১১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করতে এনসিপির সমাবেশে হামলা: বিএনপি

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎকরার জন্য ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলটির ভাষ্য, এ ঘটনার ফলে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে হয়। যা এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবার নীল নকশা বলে মনে করা হয়।

বুধবার রাতে গুলশান চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয় বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

বৈঠকে ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সভায় আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় ৪ জন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া এ প্রসঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয়। বৈঠক আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সর্তকতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে।

বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সভাকে বিস্তারিত অবহিত করেন। সিদ্ধান্ত হয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।

বিএনপি জানায়, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করবার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। মবক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রুত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া বিএনপি জানায়, সম্প্রতি সংগঠিত মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত, অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে।

বৈঠকে বলা হয়, এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিবেশকেই বিনষ্ট করবে না গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে।

বৈঠক আশা করে সকল রাজনৈতিক দল পারস্পরিক মর্যাদা ও সৌহার্দ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এই ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে। সেই সঙ্গে মিটফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায় এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

স্মৃতিসৌধে তারেক রহমান

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎ করতে এনসিপির সমাবেশে হামলা: বিএনপি

আপডেট সময় : ০৭:৩৮:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে নস্যাৎকরার জন্য ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনকারী জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সমাবেশে আক্রমণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলটির ভাষ্য, এ ঘটনার ফলে সরকারকে ১৪৪ ধারা ও কারফিউ জারি করতে হয়। যা এই মুহূর্তে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবার নীল নকশা বলে মনে করা হয়।

বুধবার রাতে গুলশান চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব আলোচনা হয় বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানানো হয়।

বৈঠকে ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির সভায় আওয়ামী লীগের দুর্বৃত্ত ও সমর্থকদের হামলায় ৪ জন নিহত হওয়ায় গভীর নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া এ প্রসঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করা হয়। বৈঠক আশা করে রাজনৈতিক দলগুলো অত্যন্ত সর্তকতার সঙ্গে তাদের কর্মসূচি নির্ধারণ করবে, অন্যথায় গণতন্ত্র বিরোধী শক্তিকে সুযোগ করে দেওয়া হবে।

বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সভাকে বিস্তারিত অবহিত করেন। সিদ্ধান্ত হয়, বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় এ বিষয়ে পুনরায় আলোচনা হবে।

বিএনপি জানায়, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে বিঘ্নিত করার জন্য এবং আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিশ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ব্যাহত করবার জন্য একটি মহল পরিকল্পিতভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাচ্ছে। মবক্রেসি, হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো অযোগ্যতা এবং নির্লিপ্ততা পরিস্থিতিকে আরও অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

বৈঠকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য অতিদ্রুত সকল প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়।

এছাড়া বিএনপি জানায়, সম্প্রতি সংগঠিত মিটফোর্ডের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে বিএনপিকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে জড়িয়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দলের শিষ্টাচার বিবর্জিত বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে স্তম্ভিত করেছে। বিশেষ করে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের জনপ্রিয় নেতা তারেক রহমান সম্পর্কে রাজনৈতিক শিষ্টাচার বিবর্জিত, অশ্লীল বক্তব্য ও স্লোগান গোটা জাতিকে বিক্ষুব্ধ করেছে।

বৈঠকে বলা হয়, এই ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র রাজনৈতিক পরিবেশকেই বিনষ্ট করবে না গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে।

বৈঠক আশা করে সকল রাজনৈতিক দল পারস্পরিক মর্যাদা ও সৌহার্দ্যের বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে এই ধরনের অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকবে। সেই সঙ্গে মিটফোর্ডসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানায় এবং অবিলম্বে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এমআর/সবা