০৮:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শব্দ দূষণে দিশাহারা মানুষ

◉ ঢাকার শব্দের মানমাত্রা ১১৯ ডেসিবল
◉ স্বাভাবিক সহনীয় মানমাত্রা ৫৫ ডেসিবল
◉ মানমাত্রা অতিক্রম করে হর্ন বাজানোয় ৫ হাজার টাকার জরিমানার বিধি রয়েছে
◉শব্দদূষণ প্রতিরোধে তরুণদের সম্পৃক্ত করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

অনবরত গাড়ির হর্নের শব্দে দুবির্ষহ জনজীবন। দিশাহারা শহরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় যারা নিম্নআয়ের মানুষ তারা বেশিরভাগই মারাত্মক শব্দদূষণের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারি পর্যায়ে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই বলছেন পরিবেশবিদেরা। সাধারণ জনগণ নিজেদের উদ্যোগে সভা সমাবেশ চালু রাখলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এ অবস্থায় ধীরে ধীরে শ্রবণপ্রতিবন্ধিতার দিকে যাচ্ছে দেশের এক শ্রেণির মানুষ এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিস্ট বিশ্লেষকেরা।
বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০৫০ সালে বিশে^ প্রায় আড়াই বিলিয়ন মানুষ কানে শোনার সমস্যায় ভুগবে। ৭০০ মিলিয়ন মানুষ কানে শোনার যন্ত্রের প্রয়োজন হবে। কানে হেড ফোন লাগিয়ে বা উচ্চৈস্বরে গান শোনার কারণে প্রায় ১ বিলিয়নের বেশি তরুণের কান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে বা কানের শোনার ক্ষমতা হ্রাস পাবে। বিশ^ব্যাপী শুধু একজনের কানের চিকিৎসার জন্য বছরে কমপক্ষে ১.৪০ ইউএস ডলার খরচের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। এ খরচ প্রতি ১০ বছরে বেড়ে ১৬ ইউএস ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হবে। এ কাজে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তরুণদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।

জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) প্রকাশিত বৈশ্বিক প্রতিবেদনে ঢাকার শব্দের মানমাত্রা ১১৯ ডেসিবল পর্যন্ত উঠেছে।
কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট গ্রুপ অব বাংলাদেশ অ্যান্ড ইয়ার ফাউন্ডেশনের গবেষণা জরিপ অনুযায়ী, দেশে মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশের হিয়ারিং লস আছে। তাদের মধ্য থেকে দেশে দুই হাজার রোগীর অপারেশন করেছে ফাউন্ডেশনটি। একটি বেসিক মডেলের ক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টের গড় মূল্য দাঁড়ায় ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা। উচ্চতর মডেলের ক্ষেত্রে এর মূল্য ২০-৩০ লাখ টাকা হয়ে থাকে।
পরিস্থিতি এমন যে, সুস্থ কান অসুস্থ হলে তার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস ব্যবহার করতে খরচ পড়বে ৯-৩০ লাখ টাকা।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে বিধিমালা করা হয়েছে। এতে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬-এর বিধি ৮(১), ১৮(২) অনুযায়ী মানমাত্রা অতিক্রম করে হর্ন বাজানোর অপরাধে অনধিক ১ (এক) মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫(পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে।

শব্দদূষণ বিধিমালায় নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবল, রাতে ৪০ ডেসিবল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ডেসিবল, রাতে ৪৫ ডেসিবল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ডেসিবল রাতে ৫০ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ডেসিবল রাতে ৬০ ডেসিবল, শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ডেসিবল ও রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দের মানমাত্রা থাকার কথা বলা হয়েছে।
বিধিমালা ২ এর (ব)তে ‘হর্ন অর্থ উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী নিউম্যাট্রিক, হাইড্রোলিক বা মাল্টি টিউনড হর্ন’Ñ বোঝানো হয়েছে। ধারা (দ) তে বলা হয়েছে, ‘শব্দদূষণ অর্থ শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী এমন কোনো শব্দ সৃষ্টি বা সঞ্চালন যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বা ক্ষতির সহায়ক হইতে পারে।’
গবেষকদের মতে, ২০১৭ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৯ সালে সচিবালয় এলাকাকে হর্নমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়। এখনো সেখানে এ সংক্রান্ত সাইনবোর্ড শোভা পায় কিন্তু এটির কোনো বাস্তবভিত্তি দেখা যায়নি।

গত ৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিমানবন্দর এলাকায় ১ কিলোমিটার শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও শব্দদূষণ হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। সরকারিভাবে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে নীরব এলাকা ঘোষণা করে ১০ মিনিট শব্দহীন কর্মসূচি পালন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন নেই বলেই মনে করছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জরিপের সময় আমরা বুঝতে পেরেছি দেশে শব্দদূষণ বাড়ছে। এখনো এটা আসলে বাড়ছে।
চিকিৎসকদের মতে, শব্দদূষণের কারণে হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, বুক ধড়ফড়, মাথাব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, পেপটিক আলসার, অস্থিরতা, উৎকণ্ঠা, অমনোযোগী ভাব, ঘুমে ব্যাঘাত, শ্রবণশক্তি, স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, এমনকি মেয়েদের পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়াবহ। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতেও শব্দদূষণ বেড়েই চলেছে। যা প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত বিপর্যয় ডেকে আনছে।
মো. আলমগীর কবির বলেন, আমাদের দেশে হাইড্রোলিক হর্ন সর্ম্পূণ নিষিদ্ধ। এটা তাহলে দেশে কিভাবে আসছে? এটার আমদানি বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি যাচ্ছে, আমরা ধীরে ধীরে একটা বধির জাতিতে পরিণত হচ্ছি। এখন ছোট শিশুদের কানের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এটা সম্পূর্ণ শব্দদূষণের কারণে হচ্ছে। মানসিক সমস্যা শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থা আমাদের অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
শব্দদূষণ প্রতিরোধের সঙ্গে যুক্ত আন্দোলনকারীরা বলছেন, বিদ্যমান আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যানবাহন সংক্রান্ত শব্দ হ্রাসে সড়কের পাশে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, শব্দের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আনতে কার্যকরী উপায় বের করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা ও এর ফলাফল সেমিনার ও সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে জানানো, জনসাধারণের মাঝে শব্দদূষণের ক্ষতি, প্রতিকার এবং বিদ্যমান আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে শব্দদূষণ চিরতরে দূর করা সম্ভব।

জনপ্রিয় সংবাদ

শব্দ দূষণে দিশাহারা মানুষ

আপডেট সময় : ০৭:০০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪

◉ ঢাকার শব্দের মানমাত্রা ১১৯ ডেসিবল
◉ স্বাভাবিক সহনীয় মানমাত্রা ৫৫ ডেসিবল
◉ মানমাত্রা অতিক্রম করে হর্ন বাজানোয় ৫ হাজার টাকার জরিমানার বিধি রয়েছে
◉শব্দদূষণ প্রতিরোধে তরুণদের সম্পৃক্ত করা হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা

অনবরত গাড়ির হর্নের শব্দে দুবির্ষহ জনজীবন। দিশাহারা শহরাঞ্চলের মানুষ। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় যারা নিম্নআয়ের মানুষ তারা বেশিরভাগই মারাত্মক শব্দদূষণের শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারি পর্যায়ে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই বলছেন পরিবেশবিদেরা। সাধারণ জনগণ নিজেদের উদ্যোগে সভা সমাবেশ চালু রাখলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এ অবস্থায় ধীরে ধীরে শ্রবণপ্রতিবন্ধিতার দিকে যাচ্ছে দেশের এক শ্রেণির মানুষ এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিস্ট বিশ্লেষকেরা।
বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০৫০ সালে বিশে^ প্রায় আড়াই বিলিয়ন মানুষ কানে শোনার সমস্যায় ভুগবে। ৭০০ মিলিয়ন মানুষ কানে শোনার যন্ত্রের প্রয়োজন হবে। কানে হেড ফোন লাগিয়ে বা উচ্চৈস্বরে গান শোনার কারণে প্রায় ১ বিলিয়নের বেশি তরুণের কান পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে বা কানের শোনার ক্ষমতা হ্রাস পাবে। বিশ^ব্যাপী শুধু একজনের কানের চিকিৎসার জন্য বছরে কমপক্ষে ১.৪০ ইউএস ডলার খরচের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। এ খরচ প্রতি ১০ বছরে বেড়ে ১৬ ইউএস ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থীদের যুক্ত করা হবে। এ কাজে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার তরুণদের সহযোগিতা নেওয়া হবে।

জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি (ইউএনইপি) প্রকাশিত বৈশ্বিক প্রতিবেদনে ঢাকার শব্দের মানমাত্রা ১১৯ ডেসিবল পর্যন্ত উঠেছে।
কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট গ্রুপ অব বাংলাদেশ অ্যান্ড ইয়ার ফাউন্ডেশনের গবেষণা জরিপ অনুযায়ী, দেশে মোট জনসংখ্যার ৮ শতাংশের হিয়ারিং লস আছে। তাদের মধ্য থেকে দেশে দুই হাজার রোগীর অপারেশন করেছে ফাউন্ডেশনটি। একটি বেসিক মডেলের ক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্টের গড় মূল্য দাঁড়ায় ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা। উচ্চতর মডেলের ক্ষেত্রে এর মূল্য ২০-৩০ লাখ টাকা হয়ে থাকে।
পরিস্থিতি এমন যে, সুস্থ কান অসুস্থ হলে তার জন্য প্রয়োজনীয় ডিভাইস ব্যবহার করতে খরচ পড়বে ৯-৩০ লাখ টাকা।
শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ২০০৬ সালে বিধিমালা করা হয়েছে। এতে শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬-এর বিধি ৮(১), ১৮(২) অনুযায়ী মানমাত্রা অতিক্রম করে হর্ন বাজানোর অপরাধে অনধিক ১ (এক) মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫(পাঁচ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার কথা বলা হয়েছে।

শব্দদূষণ বিধিমালায় নীরব এলাকায় দিনে ৫০ ডেসিবল, রাতে ৪০ ডেসিবল, আবাসিক এলাকায় দিনে ৫৫ ডেসিবল, রাতে ৪৫ ডেসিবল, মিশ্র এলাকায় দিনে ৬০ ডেসিবল রাতে ৫০ ডেসিবল, বাণিজ্যিক এলাকায় দিনে ৭০ ডেসিবল রাতে ৬০ ডেসিবল, শিল্প এলাকায় দিনে ৭৫ ডেসিবল ও রাতে ৭০ ডেসিবল শব্দের মানমাত্রা থাকার কথা বলা হয়েছে।
বিধিমালা ২ এর (ব)তে ‘হর্ন অর্থ উচ্চ শব্দ সৃষ্টিকারী নিউম্যাট্রিক, হাইড্রোলিক বা মাল্টি টিউনড হর্ন’Ñ বোঝানো হয়েছে। ধারা (দ) তে বলা হয়েছে, ‘শব্দদূষণ অর্থ শব্দের মানমাত্রা অতিক্রমকারী এমন কোনো শব্দ সৃষ্টি বা সঞ্চালন যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর বা ক্ষতির সহায়ক হইতে পারে।’
গবেষকদের মতে, ২০১৭ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে গাড়িতে হাইড্রোলিক হর্ন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০১৯ সালে সচিবালয় এলাকাকে হর্নমুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়। এখনো সেখানে এ সংক্রান্ত সাইনবোর্ড শোভা পায় কিন্তু এটির কোনো বাস্তবভিত্তি দেখা যায়নি।

গত ৭ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করার পর বিমানবন্দর এলাকায় ১ কিলোমিটার শব্দদূষণমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও শব্দদূষণ হচ্ছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন। সরকারিভাবে প্রত্যেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে নীরব এলাকা ঘোষণা করে ১০ মিনিট শব্দহীন কর্মসূচি পালন করা হয়। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন নেই বলেই মনে করছেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবির।
পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের জরিপের সময় আমরা বুঝতে পেরেছি দেশে শব্দদূষণ বাড়ছে। এখনো এটা আসলে বাড়ছে।
চিকিৎসকদের মতে, শব্দদূষণের কারণে হৃদরোগ, উচ্চরক্তচাপ, বুক ধড়ফড়, মাথাব্যথা, খিটখিটে মেজাজ, পেপটিক আলসার, অস্থিরতা, উৎকণ্ঠা, অমনোযোগী ভাব, ঘুমে ব্যাঘাত, শ্রবণশক্তি, স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়া, এমনকি মেয়েদের পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতি অনেক বেশি ভয়াবহ। শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাসপাতালসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতেও শব্দদূষণ বেড়েই চলেছে। যা প্রত্যেকের জন্য অত্যন্ত বিপর্যয় ডেকে আনছে।
মো. আলমগীর কবির বলেন, আমাদের দেশে হাইড্রোলিক হর্ন সর্ম্পূণ নিষিদ্ধ। এটা তাহলে দেশে কিভাবে আসছে? এটার আমদানি বন্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, এমন পরিস্থিতি যাচ্ছে, আমরা ধীরে ধীরে একটা বধির জাতিতে পরিণত হচ্ছি। এখন ছোট শিশুদের কানের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এটা সম্পূর্ণ শব্দদূষণের কারণে হচ্ছে। মানসিক সমস্যা শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরও দেখা যাচ্ছে। এই অবস্থা আমাদের অবশ্যই পরিবর্তন করতে হবে।
শব্দদূষণ প্রতিরোধের সঙ্গে যুক্ত আন্দোলনকারীরা বলছেন, বিদ্যমান আইন প্রয়োগের পাশাপাশি যানবাহন সংক্রান্ত শব্দ হ্রাসে সড়কের পাশে গাছ লাগিয়ে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, শব্দের মাত্রা সহনীয় পর্যায়ে আনতে কার্যকরী উপায় বের করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা ও এর ফলাফল সেমিনার ও সম্মেলনের মাধ্যমে জনগণকে জানানো, জনসাধারণের মাঝে শব্দদূষণের ক্ষতি, প্রতিকার এবং বিদ্যমান আইন সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দেশ থেকে শব্দদূষণ চিরতরে দূর করা সম্ভব।