমনী বার্তায় ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে ভোরের সোনারাঙা রোঁদ। পাঁচটা না বাজতেই পশ্চিমে ঢলে পড়ছে সূর্য। গোধূলী লগ্ন পেরিয়ে জলদি নেমে আসছে সন্ধ্যা। ভোরের আলো ফুটতেই স্নিগ্ধ শিশিরে ভেজা সবুজ ধানের পাতাগুলো নুয়ে পড়ছে বাতাসে।
সাতসকালে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় টের পাওয়া যাচ্ছে, ধীর পায়ে শীত নামছে প্রকৃতিতে। আর সোমবারের শিশির ভেজা ভোর যেনো জানান দিলো ধীর পায়ে শীত আসছে। ভোরের আলো ফোটার আগেই প্রকৃতিতে আজ ভর করেছে ঘন কুয়াশা। চারিদিকে তাই আজ সূর্যের আভা ছড়াইনি। নেমে এসেছে শীতের আমেজ।
আবহাওয়া অধিদফতর বলছেন, হাড়কাঁপুনি শীত ডিসেম্বরের আগে নয়। অর্থাৎ অগ্রহায়ণ পেরিয়ে পৌষ মাস এলেই নামবে হাড়কাঁপানো শীত।
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই এবার শীত পড়তে শুরু করবে। রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।


চলতি সপ্তাহে রাজশাহীতে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের আবহ তৈরি হয়েছে। তবে গরম যাই যাই করলেও, শীতের প্রভাব পড়েনি। তবে বিভিন্ন
কারণে এবার হেমন্তেই কড়া নাড়ছে শীত। এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে ঘরের
সিলিং ফ্যানটি। কংক্রিটের নগরে বন্দি থাকা মানুষগুলোর শরীরে শেষ রাতে
উঠেছে কাঁথা।
গ্রামের চিত্র আরও সুশোভিত। পাখিদের ডানা ঝাঁপটানো শব্দ আর কিচিরমিচির ডাকে ঘুম ভাঙছে কৃষকের। আগুনে তপ্ত করা শরীর নিয়ে হালকা কুয়াশা ভেদ করে মাঠে নেমে পড়ছেন কৃষক। গাছিরা কোমরে রশি বেঁধে উঠে পড়ছেন খেজুর গাছের পরিচর্জা করতে।
অপরদিকে, বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকরা বলছেন রাতে কুয়াশা ও দিনের বেলায় গরমের অনূভুতিতে ফসলি জমিতে পোকার আক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। তবে কৃষি অফিস আমাদের পোকামাকড় ও বালাইনাশক স্প্রে পরামর্শ দিয়েছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের পরিচালক মো. মোজদার হোসেন বলেন, এ সময়টাতে ফসলি জমিতে পোকামাকড়ের উপদ্রব বেড়ে যায়। যে
কারণে আমরা আগে থেকেই সঠিক ওষুধ, সঠিক মাত্রা, সঠিক সময় ইত্যাদি নির্ধারণের পর সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করে পরামর্শ দিয়েছি কৃষকদের। পাশাপাশি সঠিক পদ্ধতিতে বালাইনাশক স্প্রে করারও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কৃষি অফিসাররা মাঠে ঘুরে ঘুরে কার কি সমস্যা তা
দেখে ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
আবহাওয়া অফিস জানায়, দেশের উত্তর, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এবং নদী অববাহিকায় ভোরে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময় প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে আট ঘণ্টা সূর্যের কিরণকাল থাকতে পারে। তবে ডিসেম্বরের শেষ দিকে দু’একটি মৃদু অথবা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের
প্রভাবে উত্তরাঞ্চলে জেঁকে বসতে পারে শীত। শৈত্যপ্রবাহে তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে। এছাড়া মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ
বয়ে গেলে আরও ২ ডিগ্রি কমে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলিসয়াসে নেমে আসতে পারে। একইসঙ্গে ঘন কুয়াশাও পড়বে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া
অধিদফতর।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক রহিদুল ইসলাম জানান, মৌসুমি বায়ু ধীরে ধীরে বিদায় নিতে শুরু করায় আকাশ পরিস্কার হচ্ছে। সেই সঙ্গে
উত্তরের বাতাস শুরু হওয়ায় শুরু হয়েছে শীতের আমেজ। সামনের দিনগুলোতে
দিন ও রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে আরও কমতে শুরু করছে।