খাগড়াছড়ির ভাইবোনছড়ায় ১৪ বছরের এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে এবং ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ও শাস্তির দাবিতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় লাঠি ও ঝাড়ু মিছিল করেছে হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘ, দীঘিনালা উপজেলা শাখা।
রবিবার দুপুরে দীঘিনালা কলেজ সংলগ্ন রাস্তার মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে বাবুছড়া নোয়াপাড়া চৌমুহনী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী ও নারী অংশগ্রহণ করেন। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা “আমার বোন ধর্ষণ কেন? প্রশাসনের জবাব চাই”সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের দীঘিনালা উপজেলা সভাপতি মিতালী চাকমা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দীঘিনালা উপজেলা সহসভাপতি মিনু চাকমা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন দীঘিনালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা, বাবুছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য প্রতিভা চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের দীঘিনালা উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মেনাকী চাকমা।
চেয়ারম্যান চন্দ্র রঞ্জন চাকমা বলেন, “পাহাড়ের মা-বোনেরা কোথাও নিরাপদ নয়। প্রতিদিন জুম্ম নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। পরিবারগুলো সবসময় আতঙ্কে থাকে।” তিনি ধর্ষণে জড়িতদের দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান এবং পাহাড়িদের ওপর নিপীড়ন বন্ধ করে ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
ইউপি সদস্য প্রতিভা চাকমা বলেন, “নারী ছাড়া পুরুষের এবং পুরুষ ছাড়া নারীর উন্নয়ন সম্ভব নয়। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামে বারবার পাহাড়ি নারীরা ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। দোষীরা শাস্তি না পাওয়ায় এই ঘটনা পুনরায় ঘটছে।” তিনি ভাইবোনছড়ায় ধর্ষকদের দ্রুত বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের নেত্রী মেনাকী চাকমা বলেন, “ভাইবোনছড়ায় ছয়জন সেটলার বাঙালি এক ত্রিপুরা স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে, কিন্তু এখনও সবাইকে গ্রেফতার করা হয়নি। কল্পনা চাকমা অপহরণসহ যত পাহাড়ি নারী নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তার কোনোটিরই বিচার হয়নি।” তিনি রাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করে বলেন, পাহাড়িদের বাঙালি বানাতে নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে।
সভাপতির বক্তব্যে মিতালী চাকমা বলেন, “ধর্ষকদের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও বাকি ২ জন এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। বিচারহীনতার কারণে বারবার একই ঘটনা ঘটছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দ্রুত বিচার ও শাস্তি কার্যকর না হলে পাহাড়ি নারীদের জীবন নিরাপদ থাকবে না।”
বক্তারা অবিলম্বে সকল ধর্ষককে গ্রেফতার করে দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান এবং পার্বত্য অঞ্চলে নারী নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান।
এমআর/সবা


























